
এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, শতভাগ উৎসব ভাতা, সরকারি কর্মচারীদের মতো বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতার দাবিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দেশব্যাপী পূর্ণ দিবস ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। পাশাপাশি তারা ফের সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

দখিনের সময় ডেস্ক:
তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় ফ্যাসিবাদ উৎপাটন হয়েছে সারফেস লেভেলে, কিন্তু সামাজিক ফ্যাসিবাদ এখনো উপড়ে ফেলতে পারিনি। সামাজিক বুলিং শুধু আইনি সমাধান নয়, বরং সামাজিক নেগোসিয়েশন বা ডায়ালগ বা সমঝোতারও বিষয়। মাহফুজ আলম বলেন, বাংলাদেশের পলিটিক্যাল সেটলমেন্ট যত দিন না বদলাবে, তত দিন কোনো পরিবর্তন আসবে না। তিনি বলেন, এলিট সেটলমেন্ট এবং নেগোসিয়েশন কতটা হয়েছে?
শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাজধানীর বিস অডিটরিয়ামে ‘উইমেন ইন ডেমোক্রেসি’ আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তৃতাকালে এমন মন্তব্য করেন তথ্য উপদেষ্টা। তিনি বলেন, যারা একসময় মজলুম ছিল, তারা এখন জালিম হচ্ছে। যারা নিজেরা একদিন মজলুম ছিল, তারা জামিন করাতে গেছে কেন? এরা যে মজলুম থেকে জালিম হচ্ছে, কেন সেটা হচ্ছে, ভাবতে হবে। বৈঠকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হেনস্তার কথা ওঠার পর মাহফুজ আলম জানান, তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরাও সংঘবদ্ধ আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। তিনি বলেন, যারা এক সময় মজলুম ছিল, তারাই এখন জালিম হয়ে যাচ্ছেন।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, কেন একটা মানুষ আমাকে ফেসবুকে গালি দেয় মা–বাবা তুলে? অথচ সে ফেসবুকে দিয়ে রাখছে কোনো ভালো আলেমের ছবি। অথচ সে আমাকে গালি দেয়। এটা তো ইসলামে বলে না। আমি মনে করি, এটা তার দোষ। আমরা এ ধরনের বট বাহিনী মিলিয়ে দেখছি। এই বট বাহিনী (ভুয়া পরিচয়ে খোলা অসংখ্য ফেসবুক একাউন্ট) পরিচালনাকারীদের একটি আগে থেকে সুসংগঠিত ছিল এবং আরেকটি এখন সংগঠিত হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা নিজেরা আগে মজলুম ছিল, তারা এখন জালিম। কেন?
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, অনেকেই বলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনো সরকার নয়, এটা একটা পরিষদ। অথচ, সব রাজনৈতিক দলের সমর্থনেই তো এই সরকার গঠন হয়েছিল। যদি সব রাজনৈতিক দল চাইত, সব ধরনের সমস্যার সমাধান করা যেত। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার কী করতে পারেনি, সেই প্রশ্ন তোলার আগে সরকার গঠনের প্রথম আট মাস রাজনৈতিক দলগুলো কতটা সহযোগিতা করেছে, সেটা সামনে আনতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর ইন্ধনে অথবা ইন্ধন ছাড়া, প্রথম আট–নয় মাসে অন্তত ২০০–এর ওপরে আন্দোলনকে মোকাবিলা করতে হয়েছে। ওই সময়টা খুবই ভয়ংকর একটা সময় ছিল। ওই সময়ে যখন আমাদের জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন নেওয়ার সুযোগ ছিল, তখন আমাদের ব্যস্ত রাখা হয়েছে এই রকম অনেকগুলো ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশনে। মাহফুজ আলম বলেন, নতুন প্রশাসন গঠনের আগে প্রথম আট মাস বিভিন্ন আন্দোলন নিয়ে সরকারকে ব্যস্ত থাকতে হয়, এবং ঈদের পর পুরনো অ্যাডমিনিস্ট্রেশন আবার জেঁকে বসে।
অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা আরও বলেন, একটা দ্যোদুল্যমান শক্তি পেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। একদিকে হেলে গেলে, আরেকদিকেও হেলে যায়। রাজনৈতিক দলগুলোরও এখানে একটি দায়িত্ব রয়েছে। তিনি বলেন, সরকারের সফলতার বিষয়টা যতটা না জনগণের, ব্যর্থতা তার থেকে যাদের উপর ভরসা করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাদের ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতা। সবার ভূমিকাসহ সবকিছুর মূল্যায়ণ করে এক জায়গায় আসতে হবে।
নারীদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে মাহফুজ আলম সাইবার বুলিংয়ের কারণ বিশ্লেষণ করে বলেন, বুলিং, সোশ্যাল ট্যাবু–এগুলো জমাটবদ্ধ চিন্তাভাবনার প্রতিফলন। রাষ্ট্র ও সমাজকে আলাদা করে যে ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিল আওয়ামী লীগ, সেগুলোরই ক্ষোভ এবং প্রতিক্রিয়া এসব সাইবার বুলিং।
Post Views: ৬৫