• ৬ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৩শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মায়ের কাছে যেতে চেয়েছিলেন শেখ রাসেল, কিন্তু জীবন কেড়ে নিলো ঘাতকের বুলেট

দখিনের সময়
প্রকাশিত আগস্ট ১৩, ২০২০, ০৮:২৬ পূর্বাহ্ণ
মায়ের কাছে যেতে চেয়েছিলেন শেখ রাসেল, কিন্তু জীবন কেড়ে নিলো ঘাতকের বুলেট
সংবাদটি শেয়ার করুন...
স্টাফ রিপোর্টার ॥
দরদী পিতার নিথর লাশ সিড়িতে, স্নেহময়ী মা অন্যদের সঙ্গে গুলীবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। অথবা ততক্ষণে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেছেন। এদিকে ৮ বছরের শিশু রাসেল মায়ের কাছে যাবার জন্য কাঁদছিলেন।
শেখ রাসেল কাঁদতে কাঁদতে বারবার অনুরোধ করছিলেন, তাঁকে মায়ের কাছে নিয়ে যাবার জন্য। তখন তো ঘাতক চেনার বয়স হয়নি তাঁর! এ সময় ঘাতক মেজর পাশা শিশু রাসেলকে তার নৃশংস চেহারা দেখালো। তার নির্দেশে শেখ রাসেলকে হত্যা করে ঘাতক দলের এক হাবিলদার। ঘাতকরা শিশু রাসেলকেও বর্বর রূপ দেখাতেও পিছ পা হয়নি। একটু কাঁপেনি ঘাতকদের নিষ্ঠুর হাত। গুলিতে ঝাঝড়া হয়ে যায় শিশু রাসেলের দেহ। লুটিয়ে পড়লো ৩২ নম্বরের বাড়ির মেঝে।
এই ৩২ নম্বরের বাড়ি আলোকিত করেই শেখ রাসেল পৃথিবীতে এসেছিলেন ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর। শেখ রাসেলের যেদিন জন্ম হয় সেদিন বঙ্গবন্ধু ফাতেমা জিন্নাহর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় চট্টগ্রামে অবস্থান করছিলেন।  সেইদিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর স্মৃতিচারণে লিখেছেন, “রাসেলের জন্মের আগের মুহূর্তগুলো ছিলো ভীষণ উৎকণ্ঠার। আমি, কামাল, জামাল, রেহানা ও খোকা চাচা বাসায়। বড় ফুফু ও মেঝ ফুফু মার সাথে। একজন ডাক্তার ও নার্সও এসেছেন। সময় যেন আর কাটে না। জামাল আর রেহানা কিছুক্ষণ ঘুমায় আবার জেগে ওঠে। আমরা ঘুমে ঢুলুঢুলু চোখে জেগে আছি নতুন অতিথির আগমন বার্তা শোনার অপেক্ষায়। মেঝ ফুফু ঘর থেকে বের হয়ে এসে খবর দিলেন আমাদের ভাই হয়েছে। খুশিতে আমরা আত্মহারা। কতক্ষণে দেখবো। ফুফু বললেন, তিনি ডাকবেন। কিছুক্ষণ পর ডাক এলো। বড় ফুফু আমার কোলে তুলে দিলেন রাসেলকে। মাথাভরা ঘন কালোচুল। তুলতুলে নরম গাল। বেশ বড়সড় হয়েছিলো রাসেল।”
রাসেল নামটি রেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার প্রিয় লেখক ছিলেন বার্ট্রান্ড রাসেল। পৃথিবী বিখ্যাত বৃটিশ দার্শনিক সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত বার্ট্রান্ড রাসেলের নামের সঙ্গে মিলিয়ে তিনি পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্যের নাম রাখলেন রাসেল, শেখ রাসেল। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কেড়ে নিলো ঘাতকের বুলেট! অথচ শেখ রাসেলের আকুতি ছিলো, কেবল মায়ের কাছে যাবার।