করোনায় কষ্টে আছে যৌনকর্মীরা, টিকা নিয়েও সংশয়

দখিনের সময় ডেস্ক:

করোনার কারণে দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছেন দেশের যৌনকর্মীরা। সব মিলিয়ে খারাপ সময় যাচ্ছে তাদের। অর্থকষ্ট তো আছেই, সঙ্গে যোগ হয়েছে করোনার টিকা না পাওয়ার দুশ্চিন্তা। ২০১৫-১৬ সালের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে যৌনকর্মীর সংখ্যা এক লাখ দুই হাজার। তবে বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে এ সংখ্যা প্রায় পাঁচ লাখ বলে ধারণা করা হয়। এর বাইরে বিভিন্ন পরিচয়ে অভিযাত এলকার যৌনকর্মী।

২০২০ সালের ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্তের পর ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে লকডাউন শুরু হয়। ওই সময় থেকে এ পেশার কর্মীদের অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। দুর্ভোগ এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি তারা। লকডাউনের শুরুর দিকে কঠোর নিষেধাজ্ঞায় কয়েক মাস কোনো খদ্দের জোটেনি তাদের।

যৌনকর্মীদের সংগঠন সেক্স ওয়ার্কার্স নেটওয়ার্ক অব বাংলাদেশের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সালে সারাদেশে ২৫ হাজার ভাসমান এবং যৌনপল্লিতে ৭০ হাজার বৈধ কর্মী ছিলেন। ২০২০ সালে তাদের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৬৫ হাজারে। তবে ২০১৫-১৬ সালের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে যৌনকর্মীর সংখ্যা এক লাখ দুই হাজার। বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে এ সংখ্যা প্রায় পাঁচ লাখ বলে ধারণা করা হয়। সেভ দ্য চিলড্রেন’র হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪ সালে যৌনকর্মীদের ৫ শতাংশ হোটেলে, ৪১ শতাংশ ভাসমান ও ৫৪ শতাংশ যৌনপল্লিতে অবস্থান করছিলেন।

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া যৌনপল্লির অসহায় নারী ঐক্য সংঘের সভানেত্রী ঝুমুর বেগম বলেন, গত বছর সরকারের পক্ষ থেকে কিছু সাহায্য-সহযোগিতা দেওয়া হয়েছিল। এবারও পেয়েছি। কিন্তু তা দিয়ে তো আর চলে না। বর্তমানে কোনো খদ্দের নেই। করোনার জন্য কেউ আসেও না। পুলিশের পক্ষ থেকে তেমন বাধা নেই। এখানে আমরা প্রায় দেড় হাজার মানুষ বসবাস করি। সবাই আর্থিক সংকটে আছেন। পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকা মুশকিল হয়ে পড়েছে।

করোনার মধ্যে যৌনকর্মীদের সহায়তার বিষয়ে সমাজসেবা অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) সৈয়দ মো. নূরুল বাসির বলেন, ‘সামাজিকভাবে যাদের গ্রহণযোগ্যতা কম তাদের জন্য দুটি সেন্টার আছে। কিন্তু সেখানে তারা যেতে চান না। আমরা তো তাদের নিতে চাই। তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ভালো কাজে যুক্ত করতে চাই। তারা সেখানে (সেন্টার) এলে এতটুকুই সহযোগিতা করতে পারি আমরা। এর বাইরে আর কিছুই করার উপায় নেই।’