দখিনের সময় ডেস্ক:
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে দুর্নীতির দায়ে ওএসডি হওয়া এক জিএমকে প্রতিষ্ঠানটির শুদ্ধাচার প্রতিপালনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিমানে ‘মিস্টার কমিশন’ হিসেবে পরিচিত এ কর্মকর্তার নাম শাকিল মেরাজ। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফ্লাইটে অযাচিতভাবে প্রবেশের দায়েও অভিযুক্ত হয়েছেন জিএম (প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন্স) শাকিল মেরাজ।
অভিযোগ আছে, আর্থিক সুবিধা এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আনুকুল্য পেতে তাদের অধীনস্ত কর্মচারীদের শুদ্ধাচার পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেন। সম্প্রতি বিমানের প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় এমন দুই কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে যারা শাকিল মেরাজের বিবেচনায় শুদ্ধাচার পুরস্কার পেয়েছিলেন।
বিমান সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত বছর রমজানের সময় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ইফতার নিন্মমানের হওয়ার অভিযোগে শাকিল মেরাজকে বিমানের বিএফসিসি থেকে মোটর ট্রান্সপোর্ট বিভাগে বদলি করা হয়েছিল। এরপর এই শাখাতেও আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠে এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে শাকিল মেরাজকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়। এরপর বিভিন্ন মাধ্যমে তদবির করে ওএসডি অবস্থা থেকে মুক্তি পান তিনি।
এখানেই থেমে নেই শাকিল মেরাজের অপকর্ম। বিমান সূত্র জানায়, গত বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লন্ডন সফরের সময় ভিভিআইপি ফ্লাইটে অনুমোদন ছাড়াই তিনি ভ্রমণ করতে চেয়েছিলেন। বিষয়টি নিরাপত্তাকর্মীদের চোখে পড়ায় তাকে সেই ফ্লাইট থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শাকিল মেরাজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবির ক্যাডার ছিলেন। বর্তমানেও তিনি বিএনপি ও জামাত লবির যোগাযোগ রক্ষা করেন। তার লন্ডনকেন্দ্রিক যোগাযোগের বিষয়েও কানাঘুষা আছে বিমান কর্মকর্তাদের মধ্যে।
এমন একজন কর্মকর্তাকে কিভাবে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমানের শুদ্ধাচার কমিটির প্রধান করা হয় এ প্রশ্ন সবার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিষ্ঠানটি শাকিল মেরাজের মতো কিছু বিতর্কিত কর্মকর্তার জন্য মানুষের কাছে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন হচ্ছে, যার দায় যাচ্ছে সরকারে ওপর।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা জানান, শাকিল মেরাজ শুধু নিজেই দুর্নীতি করেন না, সেইসঙ্গে যারা ভালো কর্মকর্তা আছেন আছেন তাদেরকে দুর্নীতিতে জড়ানোর চেষ্টায় থাকেন। যদি কেউ তার প্রস্তাবে রাজি না হন তাদেরকে নানানভাবে হয়রানি করেন। অপর এক কর্মকর্তা বলেন, দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর শাকিল মেরাজকে সংশ্লিষ্ট দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া ঠিক সিদ্ধান্ত হয়েছিলো ছিল। কিন্তু পরে রহস্যজনক কারণে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা না হয়নি।