গ্রীষ্মে পাকা রসালো আমের লোভ সামলানো কঠিন, কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এটি বেশ সংবেদনশীল একটি বিষয়। আমে থাকা প্রাকৃতিক চিনি (ফ্রুক্টোজ) রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে, তাই খাওয়ার পরিমাণ এবং পদ্ধতি জানতে হয় বুঝেশুনে। সাধারণভাবে ডায়াবেটিস রোগীরা দিনে আধা কাপ বা এক টুকরো মাঝারি আকারের আম (প্রায় ৫০–১০০ গ্রাম) খেতে পারেন। তবে এটি খাবারের সঙ্গে নয়, বরং আলাদা করে স্ন্যাকস হিসেবে খাওয়াই ভালো, যাতে ইনসুলিনের ভারসাম্য বিঘ্নিত না হয়।
আম খাওয়ার সময় প্রোটিন বা ফাইবারসমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে খেলে শরীরে চিনি শোষণের গতি কমে। যেমন: এক মুঠো বাদাম, কিছুটা ছোলা বা এক কাপ টক দই আমের সঙ্গী হতে পারে। এতে রক্তে গ্লুকোজ হঠাৎ করে বাড়ে না এবং দীর্ঘ সময় ধরে শরীরে স্থিতিশীল থাকে। আমের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) মাঝারি হলেও, এর গ্লাইসেমিক লোড (GL) বেশি হতে পারে, যা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে খাওয়া হলে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। তাই শুধু স্বাদ নয়, সচেতনতার বিষয়ও এটি।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে: প্রতিটি ডায়াবেটিস রোগীর দেহের প্রতিক্রিয়া একরকম নয়। কারও রক্তে চিনি একটু আম খেলেই বেড়ে যায়, আবার কারও তেমন সমস্যা হয় না। তাই আম খাওয়ার আগে ও পরে রক্তে গ্লুকোজ লেভেল পরিমাপ করলে নিজের শরীরের প্রতিক্রিয়া বোঝা সহজ হবে। তবে নিজের সিদ্ধান্তে না গিয়ে, সুনির্দিষ্ট পরিমাণ ও খাদ্যপরিকল্পনার জন্য একজন চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেয়া সবচেয়ে ভালো। আম খেতে চাইলে হ্যাঁ, পারবেন—তবে নিয়ম মেনে, পরিমিত আর সচেতন থেকে।