নেত্রকোনার শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী বালিশ মিষ্টি এবার ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) এটিকে দেশের ৫৮তম জিআই পণ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। আকৃতি ও তুলতুলে গঠনের জন্য পরিচিত এই মিষ্টির উৎপত্তি শহরের বারহাট্টা রোড এলাকায়, প্রায় ১২০ বছর আগে স্থানীয় মিষ্টান্ন প্রস্তুতকারক গয়ানাথ ঘোষের হাত ধরে। তার সৃষ্ট অনন্য স্বাদের কারণে “বালিশ মিষ্টি” শুধু নেত্রকোনা নয়, দেশজুড়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
সময় গড়ানোর সাথে সাথে মালিকানা পরিবর্তন হলেও মিষ্টির সুনাম ও স্বাদ অপরিবর্তিত থেকেছে। গয়ানাথ ঘোষের দোকান থেকেই শুরু হয়েছিল এই মিষ্টির যাত্রা, যা পরে শ্রী কৃষ্ণ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, আলেফ খান সুইটস, খান মিষ্টান্ন ভাণ্ডারসহ শহরের অন্যান্য দোকানেও ছড়িয়ে পড়ে। দুধ, ছানা ও চিনি দিয়ে তৈরি এই মিষ্টিতে ব্যবহৃত হয় বিশেষ প্রণালী, যা আজও কারিগররা গোপন রাখেন। বালিশ মিষ্টির দাম এখন আকারভেদে ৩০ টাকা থেকে ১,০০০ টাকার মধ্যে, অথচ শুরুতে এর মূল্য ছিল মাত্র ৫০ পয়সা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা জিআই স্বীকৃতিকে নেত্রকোনার জন্য এক গৌরবজনক অর্জন বলে মনে করছেন। জেলার মানুষ মনে করেন, নেত্রকোনার নাম উচ্চারিত হলেই বালিশ মিষ্টির কথা স্বতঃস্ফূর্তভাবে মনে আসে। জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, জিআই সনদ গ্রহণের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নেত্রকোনার মিষ্টির এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি শুধু ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখবেই না, বরং দেশের খাদ্য সংস্কৃতিকে বৈশ্বিক পরিসরে আরও সমৃদ্ধ করবে।