স্ট্রোক মূলত মানুষের মস্তিষ্কে আঘাত হানে। ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, মস্তিষ্কের কোনও অংশে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে মস্তিষ্কের কোষগুলো মরে গেলে স্ট্রোক হয়। এই স্ট্রোক বিশেষত হেমোরেজিক স্ট্রোক, হঠাৎ মৃত্যুর আরেকটি প্রধান কারণ।
সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য শরীরের প্রতিটি কোষে রক্ত সঞ্চালন প্রয়োজন। কারণ এই রক্তের মাধ্যমেই শরীরের কোষে কোষে অক্সিজেন পৌঁছায়। কোনও কারণে মস্তিষ্কের কোষে যদি রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়, রক্তনালী বন্ধ হয়ে যায় বা ছিঁড়ে যায় তখনই স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়। দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা না গেলে রোগীর পঙ্গুত্বের পাশাপাশি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
স্ট্রোকের লক্ষণ একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম হয়। অনেকে স্ট্রোক হওয়ার কিছুক্ষণ পর স্বাভাবিক হয়ে যান। এ কারণে আর চিকিৎসকের কাছে যেতে চান না। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, কারও মধ্যে স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দেয়ার সাথে সাথে বিন্দুমাত্র সময়ক্ষেপণ না করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
স্ট্রোকের লক্ষণগুলোর মাঝে উল্লেখযোগ্য হলো– আচমকা শরীরের কোনও একটা দিক অবশ হয়ে যাওয়া, চোখে ঝাপসা/ অন্ধকার দেখা, কথা বলতে অসুবিধা হওয়া বা কথা জড়িয়ে যাওয়া, হঠাৎ কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বাজ পড়ার মতো তীব্র মাথাব্যথা, জিহ্বা অসাড় হয়ে মুখ বেঁকে যাওয়া, শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যাওয়া/জ্ঞান হারানো, বমি বমি ভাব, বমি, খিঁচুনি, ইত্যাদি। এ ধরণের লক্ষণ দেখা দিলে রোগীকে বিছানায় বা মেঝেতে কাত করে শুইয়ে দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ডাকতে হবে, দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বব্যাপী যত অসংক্রামক ব্যাধি আছে, সেগুলোর মধ্যে মৃত্যুর দিক থেকে হৃদরোগের পরেই স্ট্রোকের অবস্থান। উন্নত বিশ্বের তুলনায় নিম্ন আয়ের দেশে স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি বলে মত সংস্থাটির।