চিরতা—তেতো স্বাদের এই ভেষজ গাছটি শরীরের জন্য এক অসাধারণ উপকারি উপাদান। আয়ুর্বেদশাস্ত্র অনুসারে, প্রাচীনকাল থেকেই এটি নানা রোগের প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। রক্তে শর্করা ও কোলেস্টেরল কমানো থেকে শুরু করে লিভার পরিষ্কার রাখা, শরীরের টক্সিন দূর করা, এমনকি অ্যালার্জি ও হজমের সমস্যা নিয়ন্ত্রণেও কার্যকর ভূমিকা রাখে চিরতার পানি। অনেকেই একে কালমেঘের সঙ্গে গুলিয়ে ফেললেও, এটি সম্পূর্ণ আলাদা একটি গাছ, যার বৈজ্ঞানিক নাম Swertia chirata এবং আয়ুর্বেদিক নাম ‘কিরাততিক্তা’।
এছাড়াও চিরতা রক্তশূন্যতা দূর করে, শরীরে নতুন রক্ত তৈরিতে সহায়তা করে এবং ত্বকের ঘা, ফুসকুড়ি কিংবা সংক্রমণ সারাতে দারুণ কার্যকর। এমনকি কৃমিনাশক হিসেবেও কাজ করে। তারুণ্য ধরে রাখতে এবং রক্তসঞ্চালন উন্নত করতেও চিরতার পানির জুড়ি নেই। সকালে খালি পেটে এটি পান করলে শরীর যেমন ভেতর থেকে পরিষ্কার থাকে, তেমনি মেলে একধরনের সতেজ অনুভূতি। নিয়মিত পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও অ্যাসিডিটির সমস্যাও কমে যায়।
ঋতু পরিবর্তনে হঠাৎ সর্দি-কাশি, জ্বর, হাঁপানি, চুলকানির মতো সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে আনে এই ভেষজ উপাদান। চিরতার পানির ব্যবহার সহজ—অল্প কয়েকটি শুকনো চিরতার ডালপালা এক গ্লাস পানিতে সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে পান করলেই এর উপকার মিলতে শুরু করে। যদিও স্বাদে তেতো, তবে নিয়মিত পান করলে এটি হয়ে উঠতে পারে আপনার ঘরোয়া স্বাস্থ্যরক্ষার চিরচেনা সঙ্গী।