নৈসর্গিক সৌন্দর্যের শরৎ প্রকৃতিতে বিরাজমান তার সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ কাশফুল নিয়ে। উজ্জল নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলার ছোটাছুটি। আর ঠিক তার বিপরীতে বাতাসে দোল খাওয়া কাশফুল মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। প্রকৃতির এমন অপরুপ সৌন্দর্য নজর কারছে সকলের।
‘শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি, ছড়িয়ে গেল ছাপিয়ে মোহন অঙ্গুলি৷’ এভাবেই শরতের সৌন্দর্য উপস্থাপন করেছেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর৷ কবি নির্মলেন্দু গুণ তার একটি কবিতায় লিখেছিলেন-‘শরত রানী যেন কাশের বোরখাখানি খুলে, কাশবনের ওই আড়াল থেকে নাচছে দুলে দুলে।’ ঋতুচক্রের পরিক্রমায় বর্ষার পরেই আগমন ঘটে প্রকৃতির রানী শরতের। শরতের আলোছায়ার খেলা- এই মেঘ, এই বৃষ্টি, আবার এই রোদ। মায়াবী শরতের স্নিগ্ধ জ্যোৎস্নার ভালোলাগা হৃদয়কে ছুঁয়ে যায় না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার।
প্রাচ্যের ভেনিচ খ্যাত বরিশালের বুকে কীর্তনখোলা এবং খয়রাবাদ নদীর কোল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে দক্ষিণের শ্রেষ্ঠবিদ্যাপীঠ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এই লীলাভূমিতে যেন স্বর্গীয় সৌন্দর্য তারার মত জ্বলজ্বল করে। ক্ষীণ আলোয় তার দ্যুতি ছড়িয়ে দিচ্ছে সুজলা-সুফলা শস্য-শ্যামলা বাংলার বুকে। প্রতিটি ঋতু ভিন্ন ভিন্ন সাজে মুগ্ধতা ছড়ায় এই স্বর্গরাজ্যে।
আর ঋতু রানী শুভ্রতা ছড়ানো কাশফুলে শ্বেত হয়ে উঠে ক্যাম্পাসের মাঠঘাটসহ প্রতিটি জায়গা। এ যেন এক ফালি মায়া! নদী, নীল আকাশ আর কাশফুলের এক অচেনা রাজত্ব।। বাতাসে কাশফুলের দোল খাওয়ার দৃশ্য কেড়ে নিচ্ছে মন। শুভ্র কাশফুল হাতছানি দিয়ে ডাকছে প্রকৃতিপ্রেমীদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ রাস্তার দুপাশ, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, শহীদ মিনারের চারপাশ, কেন্দ্রীয় মসজিদের চারপাশ ও হল সংলগ্ন মাঠসহ বিভিন্ন চত্বর ভরে গেছে কাশফুলে। ক্যাম্পাসের চারপাশের কাশফুলের সৌন্দর্য মুগ্ধ করছে শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকলকেই। শিক্ষার্থীদের আড্ডায় বারবার উঁকি দেয় শুভ্রতা ছড়ানো কাশফুল।
ছুটির দিন বিকেলে স্থানীয়বাসীন্দাসহ দূরদুরান্ত থেকে আশা দর্শনার্থীদের ভীর দেখা যায় পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে । কেউ বন্ধুদের সঙ্গে, কেউবা প্রিয়তমাকে নিয়ে, কেউ বা আসেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। দোল খাওয়া কাশফুলের নমে ছোঁয়ায় মোহিত হচ্ছেন তারা। কেউবা সেই অনুভূতিগুলোকে ক্যামেরায় ফ্রেমবন্দি করে রাখছেন। অনেকেই ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন।