জমিয়াতে হিযবুল্লাহর নায়েবে আমিরের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ
দখিনের সময়
প্রকাশিত এপ্রিল ৬, ২০২৫, ১৮:১৭ অপরাহ্ণ
সংবাদটি শেয়ার করুন...
স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল:
বাংলাদেশ জমিয়াতে হিযবুল্লাহর নায়েবে আমির মাওলানা মির্জা নূরুর রহমান বেগ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আমেরিকা প্রবাসী চাচার ৬০ শতক জমি জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার নামে জমিটি জবরদখল করা হয়েছে, যেখানে মসজিদ ও মাদ্রাসা কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠিত হলেও প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের স্বজন ও নিযুক্তদের সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন জমির মালিক আমেরিকা প্রবাসী মির্জা আবু জাফর বেগের ভাইয়ের ছেলে মির্জা আসাদুজ্জামান বেগ। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বরিশাল শহরের রূপাতলীতে ক্রয়কৃত ৪৫ শতক জমিতে একটি ইসলামিক প্রতিষ্ঠান গড়ার সিদ্ধান্ত নেন মির্জা আবু জাফর বেগ। ইসলাম প্রচারে অবদান রাখা চাচাতো ভাই মির্জা এনায়েতুর রহমান বেগের নামে প্রতিষ্ঠিত হয় মাদ্রাসা ও মসজিদ কমপ্লেক্স। পরবর্তীতে আরও ১৫ শতক জমি মির্জা আবু জাফর বেগের অর্থায়নে ক্রয় করা হলেও জমি দলিল করা হয় প্রতিষ্ঠানের নামে, তার ব্যক্তিগত নামে নয়।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, আমেরিকা থেকে পাঠানো বিপুল পরিমাণ অর্থ সহায়তা সত্ত্বেও মাওলানা নূরুর রহমান বেগ ও তার ভাইয়েরা মসজিদ-মাদ্রাসার নামে অর্থ সংগ্রহ করে তা আত্মসাৎ করছেন। অভিযোগকারী মির্জা আসাদুজ্জামান বলেন, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২২ সদস্যের একটি পরিচালনা কমিটি গঠন করে তাকে সভাপতি করা হলেও দায়িত্ব নিতে গেলে বাধা দেওয়া হয় এবং সন্ত্রাসীদের সহায়তায় কমপ্লেক্স থেকে তাদের বের করে দেওয়া হয়। হামলায় ৭৫ বছর বয়সী মির্জা রেজাউল করিম বেগ আহত হয়ে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।
কমিটির সদস্য সৈয়দ রিয়াজুল করিম অভিযোগ করেন, জুমার নামাজ আদায় করতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয় ও মসজিদ থেকে বের করে দেওয়া হয়। ভুক্তভোগীদের দাবি, মাওলানা মির্জা নূরুর রহমান বেগ ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় দীর্ঘদিন কমপ্লেক্সটি দখলে রেখেছেন, যদিও মাদ্রাসাটির কোনো সরকারি অনুমোদন নেই।
অভিযোগ অস্বীকার করে মাওলানা মির্জা নূরুর রহমান বেগ বলেন, তার চাচা মির্জা আবু জাফর বেগের জমিতে তার অনুমতিতেই ২০০২ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। পারিবারিক সম্পর্ক বরাবরই চমৎকার ছিল, তবে সাম্প্রতিক সময়ে তাকে না জানিয়ে কমিটি গঠনের কারণে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, চাচা দেশে ফিরে এলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব হবে।
বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। এটি চাচা-ভাতিজার পারিবারিক বিরোধ এবং শুক্রবার বসে সমাধানের কথা ছিল। পরবর্তী কোনো অগ্রগতি তারা আমাদের জানায়নি।