• ১১ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৮শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নতুন কারিকুলাম বাতিলের দাবিতে এবার কর্মসূচি দিলেন অভিভাবকরা

দখিনের সময়
প্রকাশিত নভেম্বর ১০, ২০২৩, ১৯:৩২ অপরাহ্ণ
নতুন কারিকুলাম বাতিলের দাবিতে এবার কর্মসূচি দিলেন অভিভাবকরা
সংবাদটি শেয়ার করুন...
দখিনের সময়ে ডেস্ক:
নতুন কারিকুলাম বাতিল, নম্বরভিত্তিক লিখিত পরীক্ষা চালু, নবম শ্রেণিতে বিভাগ বিভাজন রাখাসহ ৮ দফা দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থী অভিভাবক ফোরাম।শুক্রবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। এ সময় নতুন কারিকুলাম বাতিলের দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন অভিভাবকরা।
এর মধ্যে আগামী ২৪ নভেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অভিভাবকরা সমাবেশ করবেন। ১৪ নভেম্বর সকল স্কুলের সামনে অভিভাবকদের সমাবেশ ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হবে। রাজনৈতিক কর্মসূচি না থাকলে প্রত্যেক স্কুলের সামনে অভিভাবকরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন। এরপর সরকার নতুন কারিকুলাম বাতিল না করলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে অভিভাবকরা বলেন, ত্রিভুজ চিহ্ন বাতিল করে পূর্বের ন্যায় নম্বর ও গ্রেডভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতি করা হোক। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে নতুন এই কারিকুলামটি এ দেশের জন্য অনুপযুক্ত। নতুন এই কারিকুলাম সংস্কার করে অন্তত ৫০-৬০ নম্বরে দুই সাময়িক লিখিত পরীক্ষা পদ্ধতি চালু, নম্বর ও গ্রেড ভিত্তিক মূল্যায়ন করা হোক। প্রতি বছর প্রতি ক্লাসে রেজিস্ট্রেশন ও সনদ প্রদানের সিদ্ধান্ত বাতিল, স্কুল পিরিয়ডে সমস্ত প্রজেক্ট সম্পন্ন করা এবং সমস্ত ব্যবহারিক ব্যয় স্কুলকে বহন করতে হবে।
অভিভাবকরা বলেন, এই কারিকুলাম অনুযায়ী নবম শ্রেণিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ অনুযায়ী বিভাগ বা বিষয় বেছে নেওয়ার সুযোগ আর থাকছে না। পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান মিলিয়ে একটি বিজ্ঞান বই এবং উচ্চতর গণিত ও গণিত মিলিয়ে একটি গণিতে বই সবার পাঠের জন্য বানানো হয়েছে। ফলে বিজ্ঞানে আগ্রহী শিক্ষার্থীরা এখন আগের চেয়েও কম বিজ্ঞান ও গণিত শিখবে এবং আমাদের আশঙ্কা তারা উচ্চশিক্ষায় গিয়ে ব্যর্থ হবে।
তারা বলেন, এই কারিকুলামে সাময়িক পরীক্ষার মতো লিখিত পরীক্ষা নেই, রয়েছে প্রতিদিনের শেখার মূল্যায়ন এবং সামষ্টিক মূল্যায়নের নামে রয়েছে দলগত কাজ, প্রজেক্ট বা অ্যাসাইনমেন্ট। এগুলো কীভাবে করতে হবে তার কিছুই শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারছেন না, শিক্ষকও বুঝতে পারছেন না। এক-এক সময়ে এক-এক রকম নির্দেশনা আসছে। অপর্যাপ্ত শিক্ষক আর ঘিঞ্জি ক্লাসের মধ্যে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী নিয়ে ক্লাস বা মূল্যায়ন কিছুই সঠিকভাবে হচ্ছে না। ফলে অভিভাবকদেরও বাড়তি টাকা ও সময় ব্যয় হচ্ছে।
অভিভাবকরা বলেন, এখন ফলাফল নির্ধারণ হবে শুধু চিহ্ন পদ্ধতিতে, অর্থাৎ ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ ও বৃত্ত নির্দেশ করে। এগুলোতে শিক্ষার মানের কী উন্নতি হয় আমরা জানি না, বরং জটিলতা তৈরি করছে। এর ফলে অনেক স্কুলে অনৈতিক চর্চা ও দুর্নীতি বাড়ছে। শিক্ষার্থীরা হতাশ হচ্ছে এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছে।
তারা বলেন, এই কারিকুলাম ও পাঠ্যবইয়ে কী আছে তার চেয়ে বড় বিষয় হলো, কী হচ্ছে বা কী ঘটছে। এই কারিকুলামের ফলে শুধু শিক্ষার্থীরা নয়, তাদের সঙ্গে তাদের অভিভাবক এবং শিক্ষকরাও চরম নৈরাজ্যকর এক পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন। আমরা এ অবস্থা থেকে রেহাই চাই।