প্রশাসনে স্বৈরাচারের দোসরদের এবার বিদায়ের পালা, যুক্ত হবে অর্ধশত নতুন মুখ
দখিনের সময়
প্রকাশিত ডিসেম্বর ২২, ২০২৪, ১০:২৬ পূর্বাহ্ণ
সংবাদটি শেয়ার করুন...
আলম রায়হান:
অবশেষে প্রশাসন থেকে স্বৈরাচারের দোসরদের বিদায়ের পালা সমাগত। প্রশাসনের কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয় সচিবালয়কে। এই সচিবালয়ে উচ্চ পর্যায়ের যে কর্মকর্তারা আছেন তাদের বেশিরভাগই পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসর। এবং লাগামহীন দুর্নীতি ও অপকর্মের অংশীদার। এদেরকে অপসারণ করার দাবী তোলা হলেও তা সম্ভব হচ্ছিলো না। কারণ, ‘ঠগ বাছলে গ্রাম উজার’ হবার মতো স্বৈারাচারের দোসর বাছলে প্রশাসন উজার হয়ে যাবার অবস্থা সৃষ্টি হবে।
এই বাস্তবতায় সচিবালয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে জেকে বসে আছে স্বৈরাচারের দোসররা। নয়তো শূন্য রয়েছে পদ। যেমন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের পদ। প্রশাসনের কেন্দ্র সচিবালয়ে অতিগুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণায়। এই মন্ত্রণালয়ের উপর নির্ভর করে সরকারের অনেক কিছু। এই বিবেচনায়ই রদবদলের পালায় এই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা করা হয়েছে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের অন্যতম আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে। কিন্তু তার অধীন অতিগুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের পদ শূন্য রয়েছে। অদ্ভুত শুনালেও এটিই বাস্তবতা। এ অবস্থা এই বিভাগের সচিবের কাজ করছেন হাসিনা সরকারের সময সিনিয়র সহকারী সচিব থাকাকালে অপসারিত এক কর্মকর্তা। অবশ্য তাঁর দক্ষতা এবং সততা প্রশ্নাতীত। সূত্রমতে, এখনই তাকে সচিব ঘোষণা করা যাচ্ছে না। জানাগেছে, তাকেই স্থানীয় সরকার সচিব করা হবে। টেকনিক্যাল কারণে কিছু দিনের জন্য এক রকম গোজামিল দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে।
সূত্র মতে কর্মকর্তা না থাকায় হয় গোজামিল দিয়ে না হয় স্বৈরাাচারের দোসর দিয়ে অনেক মন্ত্রলায় চলছে। এই বাস্তবতায় এটি দিবালোকর মতো স্পষ্ট, শেখ হাসিনার প্রশাসনের অনেক সহচর বহাল তবিয়তে আছেন। মূলত তারাই হচ্ছে ড. ইউনুস সরকার পরিচালনার মেরুদন্ড। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে পাকিস্তানী আমলারা যেমন ছিলো শেখ মুজিব সরকারের ভিত্তি।
প্রশাসন থেকে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের দোসরদের অপসারনের দাবী তোলা হয়েছে শুরু থেকেই। কিন্তু রাজনৈতিক হায়নার দোসরদের অপসারণ করে কাকে আনা হবে? বলাবাহুল্য এই পথ রুদ্ধ করেগেছে পলাতক স্বৈরাচার। এ অবস্থায় মন্দের ভালো হিসেবে নজর দেয়া হয় বিগত সরকারের আমলে বঞ্চিত ও অপসারিত কর্মকর্তাদের দিকে। দীর্ঘ যাচাইবাছাই করে এদের মধ্য থেকে অন্তত ৭৫০ জনের একটি তালিকা প্রধান উপদেষ্টার বরাবরে পেশ করা হয়েছে বলে জানাগেছে। সংশ্লিষ্ট কমিটি স্বৈরাচারী সরকারের আমলে বঞ্চিত ও অপসারিতদের প্রাপ্য পদ এবং সেই অনুপাতে অর্থ দেবার সুপারিশ করেছে। এ ব্যাপারে প্রজ্ঞাপন চলতি সপ্তাহেই জারি হবার জোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েওেছ সূত্র।
উল্লেখ্য, বিগত সরকারের সময় অপসাররিত কর্মকর্তাদের প্রাপ্য পদ ও আর্থিক সুবিধা দেয়া হলে প্রশাসনের কী আসে যায়? এই প্রশ্নে উত্তরে সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, উল্লেখিত ৭৫০ জনের মধ্যে অন্তত একশ’ কর্মকর্তা শারিরিক ও মানসিকভাবে ফিট আছেন। এদের মধ্য থেকে অন্তত ৫০ থেকে ৬০ জনকে প্রশাসনে ফেরানোর চিন্তাভাবনা আছে বলে সূত্র জানিয়েছে। এ ক্ষেত্রে তাদেরকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হবে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য, সরকারে সচিব এবং সচিব পর্যায়ের পদ রয়েছে শতাধিক। এর মধ্যে অনেকগুলো শূন্য রয়েছে। অনেকগুলোতে আছেন স্বৈরাচারের দোসররা। তবে অবশেষে তাদের বিদায়ের পালা সমাগত।