চোর প্রবেশের গ্রিল কাটা জানলার অংশ পরীক্ষা করছেন ডিএমপি’র তেঁজগা জোনের এডিসি হাফিজ আল ফারুক। ছবি: দখিনের সময়
আলম রায়হান:
রাজধানীসহ সারাদেশেই চোরের উপদ্রব বেড়েছে। তবে এ বিষয়টি প্রচার পায় সাধারণত ঈদের সময়। বাকী সময়ে এ নিয়ে বিশেষ কেউ মাথা ঘামায় না। ফলে চোরেরা থেকে যাচ্ছে অধরাই। আর সাম্প্রতিক সময়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চোরেরা প্রবেশ করে জানালার গ্রিল কেটে।
আগে গ্রিলকাটা চুরির ঘটনার আধিক্য ছিলো নিচতলা ও দোতলায়, বড়জোর তিন তলা পর্যন্ত ছিলো চোরদের টার্গেট। কিন্তু এখন চোরেরা টার্গেট করে চারতলা থেকে উপরের দিকে। এ ক্ষেত্রে তাদের আচরণ ও দক্ষতা অনেকটাই স্পাইডার ম্যানের মতো।
চোরসহ নানান ধরনের অপরাধী এবং অনাহুতদের প্রতিরোধ করার জন্য সাধারণত ভবনের গেটে নানান ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে, সুরক্ষিত গেট নির্মাণ, শক্তপোক্ত গার্ডে নিয়োগ এবং সর্বোপরি সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গ্রিলকাটা চোর প্রতিরোধে এইসব ব্যবস্থা কোনই কাজে আসে না। যার নগ্ন উদাহরণ হয়ে আছে এবারের ঈদের রাতে রাজধানীর হাতিরঝিল থানাধীন মহানগর প্রজেক্ট-এর ডি-ব্লকের তিন নম্বর রোডের ৬০ নম্বর বাড়ির চতুর্থ তলায় সিনিয়র সাংবাদিক আলম রায়হানের ভাড়া ফ্লাটে চুরির ঘটনা। কাছাকাছি সময়ে বুধবার (৪ মে) রাজধানীর ধানমন্ডির একটি বাসায়ও জানালার গ্রিল কেটে চুরি হয়েছে।
তবে এবারের ঈদে রাজধানীতে কেবল এই দুটি চুরির ঘটনা ঘটেছে- তা মনে করার কোন কারণ নেই। কেননা, চুরির অভিযোগ সাধারণত থানা পর্যন্ত যায় না। আর ভুক্তভোগী চুরির অভিযোগ নিয়ে থানায় গেলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুলিশ তা রেকর্ড করতে অনীহা দেখিয়ে থাকে বলে চিরায়ত অভিযোগ রয়েছে।
দৃশ্যত, সাংবাদিক আলম রায়হানের ফ্লাটের মাস্টার বেডের জানালার মাত্র একটি গ্রিল কেটে চোর প্রবেশ করেছে। যার ব্যাসার্ধ হচ্ছে ৮ ইঞ্চি বাই ১৪ ইঞ্চি। এখান দিয়ে সাধারণ মানুষের প্রবেশ করার বিষয়টি প্রায় অবিশ্বাস্য। কিন্তু এখান দিয়েই চোর ঢুকেছে বলে দৃঢ়ভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এবং এই চোররা সংশ্লিষ্ট ভবন অথবা এলাকার কোন সিসি টিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েনি। এ পর্যন্ত এই তথ্যই দিচ্ছে পুলিশ। এমনকি সিআইডি’র বিশেষ টিম ফিঙ্গার প্রিন্ট উদ্ধারসহ নানান অনুসন্ধান চালিয়েও বিশেষ সুবিধা করতে পেরেছে বলে এখনো জানা যায়নি। বরং সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সিআইডি’র অনুন্ধানের ফলাফল অনেকটাই হতাশাজনক!
এদিকে অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চোরেরা কৌশল বদল করেছে। এখন আর নীচতলা বা দোতলা টার্গেট করা হয় না। এর কারণ দুইটি। এক, নীচ তলায় সাধারণত নিম্ন আয়ের মানুষ থাকেন। দুই, নীচ তলা ও দোতলায় বসবাসকারীরা থাকেন অধিকতর সতর্ক। এ ছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জানালায় ডাবল গ্রিল লাগানো হয়, বিশেষকরে নীচ তলায়। এ তুলনায় তিন থেকে উপরের দিকের ফ্লাটের চুরি করা সহজতর। এ ক্ষেত্রে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চোর ভবনের নীচ থেকে উপরে উঠে না। বরং অন্য ভবন থেকে এসে টার্গেট করা ভবনের উপর থেকে নীচের দিকে নেমে নির্ধারিত ফ্লাটে ঢোকে। আবার চলেও যায় উপরের দিক দিয়েই। অনেক সময়ই এ ক্ষেত্রে সহায়ক হয় চিলে কোঠায় বসবাসকারী স্বল্প আয়ের ভাড়াটিয়া অথবা ভবনের স্টাফরা। খবর দেবার ক্ষেত্রেও ভবনের স্টাফ ও কাজের বুয়ারা প্রধান ভূমিকা রাখে বলে সাধারণভাবে ধারণা করা হয়।
এ বিষয়ে জনৈক অপরাধ বিশেষজ্ঞ বলেছেন, চোরেরা এখন ডিজিটাল ও এনালগ দক্ষতার দিক থেকে বেশ এগিয়ে আছে। এখন তারা গ্লোভস ব্যবহার করে। ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফিঙ্গার প্রিন্ট পাওয়া যায় না। শুধু তাই নয়, চোরেরা প্রতিনিয়ত এনালক ও ডিজিটাল পদ্ধতির নানান দিক নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালায়। ফলে তাদের ডিজিটার দক্ষতা বেড়েছে অকল্পনীয়ভাবে। এদিকে এনালগ বিষয়ে চোরেরা অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে অধিকতর দক্ষতা অর্জন করেছে বলে বলছে বিভিন্ন সূত্র। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশের ভরসা হচ্ছে, প্রধানত সিসি টিভিসহ নানান ধরনের ডিজিটাল পদ্ধতি। বলতে গেলে সাধারণ অপরাধ অনুসন্ধানে পুলিশ মূলত সিসি ক্যামেরা নির্ভর হয়ে পড়েছে। ফলে বিগত দিনের এনালগ পদ্ধতিতে অনুসন্ধানের ক্ষমতা পুলিশ প্রায় হারিয়েই ফেলেছে বলে নানান ঘটনা পর্যালোচনায় ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে পুলিশের সোর্সও আগের মতো কার্যকর নয় বলে মনে করা হয়। বরং অনেক ক্ষেত্রে নানান ধরণের অপরাধীরাই সোর্স সেজে বসে থাকে। এরা মূলত থানার দালালী করে টাকা কামায়। আর সোর্স রক্ষার জন্য সরকারীভাবে যে বিপুল পরিমান অর্থ বরাদ্ধ রয়েছে তা আসলে কোন খাতে যায় তা নিয়েও নানান ধরণের প্রশ্ন রয়েছে।
গ্রিল কাটা জানলার অংশ পরীক্ষা করছেন সিআইডি কর্মকর্তা। ছবি দখিনের সময়
সামগ্রিক বাস্তবতায় বিভিন্ন ধরনের অপরাধী, বিশেষ করে গ্রিলকাটা চোরেরা অধরাই থেকে যাচ্ছে। এদিকে চুরির বিষয়ে মামলা না নেবার একটি প্রবনতা রয়েছে থানা পুলিশের। আবার প্রায় ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীরাও চুরির মামলা করার বিষয়ে বেশ অনীহা প্রকাশ করে থাকেন। এব্যাপারে অনেকেরই উচ্চার, ‘কী হবে মামলা করে!’
দখিনের সময় রিপোর্ট:
জনপ্রিয়তা যাচাই করার সুযোগ করেদেবার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও আওযামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও...
মশিউর রহমান তাসনিম:
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর বলেছেন, খালি মাঠে আর গোল দিতে দেব না। নেত্রী আমাদের...
দখিনের সময় ডেস্ক:
দলীয় সংসদ সদস্যদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে না। এ কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।...
দখিনের সময় ডেস্ক:
গ্যাস্ট্রিক মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী। সকাল শুরু হয় বুকজ্বালা, পেটের মধ্যে মোচড়, চোয়া ঢেঁকুর দিয়ে। সেই রেশ দিনভর থাকে। ওষুধ খেয়ে তার পর...
দখিনের সময় ডেস্ক:
ঋতু পরিবর্তনের পালাক্রমে শীত আসন্ন, ক’দিন বাদেই দেখা মিলবে। প্রকৃতির সেই প্রভাব পড়ে মানুষের ওপরও। এই সময় ত্বক হয়ে ওঠে শুষ্ক, রুক্ষ...
দখিনের সময় রিপোর্ট:
জনপ্রিয়তা যাচাই করার সুযোগ করেদেবার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও আওযামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও...
দারুণ ভাবে নিরীক্ষণ করেছ।