আবরার হাসনাইন ॥
বহুল আলোচিত জিকে শামীমের জামিন কেলেঙ্কারি নিয়ে রির্পোট করায় মাইটিভি’র সিনিয়র রিপোর্টার সাইদুর রহমান আবিরের বিরুদ্ধে মামলার হুমকী দেয়া হয়েছে। এ মামলার জামিন শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের ভূমিকা এবং তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে গত ১২ জুলাই মাইটিভিতে সংবাদ প্রচার করেন সিনিয়র রিপোর্টার সাইদুর রহমান আবির।
সংবাদ প্রচারের পর ১৪ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জান্নাতুল ফেরদৌসি রুপা ‘সংবাদটিকে মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রোণোদিত’ আখ্যা দেন এবং নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলেন। অন্যথায় ফৌজদারি দেওয়ানী এবং আইসিটি এ্যাক্ট অনুযায়ী মামলা দায়ের করার হুমকি দিয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসি রুপা নিজ স্বাক্ষরিত চিঠি পাঠান মাইটিভি কার্যালয়ে।
বহুল আলোচিত, যুবলীগের বহিস্কৃত নেতা ও বিতর্কিত ঠিকাদার জিকে শামীমের বিরুদ্ধে গঠিত তিনটি মামলার মধ্যে অস্ত্র ও মাদক মামলায় নাম পরিবর্তন করে গত ৪ ও ৬ ফেব্রুয়ারী জামিন আবেদন করা হয়। বাদীপক্ষের আবেদন অনুযায়ী দুটি মামলাতেই জামিন দেন আদালত। পরে মার্চ মাসে গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রচার হলে আবারো এই মামলা আদালতে উত্থাপন করা হয় এবং আদালতকে জানানো হয় এই মামলার প্রধান আসামী জিকে শামীম। জামিন আবেদনের সময় নাম পরিবর্তন করে গোলাম কিবরিয়া উল্লেখ করা হয়, তাই রাষ্ট্রপক্ষ আপত্তি করেনি। পরে আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে জামিন বাতিল করে। মামলা দুটিতে দায়িত্বে থাকা রাষ্ট্রপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। নাম বিভ্রাট করে জামিন করানোর সাথে কারা জড়িত তা বের করতে তদন্তের কথা থাকলেও, সেই তদন্তে অগ্রগতি নেই বলে জানাগেছে।
এই মামলার জামিন কেলেঙ্কারিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের ভূমিকা এবং তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে গত ১২ জুলাই মাইটিভিতে সংবাদ প্রচার করেন, সিনিয়র রিপোর্টার সাইদুর রহমান আবির। সংবাদ প্রচারের পর ১৪ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জান্নাতুল ফেরদৌসি রুপা সংবাদটিকে মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রোণোদিত আখ্যা দেন এবং নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলেন। অন্যথায় ফৌজদারি দেওয়ানী এবং আইসিটি এ্যাটাক্ট অনুযায়ী মামলা দায়ের করার হুমকি দিয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসি রুপা নিজ স্বাক্ষরিত চিঠি পাঠান মাইটিভি কার্যালয়ে।
এ ব্যাপারে সাংবাদিক সাইদুর রহমান আবির জানান, সার্বিক বিষয় এবং ঘটনা তদন্তের অগ্রগতির উপর নিউজ করেছি, কোন ব্যক্তিকে আক্রমণের উদ্দেশ্যে নয়। তারপরও মামলার হুমকি পাচ্ছি যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও বিব্রতকর। তিনি আরও বলেন আমার করা ১২ জুলাইয়ের রিপোর্ট টি তে বিভিন্ন আইনজীবী, এটর্নি জেনারেল এবং আইনমন্ত্রী বিবৃত দেন।
সিনিয়ার আইনজীবী, ইউসুফ হোসেন হুমায়ন বলেন “ডিএজি যেহেতু সিনিয়ার, ওনার দায়িত্ব বেশি আসামী পক্ষের এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পুরো বিষয়টি শুনে তারপরতো অর্ডারটা হয়, নাকি?
সাবেক আইনমন্ত্রী, ব্যারিস্টার শফিক আহামেদ বলেন, “এইটা তো আমি বলবো অত্যন্ত লজ্জাজনক, রাষ্ট্রপক্ষের ভূমিকা নিয়ে ইনভেস্টিগেশন হবে, নিশ্চিত দায়ীকে শাস্তি পেতে হবে।“
এই ঘটনার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে এটর্নি জেনারেল মাহাবুবে আলম বলেন, “এডমিনেসট্রেটিভ বিষয়তো, তদন্তের বিষয়টি রেজিস্টার বলতে পারবে, আর ডিএজকে আমি যথেষ্ট ভৎসনা করেছি।“
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তদন্তের ব্যাপারে বলেন, “ আমিতো হাইকোর্টকে তদন্ত করতে পারি না, আপানারা অপেক্ষা করেন। দেখুন কোর্ট কি ব্যবস্থা নেন।
সাংবাদিক সাইদুর রহমান আবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আইন অঙ্গনের যাদের কে প্রশ্ন করা হয়েছে, কেউ কোন আপত্তি জানাননি অথবা বিব্রতি হননি। তাহলে দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিএজ কিভাবে এতোটা বিব্রত হলেন ? তিনি আরও বলেন, আমি একজন সাংবাদিক হিসাবে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করাই আমার কাজ। এখানে আমার কোন ব্যক্তি স্বার্থ নেই। তাছাড়া তিনি আরও বলেন, আমি তো রিপোর্ট এ সকলের মন্তব্য নিয়ে সেটা জনগণের সামনে তুলে ধরেছি। দায়িত্বশীলরা সবাই এর সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবি করেছেন।