দখিনের সময় ডেস্ক:
নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের আর্থিক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সঞ্চয়পত্রে উচ্চ সুদ দিচ্ছে সরকার। জনগণের করের টাকায় দেওয়া এই সুদের সিংহ ভাগই খাচ্ছেন উচ্চবিত্ত ও ধনীরা। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই)-এর এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে ২০২২ সালের ডিসেম্বর।
পিআরআই’র কার্যালয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ নিয়ে আয়োজিত এক কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেন পিআরআইয়ের গবেষণা পরিচালক ড. এম আব্দুর রাজ্জাক। এসময় ড. জায়েদি সাত্তার, নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর, পরিচালক ড. বজলুল হক খন্দকার এবং ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সাধারণ সম্পাদক এম এস রাশিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে আহসান এইচ মনসুর জানান, সঞ্চয়পত্রে যে বিনিয়োগ হয় তার ৭০ শতাংশের বেশি ধনীদের। ফলে সরকার যে উদ্দেশে উচ্চ সুদ দিচ্ছে সেই অর্থ যাচ্ছে সরকারি আমলা ও উচ্চ ধনী ব্যক্তিদের পকেটে। তিনি বলেন, সঞ্চয়পত্রের মূল সুবিধাভোগী একটি শক্তিশালী গ্রুপ। তাদের কারণেই সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানো সম্ভব হয় না। আমাদের একটা গবেষণায় দেখেছি ৭০ শতাংশের বেশি সঞ্চয়পত্র কেনেন ধনীরা। যতদিন সঞ্চয়পত্রের উচ্চ সুদের হার থাকবে ততদিন বন্ড মার্কেট ডেভেলপ করবে না।
কর-জিডিপি’র হার নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে আহসান এইচ মনসুর বলেন, কর-জিডিপির রেশিও দিন দিন কমছে। আগামীতে আরও কমবে। কর-জিডিপির রেশিও ১২ শতাংশ থেকে কম সাড়ে ৭ শতাংশ হয়ে গেছে।গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে বড় লোকদের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। স্বল্পআয়ের মানুষ পঞ্চয়পত্র থেকে খুব একটা সুবিধা পাচ্ছে না। তাছাড়া যতদিন সঞ্চয়পত্রের উচ্চ সুদ হার থাকবে ততদিন দেশের বন্ড মার্কেটের উন্নতি হবে না। এজন্য উচ্চ হারে সুদ দিয়ে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের সুযোগ রাখা উচিত নয় বলে অভিমত দিচ্ছে অর্থনীতিবিদদের নিয়ে গড়ে ওঠা এই গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সঞ্চয়পত্রের মূল সুবিধাভোগী একটি শক্তিশালী গ্রুপ। তারাই মূলত সঞ্চয়পত্রের সুদ হার কমাতে দেয় না।
এম আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সরকার যে রাজস্ব আয় করে তার ২০ শতাংশই সুদ পরিশোধের জন্য ব্যয় করতে হয়। সরকারের এই সুদ ব্যয় কমাতে হলে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি কমাতে হবে। উচ্চ হারে সুদ দিয়ে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করার সুযোগ দেওয়া উচিত নয়। সঞ্চয়পত্র দিয়ে বড় লোকদের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। সঞ্চয়পত্রের বদলে অন্য জায়গায় বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করা উচিত।
খবরসূত্র: ঢাকাপোস্ট