• ১০ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বৃষ্টিতে ভেজার উপকারিতা ও সতর্কতা

দখিনের সময়
প্রকাশিত মে ৩০, ২০২৫, ১৮:৩৮ অপরাহ্ণ
বৃষ্টিতে ভেজার উপকারিতা ও সতর্কতা
সংবাদটি শেয়ার করুন...
দখিনের সময় ডেস্ক:
দীর্ঘ দাবদাহের পর হঠাৎ নামা এক পশলা বৃষ্টি যেন স্বস্তির পরশ। শহরের ব্যস্ত রাস্তায় হুট করে বৃষ্টি নামলে কেউ কেউ ছাতা মাথায় দেন, আবার কেউ ইচ্ছে করেই ভিজে যান। তবে প্রশ্ন হচ্ছে—এই ভেজা শরীরের জন্য ক্ষতিকর, না কি উপকারী? অবাক করা ব্যাপার হলো, বৃষ্টিতে ভিজলে শুধু শরীরই ঠান্ডা হয় না, এতে শরীর ও মনের উপরও ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। বিজ্ঞান বলছে, বৃষ্টির পানি সাধারণত অ্যালকালাইন প্রকৃতির এবং এতে থাকে নানা ধরনের খনিজ ও অণুজীব যা ভিটামিন বি-১২ তৈরি করতে পারে। ফলে বৃষ্টিতে হালকা ভিজলে শরীর থেকে টক্সিন দূর হয়, রক্তের পিএইচ ব্যালেন্স স্বাভাবিক হয় এবং হজমক্ষমতা বাড়ে। এমনকি শ্বাস-প্রক্রিয়া ও কানের সংক্রমণজনিত সমস্যা উপশমেও এই প্রাকৃতিক পানি সহায়ক হতে পারে।
তবে শরীরের বাইরেও এর উপকারিতা আছে অনেক। চুলে জমে থাকা ধুলো-ময়লা ও খুশকি দূর করতে বৃষ্টির পানি কার্যকর ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে। ত্বকের জ্বালা, চুলকানি ও রুক্ষভাব কমাতে এই পানি দারুণ ভূমিকা রাখে। বৃষ্টির পর বাতাসে থাকা জলীয় বাষ্প অনেক ক্ষতিকর জীবাণুর কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়, ফলে ত্বক হয়ে ওঠে উজ্জ্বল ও সতেজ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত বৃষ্টির পানিতে শরীর ভিজলে হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে, মানসিক চাপ ও বিষণ্নতা কমে। এর পেছনে রয়েছে সেই বিখ্যাত ‘পেট্রিকোর’ ঘ্রাণ, যা মাটি ভিজে ওঠার পর বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে ও মন ভালো করার রাসায়নিক সাড়া দেয়। শরীরে তখন এন্ডোরফিন ও সেরোটোনিন হরমোনের ক্ষরণ ঘটে, যা আমাদের আনন্দিত রাখে।
তবে মনে রাখতে হবে, অতিরিক্ত ভেজা কখনোই ভালো নয়। টানা ১৫ মিনিটের বেশি ভেজে থাকলে ঠান্ডা লাগা বা জ্বর হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। বৃষ্টিতে ভিজতে চাইলে তা যেন হয় ১০ মিনিটের মধ্যে এবং ভেজার পরপরই হালকা গরম পানি ও অ্যান্টিসেপ্টিক সাবান দিয়ে গোসল করে নেওয়া ভালো। এভাবে আপনি শুধু বৃষ্টির আনন্দই নেবেন না, শরীর ও মনকেও দেবেন এক নতুন সতেজতা। সুতরাং সময় পেলে একটুখানি ভিজেই দেখুন, প্রকৃতি যে কী নিঃস্বার্থ উপহার দিয়ে যাচ্ছে!