ইউনিয়নে কৃষক দলের কমিটিতে আ’লীগ নেতা, প্রতিবাদে ঝাড়ু মিছিল
দখিনের সময়
প্রকাশিত এপ্রিল ৬, ২০২৫, ১৮:৫০ অপরাহ্ণ
সংবাদটি শেয়ার করুন...
দক্ষিণের সময় ডেস্ক:
বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কৃষক দলের কমিটিগুলোতে ঠাঁই পেয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও কর্মীরা। টাকার বিনিময়ে পদ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এদিকে কমিটি বাতিলের দাবিতে ঝাড়ু মিছিল হয়েছে। ইউনিয়ন কৃষক দলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে বহিষ্কার ও তাদের গঠিত সকল ওয়ার্ড কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছে স্থানীয় বিএনপি, কৃষক দলের নেতা ও কর্মীরা। ২৮ মার্চ শুক্রবার বিকেল তিনটায় চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মুকুন্দপট্টি বাজারে ঝাড়ু মিছিল করেছেন পদ বঞ্চিত নেতা-কর্মীরা।
ঝাড়ু মিছিলের নেতৃত্ব দেন কৃষক দলের পদ বঞ্চিত নেতা মোঃ শুক্কুর বেপারী, রফিক খান, মন্টু হাওলাদার, শিউলি আক্তার, লিজা বেগম মঞ্জু। এছাড়া কৃষক দলের নেতাকর্মীরা এই ঝাড়ু মিছিলে অংশ নেন। তারা জানান, চরবাড়িয়া ইউনিয়ন কৃষক দলের আহ্বায়ক মোঃ সাজেদুল ইসলাম সুমন ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনির হোসেন টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী দোসরদের দিয়ে পকেট কমিটি বানিয়েছেন। আমরা এই অবৈধ কমিটি মানি না। নেতাকর্মীরা আরও বলেন, আগামী ১০ দিনের মধ্যে পকেট কমিটি ভেঙে দেওয়া না হলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। তাদের দাবি, যারা কৃষক দলে দুর্দিনে ছিল তাদেরকে দিয়েই কমিটি গঠন করা হোক। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হোসেন খান ও সদস্য সচিব মোঃ আবুল কালাম শাহিন-এর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বিক্ষুব্ধরা। কমিটির বিষয়ে ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আব্দুর রশিদ হাওলাদার বলেন, ২ নম্বর ওয়ার্ডে যে কৃষক দলের কমিটি হয়েছে তা আমরা জানি না। আমাদের না জানিয়ে ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যে কমিটি দিয়েছেন তা আমাদের আদৌ জানা নেই। তারা আওয়ামী লীগের দোসরদের দিয়েই পকেট কমিটি দিয়েছেন। তারা ৫ তারিখের পরে বিএনপিতে এসেছে, আগে ছিল আওয়ামী লীগে—এটা সত্য। ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি বলেন, এসব পকেট কমিটি ভেঙে দিয়ে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হোক।
এদিকে চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল ইসলাম ওরফে ইটালী শহিদের বাড়ির কেয়ারটেকারকে কৃষক দলের কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতি করায় ওয়ার্ড জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এক নম্বর ওয়ার্ড কমিটিতে জায়গা পেয়েছে আওয়ামী দালাল ও আওয়ামী নেতা ও কর্মীরা। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কৃষক দলের বিতর্কিত কমিটি দেওয়ার কারণে তোপের মুখে ইউনিয়ন কৃষক দলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব।
ফেসবুক পোস্ট
ফেসবুক পোস্টে ১ নম্বর ওয়ার্ডের কমিটি নিয়ে গিয়াস নামের একজন লিখেছেন, ‘৫ই আগস্টের আগে করছিল দালালি, তার পরে কিছু নেতার লাভের জন্য বিএনপিতে জায়গা পেয়ে হয়ে গেল আওয়ামী লীগ নেতার পরিত্যক্ত বাড়ির কেয়ারটেকার। এই ধরনের লোকের সাথে বিএনপির কোনো লোক সম্পর্ক রাখলে তাদের কোনো কমিটিতে রাখা উচিত না। এই পোস্টটি আমি আগেই করতাম, কিন্তু নেতাদের সম্মানের জন্য পোস্টটি করিনি। আজকে পোস্ট করতে বাধ্য হলাম। নেতারা টাকা খেয়ে কমিটি দিবে— টাকা যদি নাই খেয়ে থাকে তবে কী করে এই কৃষক দলের লোক আওয়ামী লীগের বাড়ির ফলন ফলায়? তোমরা জেনেও কেন তাকে কমিটিতে জায়গা দিলে?’
পোস্টের কমেন্টে সাইফুল নামে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘ভাই, আমাদের এলাকাতেও একই অবস্থা, তবে কলম কাটা আওয়ামী লীগের যেমন বিএনপিতে আগমন কোনোদিনই মেনে নেবে না বিএনপির ছেলেপেলে।’ এছাড়া এম ডি মিলন নামের একজন মন্তব্য করেছেন, ‘আর চারজন দালালের ভিতরে দুইজন বাটনার, আর একজন হলো উলাল বাটনার, আর একজন হলো আমিরগঞ্জ বাটনার। ২০১৮ সালে নির্বাচনে ইতালির শহিদের সাথে আমাদের মারামারি হয়, তখন ওই দালালেরা শহিদের হয়ে দালালি করে।’
এভাবে অসংখ্য লোকজন মন্তব্য করেছেন, কমিটি দেওয়া হয়েছে টাকার বিনিময়ে। টাকা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা ও কর্মীদের ঠাঁই দেওয়া হয়েছে কৃষক দলের কমিটিতে।