• ১২ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৯শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হায় সরকারী কর্মকর্তা, ঘাস উৎপাদন শিখতেও বিদেশে যেতে হবে!

দখিনের সময়
প্রকাশিত নভেম্বর ২০, ২০২০, ১৪:৩৩ অপরাহ্ণ
হায় সরকারী কর্মকর্তা, ঘাস উৎপাদন শিখতেও বিদেশে যেতে হবে!
সংবাদটি শেয়ার করুন...

দখিনের সময় ডেক্স:

ঘোড়ার ঘাস কাটা বলে একটি কথা আছে। তুচ্ছ কেন বিষকে বোঝাতে এমনটি বলা হয়। কিন্তু ররকারী প্রকল্প প্রমান করলো, পশু খাদ্য ঘাস মোটেই তুচ্ছ বিষয় নয়। এ ঘাস উৎপাদন শিখতে ৩২ কর্মকর্তাকে বিদেশ যেতে হবে। এবং এ জন্য ব্যয় নির্ধারণ করা হছেয়ে তিন কোটি টাকারও বেশি। হায় সরকারী কর্মকর্তা!

প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্পের তথ্য বেরিয়ে এসেছে, যেখানে ‘উন্নত জাতের ঘাস’ উৎপাদন শিখতে ৩২ জন কর্মকর্তাকে বিদেশ সফরে যেতে হবে। মোট প্রকল্পের তিন শতাংশের কিছু বেশি হলেও টাকার অঙ্কে এসব কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরের খরচটা নেহায়েত কম নয়— মাথাপিছু ১০ লাখ টাকা হিসেবে তিন কোটি ২০ লাখ টাকা! মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা তো বটেই, পরিকল্পনা কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও বলছেন, এই সফরের প্রয়োজন রয়েছে। তবে তাদের এমন অভিমতের সঙ্গে দ্বিমত রয়েছে বিশেষজ্ঞদের। তারা মনে করছেন, রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়।

প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের অধীন এই প্রকল্পের শিরোনাম ‘প্রাণিপুষ্টির উন্নয়নে উন্নত জাতের ঘাসের চাষ সম্প্রসারণ ও লাগসই প্রযুক্তি হস্তান্তর’। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ১০১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্পটি আগামী মঙ্গলবারের (২৪ নভেম্বর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রমগুলোর মধ্যে রয়েছে সাভারে কেন্দ্রীয় গোপ্রজনন ও দুগ্ধ খামারে স্থায়ী জার্মপ্লাজম নার্সারি স্থাপন। এছাড়া খামারি পর্যায়ে ৮ হাজার ৯৭০টি উচ্চ উৎপাদনশীল উন্নত জাতের স্থায়ী বা অস্থায়ী ঘাসের প্রদর্শনী প্লট স্থাপন করা হবে। উন্নত জাতের এই ঘাস উৎপাদন বিষয়ে অভিজ্ঞতা নিতেই কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরের সংস্থান রাখা হয়েছে প্রকল্পে।

একনেকে উত্থাপনের জন্য তৈরি প্রকল্পের সার-সংক্ষেপ পর্যালোনা করে দেখা গেছে, ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে এ ধরনের একটি প্রকল্প ছোট আকারে বাস্তবায়ন করা হয়। প্রকল্প এলাকাগুলোতে কৃষকদের মধ্যে ঘাস চাষে ব্যাপক সাড়াও পাওয়া যায়। সেই প্রকল্পের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বর্তমান প্রকল্পটি প্রণয়ন করা হয়েছে। তবে প্রকল্পটি সম্প্রসারণধর্মী হওয়ায় এর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়নি। যদিও সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ২৫ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হলেই সে প্রকল্পে সম্ভাব্যতা যাচাই আবশ্যক। তবে এই প্রকল্পটির বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশন থেকে এ প্রসঙ্গে কিছু বলা হয়নি।

এদিকে, প্রকল্পটি প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের বাস্তবায়ন করার কথা থাকলেও বিদেশ সফরের প্রস্তাবনায় যে ৩২ জনের কথা বলা হয়েছে, তাদের মধ্যে এই অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সংখ্যা হবে খুবই কম। অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. আবদুল জব্বার শিকদার জানিয়েছেন এ টিমে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পাঁচ জন কর্মকর্তা থাকতে পারেন। পরিকল্পনা কমিশন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং এই প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা থাকবেন বাকিদের মধ্যে।