Home পুজিঁবাজার শেয়ারবাজারে নারী বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

শেয়ারবাজারে নারী বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

মোহাম্মদ রেজাউল করিম:
শেয়ারবাজারে পুরুষদের তুলনায় নারী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা এখনও সীমিত। তবে বিএসইসি’র নানা উৎসাহমূলক উদ্যোগে বর্তমানে নারী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নারী বিনিয়োগকারীদের আর্থিক জ্ঞান বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন নিয়মিতভাবে নারী বিনিয়োগকারীদের নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা করে আসছে।
দেশের বিভিন্ন জেলাতে বিএসইসি কর্তৃক আয়োজিত বিনিয়োগ শিক্ষা কর্মসূচিতে নারী বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ সেশনের আয়োজন থাকে। সেখানে সমাজে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন নারীগণ তাদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার অভিজ্ঞতা বিনিময় করে থাকেন এবং অন্য নারীদেরও উৎসাহ প্রদান করেন কিভাবে শেয়ারবাজারসহ অন্যান্য খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে সফলতা লাভ করা যায়।
বর্তমানে ঘরে বসেই অলনাইনে পছন্দের ব্রোকার হাউসের সাথে বিও অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। ডিএসই মোবাইল অ্যাপে যুক্ত বিনিয়োগকারীরা ঘরে বসেই মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বিনিয়োগ করতে পারেন। শেয়ারবাজারের বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য সহজ সেবা নিশ্চিতে দেশ এবং বিদেশে ডিজিটাল বুথ স্থাপনে উৎসাহ প্রদান করছে বিএসইসি। প্রতিটি বুথে নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথক সুবিধা নিশ্চিত করার নির্দেশনা রয়েছে। প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে বর্তমান শেয়ারবাজার সম্পূর্ণ রূপে নারীবান্ধব।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন নিজ প্রতিষ্ঠানসহ স্টক এক্সচেঞ্জ এবং বিভিন্ন আর্থিক মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানে নারীর কর্মসংস্থান বৃদ্ধির পাশাপাশি নিরাপদ ও নারীবান্ধব কর্মক্ষেত্র নিশ্চিত করার জন্য প্রতিনিয়ত নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে আসছে। ২০২২ সালের মার্চ মাসে বিএসইসির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মহিলা কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ড. রুমানা ইসলাম, যা বিএসইসি-তে নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে একটি বড় অগ্রগতি। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী বর্তমানে বিএসইসি-তে কর্মরত আছেন। বর্তমানে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদে নারী পরিচালক রয়েছেন। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ব্রোকার হাউস, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি-সহ বিভিন্ন বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
২০১৫ সালে জাতিসংঘে গৃহীত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে মোট ১৭টি লক্ষ্য স্থির করা হয় যার অন্যতম লিঙ্গ সমতা অর্জন ও নারী ক্ষমতায়ন। দেশের কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জনে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণের কোন বিকল্প নেই। কোনো দেশের বিনিয়োগ সক্ষমতার অন্যতম মাপকাঠি হলো সঞ্চয়-জিডিপি অনুপাত। ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে অন্যূন ৩০ শতাংশ অনুপাতে সঞ্চয়-জিডিপি অর্জন করে এসেছে, যার মূল রূপকার এদেশের নারীসমাজ। যে দেশের সঞ্চয়-জিডিপি অনুপাত যত বেশি, সে দেশের বিনিয়োগ সক্ষমতাও শক্তিশালী।
ঐতিহাসিকভাবে এদেশের নারীরা ধৈর্যশীল ও বাস্তবতাবাদী, যা শেয়ারবাজারে প্রকৃত বিনিয়োগকারীর মূল বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিত। বিএসইসি বিশ্বাস করে নারী বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণের মাধ্যমে কেবল লিঙ্গ সমতা অর্জন ও নারী ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হবে না, পাশাপাশি একটি অধিকতর সুসংহত, স্থিতিশীল ও দক্ষ শেয়ারবাজার অর্জিত হবে। এতদ্‌লক্ষ্যে বিএসইসি নারী বিনিয়োগকারীদের জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা প্রদান, নীতি সহায়তা প্রদান ও নারীবান্ধব শেয়ারবাজার প্রতিবেশ সৃষ্টিতে অব্যাহত সহায়তা প্রদানে বদ্ধ পরিকর।
মোহাম্মদ রেজাউল করিম, নির্বাহী পরিচালক ও মূখপাত্র (বিএসইসি)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

সুশাসন কি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে?

সাধারণভাবে বলা হয়, আমলাতন্ত্রের মাধ্যমেই দেশ শাসিত হচ্ছে। কিন্তু চলমান ধারার ফলাফল এবং সুদূরপ্রসারী প্রভাব কী? জরুরি প্রশ্ন, সুশাসন কি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে? স্বীকৃত বিষয়...

গুড় বেশি খেয়ে ফেলছেন? জেনে নিন কী হয়

দখিনের সময় ডেস্ক: গুড় দিয়ে তৈরির নানা পদের আয়োজন। পিঠা, পায়েস, সন্দেশ থাকে এই তালিকায়। গুড় স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবেই খাওয়া হয়। তবে কোনোকিছুই বেশি খাওয়া...

ঝগড়ার সময় যে কথাগুলো বলবেন না

দখিনের সময় ডেস্ক: রেগে গেলে আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এমন সব শব্দ ব্যবহার করি যেগুলো আসলে সম্পর্ক আরও খারাপের দিকে নিয়ে যায়। আবার ঝগড়ার সময় একটু...

আবেগ কমাতে চান?

দখিনের সময় ডেস্ক: আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখা মুশকিল। তবে এই গুণ থাকার অনেক সুবিধা রয়েছে। আপনার কমনীয়তা এবং আত্ম-নিয়ন্ত্রণের কারণে অন্যের কাছে প্রশংসিত হবেন। কঠিন সময়ে...

Recent Comments