দেশ উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার মডেল হিসেবে এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু এরপরও মনে রাখতে হবে, ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী যে শক্তি ৭৫-এর ১৫ আগস্টের নারকীয় ঘটনা ঘটিয়েছে সেই অপশক্তির অপতৎপরতা কখনো থেমে থাকার নয়! দৈনিক দখিনের সময়-এর সঙ্গে দীর্ঘ স্মৃতিচারণে এভাবেই উদ্বেগ প্রকাশ করলেন সাংবাদিক, নাট্যজন ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাদামনের মানুষ সৈয়দ দুলাল। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারাটা জীবন মানুষের জন্য উৎসর্গ করলেন, সেই মানুষটিকে মেরে ফেলা হলো! এতোবড় নিষ্ঠুরতা প্রকৃতি গ্রহণ করেনি। অভিশাপে তারা শেষ হয়েগেছে।
সৈয়দ দুলাল বলেন, বৃষ্টির মতো জুতা বর্ষনে খুনী মোশতাকের জানাজার আয়োজন পন্ড হয়েছে। বরিশালে নূরুল ইসলাম মঞ্জুর মতো নেতা রাজনৈতিক, সামাজিক, পারিবারিক ও অর্থনৈতিকভাবে শেষ হয়ে গেছেন। কেউই প্রকৃতির বিচার থেকে রক্ষা পায়নি। এ অভিমত বিশিষ্ট নাট্যজন সৈয়দ দুলালের। তিনি মনে করেন, ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত এবং বেনিফিশিয়ারী সবাই অভিশপ্ত।
দৈনিক দখিনের সময়-এর সঙ্গে আলাপকালে এভাবেই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন দেশের বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব সৈয়দ দুলাল। উইকিপিডিয়ার তথ্য বলছে, সৈয়দ দুলাল বাংলাদেশে স্টুডিও থিয়েটারের প্রবর্তক। ২০১২ সালের ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ থিয়েটার তার তত্ত্বাবধানে ৮৫১টি নাটক মঞ্চস্থ করেছে। এছাড়া, তিনি শিশুতোষ শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান সিসিমপুর এ “গুণী ময়রা” চরিত্রে অভিনয়ের জন্য বিশেসভাবে পরিচিত।
কেবল নাট্যজন নন, সাংবাদিকতার সঙ্গেও সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন সৈয়দ দুলাল। ছিলেন বরিশাল থেকে প্রকাশিত সর্বোচ্চ মান ও প্রচার সংখ্যার শৗর্ষ স্থানীয় দৈনিক আজকের পরিবর্তন-এর প্রাতষ্ঠা সম্পাদক ও প্রকাশক। তিনি অনেক ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সকালে বরিশালে অনেক কিছু প্রত্যক্ষভাবে পর্যবেক্ষন করেছেন সৈয়দ দুলাল।
বৈরী পরিস্থিতিতে সৈয়দ দুলাল প্রথম দিকে বরিশালেই আত্মগোপনে থেকেছেন। পরে বরিশালের পরিস্থিতি অধিকতর বৈরী হয়ে গেলে সৈয়দ দুলাল ভারতে পালিয়ে যান। যাদবপুরে জ্ঞান ঘোষের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কয়েক মাস পর তিনি দেশে ফিরলেও বরিশালে ফেরেননি, ঢাকার কলাবাগানে এক আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নেন। জেলখানায় নিহত চার নেতার জানাজায় তিনি অংশ নিয়েছেন। পুরো দৃশ্যপট পর্যবেক্ষণ করেছেন। খালেদ মোশারফের মায়ের নেতৃত্বে মিছিল দেখার পর তার মনে হলো, ঢাকার পরিস্থিতি আবার ঘোলাটে হবে। এই ভেবে তিনি ঢাকা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। ৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় লঞ্চে উঠে ৭ নভেম্বর ভোরে বরিশাল পৌঁছান। সেদিন বিশ্ববাসী জানলো জেনালের খালেদ মোশারফসহ কয়েক মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা নিহত হবার নারকীয় ঘটনা।
পারিবারিকভাবে বরিশাল শহরের আদিবাসীন্দা সৈয়দ দুলালের সঙ্গে দৈনিক দখিনের সময়-এর কথা হয় নাট্য সংস্থা ”শব্দাবলী” কার্যালয়ে। এ সময় তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের আগে এবং পরের কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা তুলে ধরেন। সৈয়দ দুলাল বলেন, বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গতিশীল করার অসাধ্য সাধন করছেন। ৭৪-এর দুর্ভিক্ষে ভয়াবহ ধকল কাটিয়ে ওঠাও সম্ভব হয়েছে। সব মিলিয়ে জনমনে নতুন করে আস্থা তৈরী হয়েছে। এ ধারাবাহিকতায় ৭৫ সালে বাকশাল গঠন করা হলো। প্রথমে ধারণা করা হলো, এটি একদলীয় শাসন। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই পরিস্কার হলো, এটি আসলে এক দলের মধ্যে বহু দল ও নানান মতকে ধারণ করার একটি প্লাটফর্ম। তখন বাকশালে যোগদানের বিষয়টি ছিলো পত্রিকায় প্রতিদিনের প্রধান খবর। বরিশালের গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন আমিনুল হক চৌধুরী। সবাই তাঁর বাড়ির দিকে বিশেষদৃষ্টিতে তাকাতো, গভর্নরের বাড়ি! দৃশ্যত এভাবেই সবকিছু চলছিলো। কিন্তু সবকিছু ওলটপালট হয়ে গেলো ১৫ আগস্ট !
সেদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে সৈয়দ দুলাল বলেন, আমাদের এক ভাড়াটিয়া, হালিমের বাবা হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। সকাল বেলা আমাকে ঘুম থেকে তুললেন। উদভ্রান্তের মতো তার অবস্থা, হাতে রেডিও অন করা। সেই রেডিওতে মেজর ডালিমের সেই পৈশাচিক ঘোষণা শুনলাম। আমার হাত-পা কাঁপা শুরু করলো। বিশ্বাসই হচ্ছিলো না, বঙ্গবন্ধুকে মেরে ফেলেছে! সকাল ১০টার পর ভয়েভয়ে বাসা থেকে বের হলাম। আদম আলীর গলি হয়ে এগলি সে গলি দিয়ে সদর রোডের দিকে যেতে থাকলাম। বগুরা রোডে নূরুল ইসলাম মঞ্জুর বাড়ির সামনে দিয়ে যাবার সময় হোঁচট খেয়েছি। রাস্তা থেকেই টের পাচ্ছিলাম, বাড়ির ভিতর আনন্দ-উল্লাস চলছে। আমি আরো সতর্ক হলাম। সেখানে দাঁড়াতে আর সাহস হচ্ছিলো না। দ্রুত হেটে সদর রোডে গুলবাগ হোটেলের সামনে গেলাম। সেই হোটেলের উল্টো দিকে ছিলো শান্তিপুর শাল রিপেয়ারিং হাউজ। এখানে কিছু লোক দাড়ানো ছিলো। এদের মধ্যে সেসময়ে নুরুর ইসলাম মঞ্জুর মহুরী মান্নান এবং পেশকারবাড়ী ও প্যারা রোডের কতিপয় তরুণের তৎপরতা চোখে পরার মতো ছিলো। অল্প সময়ের মধ্যে একটি ট্রাক এলো। ট্রাকে অনেক লোক। তারা সবাই উল্লাস করছে, নেতৃত্বে আ স ম ফিরোজ। সে বঙ্গবন্ধুর ছবি নামিয়ে ফেললো। প্রকাশ্যে অবমাননা করলো। এ সময় এক নেতা বক্তৃতায় সবাইকে শান্ত থাকার আহবান জানিয়ে বললেন, চিন্তার কিছু নেই! এখনো আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায়।
সৈয়দ দুলাল বলেন, খুনীচক্রের এই উল্লাসের বিপরিত অবস্থানে ফকিরবাড়ী রোডের মুখে দেখেছি একটি সাইকেলে নিয়ে খান আলতাফ হোসের ভুলু দাঁড়ানো। তার সঙ্গে ডা. পিজুসসহ আরো কয়েকজন। তাঁরা প্রতিবাদ মিছিল করার উদ্যোগ নিচ্ছিলেন বলে মনে হলো। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি, আমি যতটুকু জানি। পুরো ঘটনায় আমি হতভম্ভ হয়ে গেলাম। অল্প সময়ের মধ্যেই আমি সদর রোড থেকে হাটখোলার দিকে রওনা করি। সেখানে এক বাসায় উঠি। এবং আত্মগোপন করার মতো সেখানেই কয়েকদিন অবস্থান করি। এরপর ভারতে পালিয়ে যাই।
সে সময় বরিশালে জাসদের ভূমিকার প্রসঙ্গে সৈয়দ দুলাল বলেন, বরিশালে জাসদ খুনীচক্রের সঙ্গে তাল মিলায়নি। সে সময় বরিশালে জাসদের প্রধান নেতা ছিলেন এম এ বারেক, ওবায়দুর রহমান মোস্তফা ও জেড আই খান পান্না। ১৫ আগস্ট সকালে আ স ম ফিরোজরা যখন গুলবাগ হোটেলের সামনে উল্লাস করে তখন বারেক ভাই হোটেলেই ছিলেন। তিনি নীচে নামেননি।
কেবল ১৫ আগস্টের পূর্বাপর ঘটনাবলী নয়, রাজনীতির সূক্ষ বিষয়েও রয়েছে সাংবাদিক সৈয়দ দুলালের মৌলিক বিশ্লেষণ। রাজনীতির পালাবদলের উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে বরিশাল সদর আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন নুরুল ইসলাম মঞ্জু। বিরোধী দলীয় জোটের প্রার্থী ছিলেন রাশেদ খান মেনন। এ নির্বাচনে তার বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগের অভিযোগও ছিলো। ভোটের দিন শহরের নুরিয়া স্কুল কেন্দ্র থেকে রাশেদ খান মেননকে বের করে দিয়েছিলেন জালাল সর্দার। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম সংসদ নির্বাচন, এরপরও আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীর কাছে রাশেদ খান মেনন হেরেছেন অল্প ভোটের ব্যবধানে। অথচ এই রাশেদ খান মেননই পরের, অর্থাৎ ৭৯-এর সংসদ নির্বাচনে জামানত হারিয়েছেন, একই আসনে। কারণ, এ নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তির নিজস্ব প্রার্থী ছিলেন আবদুর রহমান বিশ্বাস। এ নির্বাচনের ফলাফলে অওয়ামী লীগ প্রার্থী ছিলেন দ্বিতীয় অবস্থানে। তথন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ছিলেন এ্যাড. হেমায়েত উদ্দিন আহমেদ।
সৈয়দ দুলাল মনে করেন, ৭১-এর পরজিত স্বাধীনতা বিরোধী যে শক্তি ১৫ আগস্টের নারকীয় হত্যাকান্ডের মধ্যদিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করেছে তারা ৭৯ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকাশ্য রাজনৈতিক প্লাটফর্মে একত্রিত হয়েছে। আবার একই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৭৫-এর ধকল কাটতে শুরু করে আওয়ামী লীগের। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ আবার রাজনৈতিক ট্রাকে শক্ত অবস্থান করে নেয়। এর পর বহু বছরের লাগাতার আন্দোলন-সংগ্রাম এবং নির্বাচনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ধাপেধাপে অগ্রসর হয়েছে আওয়ামী লীগ। ২১ বছর নানান ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। পরের নির্বাচনে ষড়যন্ত্র এবং অপকৌশলে আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতার বাইরে ঠেলে দেয়া হয়। জামায়াত-বিএনপি জোট সরকারের সময়ে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আবার আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করার অপচেষ্টা হয়েছে। সেদিন শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও নিহত হন ২৪ জন। এর আগে পরেও শেখ হাসিনাকে বহুবার হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে।
নানান ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী আবার বিজয়ী হয়। এরপর পরবর্তী দুটি নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে একটানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। দেশ উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার মডেল হিসেবে এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু এরপরও মনে রাখতে হবে, ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী যে শক্তি ৭৫-এর ১৫ আগস্টেওর নারকীয় ঘটনা ঘটিয়েছে সেই অপশক্তির অপতৎপরতা কখনো থেমে থাকার নয়! দৈনিক দখিনের সময়-এর সঙ্গে দীর্ঘ স্মৃতিচারণে এভাবেই উদ্বেগ প্রকাশ করলেন সাংবাদিক, নাট্যজন ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাদামনের মানুষ সৈয়দ দুলাল।
দখিনের সময় ডেস্ক:
সৈয়দ আলী আকনে (১০৪) নামের এক শতবর্ষী বৃদ্ধের আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে বিষপানে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। সৈয়দ আলী পিরোজপুরের ইন্দুরকানী...
দখিনের সময় ডেস্ক:
নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছেন, নির্বাচন আয়োজন করতে জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা দরকার। সবার সহযোগিতা...
দখিনের সময় ডেস্ক:
বিশিষ্ট কলামিস্ট, অনলাইন এক্টিভিস্ট ও মানবাধিকারকর্মী মিনা ফারাহকে ফোন করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। এ সময় তিনি বাংলাদেশের কঠিন...
দখিনের সময় ডেস্ক:
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি (ইউসিবি) সম্প্রতি পঞ্চগড় জেলার চা খামারিদের জন্য একটি কর্মশালা আয়োজন করেছে। চা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে আর্থিক...
দখিনের সময় ডেস্ক:
সৈয়দ আলী আকনে (১০৪) নামের এক শতবর্ষী বৃদ্ধের আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে বিষপানে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। সৈয়দ আলী পিরোজপুরের ইন্দুরকানী...
দখিনের সময় ডেস্ক:
নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছেন, নির্বাচন আয়োজন করতে জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা দরকার। সবার সহযোগিতা...
We use cookies on our website to give you the most relevant experience by remembering your preferences and repeat visits. By clicking “Accept”, you consent to the use of ALL the cookies.
This website uses cookies to improve your experience while you navigate through the website. Out of these, the cookies that are categorized as necessary are stored on your browser as they are essential for the working of basic functionalities of the website. We also use third-party cookies that help us analyze and understand how you use this website. These cookies will be stored in your browser only with your consent. You also have the option to opt-out of these cookies. But opting out of some of these cookies may affect your browsing experience.
Necessary cookies are absolutely essential for the website to function properly. These cookies ensure basic functionalities and security features of the website, anonymously.
Cookie
Duration
Description
cookielawinfo-checbox-analytics
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Analytics".
cookielawinfo-checbox-functional
11 months
The cookie is set by GDPR cookie consent to record the user consent for the cookies in the category "Functional".
cookielawinfo-checbox-others
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Other.
cookielawinfo-checkbox-necessary
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookies is used to store the user consent for the cookies in the category "Necessary".
cookielawinfo-checkbox-performance
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Performance".
viewed_cookie_policy
11 months
The cookie is set by the GDPR Cookie Consent plugin and is used to store whether or not user has consented to the use of cookies. It does not store any personal data.
Functional cookies help to perform certain functionalities like sharing the content of the website on social media platforms, collect feedbacks, and other third-party features.
Performance cookies are used to understand and analyze the key performance indexes of the website which helps in delivering a better user experience for the visitors.
Analytical cookies are used to understand how visitors interact with the website. These cookies help provide information on metrics the number of visitors, bounce rate, traffic source, etc.
Advertisement cookies are used to provide visitors with relevant ads and marketing campaigns. These cookies track visitors across websites and collect information to provide customized ads.