• ১০ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৭শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিজান ও বাছিরের ঘুষ লেনদেনের মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ

দখিনের সময়
প্রকাশিত ডিসেম্বর ২৩, ২০২১, ১৮:০৩ অপরাহ্ণ
মিজান ও বাছিরের ঘুষ লেনদেনের মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ
সংবাদটি শেয়ার করুন...

দখিনের সময়ং ডেস্ক:

বরখাস্ত হওয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির এবং পুলিশের বরখাস্ত হওয়া ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের ঘুষ লেনদেনের মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ সমাপ্ত করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার(২৩ডিসেম্বর) মামলাটিতে শেষ সাক্ষী হিসাবে দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্লাহ সাক্ষ্য দেন।

ঢাকার চার নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম এদিন এ সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আগামী ৪ জানুয়ারি আত্মপক্ষ শুনানির দিন ঠিক করেন। মামলায় আদায় মোট ১৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন। বৃহস্পতিবার সাক্ষ্য নেওয়ার সময় কারাগার থেকে মামলার আসামি মিজান ও বাছিরকে আদালতে হাজির করা হয়।

গত বছরের ১৮ মার্চ খন্দকার এনামুল বাছির এবং মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ঘুষ লেনদেনের এ মামলায় একই বছরের ১৪ জানুয়ারি ডিআইজি মিজানুর রহমান এবং দুদক পরিচালক এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। গত বছরের ১৯ আগস্ট এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

মামলার বাদী দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা আদালতে সেদিন বলেছিলেন, খন্দকার এনামুল বাছির দুদকের কর্মকর্তা হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তৎকালীন ডিআইজি মিজানুর রহমানকে অবৈধ সুবিধা দেওয়ার জন্য ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেন। মিজানুর রহমান সরকারি কর্মকর্তা হয়ে নিজের বিরুদ্ধে আনা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে রেহাই পেতে দুদকের পরিচালক এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দেন।

মিজানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের বিষয়টি দুদক অনুসন্ধান করার সিদ্ধান্ত নেয়। অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয় এনামুল বাছিরকে। অনুসন্ধান চলাকালে ২০১৯ সালের ৯ জুন বিভিন্ন গণমাধ্যমে খন্দকার এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন ডিআইজি মিজানুর রহমান, এমন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। আসামি ডিআইজি মিজানুর রহমান গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে ঘুষ দেওয়ার বিষয়টি জাতির সামনে স্বীকার করে নেন। তিনি তখন জানান, এনামুল বাছিরকে তিনি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন। বিষয়টি দুদকের নোটিশে এলে একটি বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির কাছে লিখিতভাবে খন্দকার এনামুল বাছির ঘুষের টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন।

অনুসন্ধান দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন, ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বক্তব্য গ্রহণ, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণ ও পারিপার্শ্বিক বিষয়াদি পর্যালোচনা করে। তাতে দেখা গেছে, গত বছরের ১৫ জানুয়ারি মিজানুর রহমান একটি বাজারের ব্যাগে করে কিছু বইসহ ২৫ লাখ টাকা খন্দকার এনামুল বাছিরকে দেওয়ার জন্য রাজধানীর রমনা পার্কে আসেন। সেখানে কথাবার্তা শেষে একসঙ্গে বেরিয়ে শাহজাহানপুর এলাকায় যান। এরপর খন্দকার এনামুল বাছির ২৫ লাখ টাকাসহ ব্যাগটি নিয়ে তার বাসার দিকে চলে যান।

একইভাবে ২৫ ফেব্রুয়ারি ডিআইজি মিজান একটি শপিং ব্যাগে করে ১৫ লাখ টাকা নিয়ে রমনা পার্কে যান। সেখানে আলাপ-আলোচনা শেষে দুজন শান্তিনগর এলাকায় চলে যান। শান্তিনগরে এনামুল বাছির ব্যাগটি নিয়ে চলে যান। দুদকের কাছে এ ঘটনার প্রযুক্তিগত প্রমাণের পাশাপাশি চাক্ষুষ সাক্ষীও রয়েছেন।