Home ফিচার ‘কনা মনার ছবি আকার স্কুল’ বিতরন করলো মাস্ক-সাবান-আম গাছ

‘কনা মনার ছবি আকার স্কুল’ বিতরন করলো মাস্ক-সাবান-আম গাছ

কানিজ নুসরাত ॥

করনা ভাইরাস। লকডাউন। বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গৃহবন্ধী শিশুরা। নেই পড়াশোনা। নেই খেলাধুলা। প্রায় দেড় বছর হতে চলল ‘কনা মনার ছবি আকার স্কুলের ক্লাস বন্ধ। ঝালকাঠীর নথুল্লাবাদ ইউনিয়নের লাটিমসার গ্রামে ২০১৩ সালে কনা মনার ছবি আকার স্কুলের যাত্রা শুরু হয়। সেই থেকে প্রতি শুক্রবার বিকেলে রং তুলি আর ক্যানভাসে ছবি আকা শেখানো হয়।

গত ২০২০ এর মার্চ মাস থেকে এই স্কুলটির ক্লাস বন্ধ করনা ভাইরাসের ভয়াল প্রকোপের জন্য। শিশুরা এখন আর ছবি আকতে আসেনা। কোভিড ১৯ একাডেমিক পড়াশোনা সহ মানসিক বিকাশের সুযোগগুলোও। প্রতি ঈদে স্কুলের বাচ্চাদের ঈদ উপহার হিসেবে দেয়া হয় নতুন পোষাক। এবারের ঈদে তার ব্যাতিক্রম।

পোষাকের বদলে দেয়া হল একটি করে আম গাছ, মাস্ক, হাত ধোয়ার সাবান এবং পানির পট। করনার সচেতনতা আর জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে এবারের এই উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান কনা মনার স্কুলে উদ্যোক্তা চিত্রশিল্পী সামিনা নাফিস। তিনি আরও গ্রামের শিশুরা এমনিতেই এরক ছবি আকা  বা গান শেখার সুযোগ পায়না। তার উপরে এখন আবার করনার প্রোকোপ। বাচ্চারা বিশেষ করে গ্রামের বাচ্চারা একাডেমিক পড়াশনায় পিছিয়ে পড়ছে তেমনি মানসিক বিকাশের এ ধরনের স্কুলগুলো থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। এই উদ্যোগগুলো গ্রামের শিশুদের উন্নত বিশ্বের জন্য এবং মানসিক বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন। কিন্তু এতদিন ধরে যদি স্কুলগুলো না খোলা হয় তাহলে আসলে শিশুরাও ঝড়ে পড়ে।

উল্লেখ্য ২০১৩ সালে চিত্রশিল্পী সামিনা নাফিসের আমেরিকা থেকে বেড়াতে আসা নাভিলের অনুরোধে বোনপোকে নিয়ে বেড়াতে আসেন নিজের বাবার বাড়ি লাটিমসার গ্রামে। জীবনানন্দের ধানসিড়ি নদীর তীর আর কামিনী রায়ের ঝালকাঠীর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বড় বড় খাল।

বড় উঠোনের বাড়ি। শহরের অতি নিকটের গ্রাম হওয়া সত্ত্বেও এখনো ছোয়া পায়নি শহরের। তাই এখনো খাল দিয়ে নৌকা চলে। এখনো গ্রামের অনেকের জীবিকা চলে এই খাল থেকে ধরা পড়া মাছ দিয়ে। আর তাই একজন চিত্রশিল্পী যাবেন এই গ্রামে ঘুরতে আর তার ক্যানভাসে তা ধরা পড়বেনা তা মানা সত্যিই কঠিন। তাইতো গ্রামের মেয়ে মিথিলা আর তার বোনের নজর কাড়ে সামিনা নাফিসের ক্যানভাসের দিকে। ওরা দেখতে পায় ওদের গাছ আর ওদের খালের ছবিই আকা হচ্ছে। তাই এক পলকে তাকিয়ে থাকে।আর সামিনা নাফিস তাকিয়ে থাকে ওদের আগ্রহের দিকে।

মনের ক্যানভাসে একে ফেলল ওদের নিয়ে শুরু করবে এবার গ্রামে ছবি আকার স্কুল। গ্রামের বাড়িতে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই ভাতিজি কনা মনার উপরে দায়িত্ব দিল স্কুল চালানোর। রং, তুলি, ক্যানভাসের যোগান দিল সামিনা নাফিস আর ক্লাসের দায়িত্ব নিল। সেই থেকেই স্কুলের নাম দেয়া হয়, ‘কনা মনার ছবি আকার স্কুল।’ প্রতি শুক্রবার বিকেলে বাচ্চার চলে আসে উঠোনে আর রং তুলি দিয়ে ক্যানভাসে আকে শিশুরা তাদের স্বাধীনতা।

1 COMMENT

  1. নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ।শুভকামনা রইলো কণা মনার ছবি আঁকার স্কুলের জন্য।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

গ্যাস্ট্রিক থেকে চিরতরে মুক্তি দিতে পারে এই ৫ মশলা

দখিনের সময় ডেস্ক: গ্যাস্ট্রিক মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী। সকাল শুরু হয় বুকজ্বালা, পেটের মধ্যে মোচড়, চোয়া ঢেঁকুর দিয়ে। সেই রেশ দিনভর থাকে। ওষুধ খেয়ে তার পর...

শীতে ঠোঁট ফাটার সমস্যা কীভাবে এড়াবেন?

দখিনের সময় ডেস্ক: শীতের সময় ঘনিয়ে আসছে। এখন থেকেই ঠোঁট শুকিয়ে চামড়ায় টান পড়ছে। মুখে হালকা ময়েশ্চারাইজার মাখতেই হচ্ছে। আর কয়েকদিন পর থেকে বেছে নিতে...

শীতে পায়ের গোড়ালি ফাটা থেকে মুক্তি পেতে ব্যবস্থা নিন এখনই

দখিনের সময় ডেস্ক: ঋতু পরিবর্তনের পালাক্রমে শীত আসন্ন, ক’দিন বাদেই দেখা মিলবে। প্রকৃতির সেই প্রভাব পড়ে মানুষের ওপরও। এই সময় ত্বক হয়ে ওঠে শুষ্ক, রুক্ষ...

প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানালেন সেরনিয়াবাত সাদিক

দখিনের সময় রিপোর্ট: জনপ্রিয়তা যাচাই করার সুযোগ করেদেবার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও আওযামী  লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও...

Recent Comments