বুধবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে এক আবেগঘন মুহূর্তে পৌঁছান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ১৯৭৪ সালের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের স্মৃতি টেনে তিনি বলেন, “স্বাধীনতার মাত্র তিন বছর পর আমরা দেখেছি মানুষ কীভাবে না খেয়ে মারা গেছে। প্রায় ১৫ লাখ প্রাণ ঝরে গিয়েছিল ক্ষুধার কাছে হেরে।” এ কথা বলতে বলতেই তার গলা ধরে আসে, এবং কিছুক্ষণ নীরব থাকার পর তিনি চোখ মুছে আবার কথা বলা শুরু করেন।
তিনি স্মরণ করেন, “তখন আমরা বছরে একটি মাত্র ফসল ফলাতাম। জমির মালিক ছিলেন না বেশিরভাগ কৃষক। জীবন ছিল দুর্বিষহ। আমরা শুধু টিকে থাকার লড়াই করতাম।” তিনি বলেন, সেই দুর্দিন থেকেই ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির ধারণা আসে—দরিদ্র নারী-পুরুষকে স্বাবলম্বী করতে দেয়া হয় স্বল্প পরিসরের ঋণ। সেখান থেকেই জন্ম নেয় গ্রামীণ ব্যাংক, যার ভবিষ্যৎ পথচলার কোনও ছক তখন জানা ছিল না, অথচ পরে তা হয় বিশ্বব্যাপী আলোচিত এক দৃষ্টান্ত।
বর্তমান বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রসঙ্গ টেনে ইউনূস বলেন, “আজ আমরা বিদেশি বিনিয়োগ, বড় শিল্প, তরুণদের সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলছি। খুব অল্প সময়েই আমরা বহু পথ পেরিয়েছি।” তবে তিনি বিনিয়োগকারীদের মনে করিয়ে দেন, “আপনি যেই দেশেই থাকেন না কেন, আপনার ভেতরেও এক ’৭৪ লুকিয়ে থাকে। আর সেই লুকানো দারিদ্র্য দূর করতে অর্থ নয়, প্রয়োজন মানুষের ক্ষমতায়ন—তাদের ভেতরের শক্তি জাগিয়ে তোলা।”