অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে বাংলাদেশে দিন দিন বেড়ে চলেছে উচ্চ রক্তচাপসহ নানা অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, খাবারে অতিরিক্ত লবণ ও ট্রান্সফ্যাট উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম নিয়ন্ত্রণযোগ্য কারণ। তবে স্বাস্থ্যকর ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুললে এই ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব। বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২৫ উপলক্ষে প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত “খাদ্যাভ্যাস ও উচ্চ রক্তচাপ ঝুঁকি” শীর্ষক ওয়েবিনারে বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেন। আয়োজনে সহযোগিতা করে গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)।
বক্তারা জানান, ফল ও শাকসবজির অভাবে প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে লাখো মানুষ মৃত্যুর মুখে পড়ে। ২০১৭ সালের তথ্য অনুযায়ী, পর্যাপ্ত ফল ও সবজি না খাওয়ার কারণে প্রায় ৩৯ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, কম লবণ, চিনি ও চর্বিযুক্ত খাবারের সঙ্গে পর্যাপ্ত শাকসবজি ও ফলমূল অন্তর্ভুক্ত করলে উচ্চ রক্তচাপসহ হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও অন্যান্য অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি কমানো যায়। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শোয়েব জানান, ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণ প্রবিধান বাস্তবায়নের পাশাপাশি খাদ্যপণ্যে স্পষ্ট লেবেলিং ব্যবস্থা চালুর কাজ চলছে, যা জনগণকে সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।
ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডা. গীতা রানী দেবী বলেন, “উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে সচেতনতা ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস প্রচারের কাজ কমিউনিটি পর্যায় থেকেই শুরু করা উচিত।” ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী যোগ করেন, “মানুষ যেন প্রক্রিয়াজাত খাবার কেনার আগে সহজেই বুঝতে পারে তাতে কতটা লবণ ও ক্ষতিকর উপাদান রয়েছে, সেই ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।” ওয়েবিনারে আরও বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. খালেদা ইসলাম, প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের এবং জিএইচএআই বাংলাদেশের কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের অংশগ্রহণকারীদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এই ওয়েবিনারে বক্তারা জোর দেন— স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসই হতে পারে উচ্চ রক্তচাপ ও অসংক্রামক রোগ মোকাবেলার কার্যকর প্রথম পদক্ষেপ।