Home শীর্ষ খবর বিএডিসির কেলেংকারী: ৩০ ফুট খালে ১২ ফুট স্লুইজ গেট

বিএডিসির কেলেংকারী: ৩০ ফুট খালে ১২ ফুট স্লুইজ গেট

আলম রায়হান:

পানির সর্বনাশ করার ক্ষেত্রে অন্যান্য সংস্থাকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)। কেবল পানির সর্বনাশ নয়, বিএডিসির কর্মকান্ড কেলেংকারীর পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। চওড়া খালে ছোটছোট কালভার্ট ও অপ্রয়োজনীয় স্লুইজ গেট নির্মাণ করেই চলেছে বিএডিসি। ফলে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হয়ে খরস্রোতা খালগুলো পরিণত হচ্ছে ড্রেনে।

কৃষি ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের নামে দৈনন্দিন কাজকর্ম এবং  কৃষিকাজে পানির সংকট সৃষ্টি করে চলেছে বিএডিসি। এ সর্বনাশা কাজ সারাদেশেই চলছে। এমনকি কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব নাসিরুজ্জামের বাড়ি সংলগ্ন খালেও এমন কেলেংকারীর ঘটনা মূর্তমান হয়ে আছে। অপরিকল্পিত এই কাজের কারণে পুরো এলাকা নদীর পানি থেকে বঞ্চিত হবার পাশাপাশি জনভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।

ঝালকাঠী জেলার নলছিটি উপজেলার মোল্লার হাট উইনিয়নের বুক চিড়ে বিষখালী নদীর শাখা খরস্রোতা চান্দা নদী প্রবাহমান। এই নদীর সঙ্গে সংযুক্ত পোয়াবাড়ী খাল। ৭নং রাজবাড়িয়া ওয়ার্ডের এই খালটি ৩০ ফুটের বেশী চওড়া। কিন্তু নদী সংলগ্ন এই খালটির মুখে নির্মাণ করা হচ্ছে তিন গেটের মাত্র ১২ ফুট চওড়া স্লুইজ গেট। এ ব্যাপারে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে ঠিকাদার শফিকুল ইসলাম চুন্নু বলেন, নকশা অনুসারেই কাজ হচ্ছে, এর কোন ব্যত্যয় হয়নি।

এ স্লইস গেটটি নির্মানাধীন রয়েছে প্রায় দুই বছর ধরে। ফলে এতো দিনের খরস্রোতা পোয়াবাড়ী খালটি প্রায় মরে গেছে। এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখাগেছে, এ নির্মাণ কাজ গত প্রায় তিন মাস বন্ধ রয়েছে।

নদী থেকে একটু ভিতরের দিকে একই খালে আগেও বিএডিসি একটি স্লুইজ গেট নির্মাণ করেছিলো। কিন্তু সেটি পানির তোড়ে ভেসে গেছে। এরপর প্রায় দেড় কোটি টাকা বরাদ্ধ দিয়ে আরও একটি স্লুইজ গেট নির্মানের উদ্যোগ নেয়া হয়। এটি নির্মাণ করা হচ্ছে নদী ঘেষে খালের মুখে। কিন্তু তাও ঝুলে আছে। ফলে খালের পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাবার পাশাপাশি রাস্তায় চলাচলে সৃষ্টি হয়েছে অবর্ণনীয় ভোগান্তি। যদিও জনভোগান্তি প্রসঙ্গে ওয়ার্ড মেম্বার মো: মিন্টু শিকদার বলেন, উন্নয়নের জন্য একটু ভোগান্তি তো মেনে নিতেই হবে। কিন্তু এলাকার সাধারণ মানুষ বলছেন ভিন্ন কথা। তারা নানান অভিযোগ করছেন। এলাকাবাসীর এসব অভিযোগ ধারণ করে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এডভোকেড মাহবুবুর রহমান সেন্টু জনভোগান্তিতে তার অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন দৈনিক দখিনের সময়-এর সাথে আলাপকালে।

নির্মান শ্রমিকদের সাথে কথা বলছেন দৈনিক দখিনের সময় প্রতিনিধি।                                                          ছবি: খালিদ সাইফুল্লাহ

উল্লেখিত স্লুইজ গেট নির্মাণ করা হচ্ছে বিএডিসির ডাবল লিফটিং সেচ প্রকল্পের আওতায়। এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ৩০ জুন। প্রকল্পের মেয়াদের সাথে মিল রেখে উল্লেখিত স্লুইজ গেটের নির্মাণ কাজও সমাপ্ত হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে কাগজ পত্রে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। এ ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক সুলতান আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। এমনকি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করা থেকে কৌশলে বিরত থাকেন সেচ বিভাগের এমডি জিয়াউল হক। তিনি এর আগে একই বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে নানান অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

চীনের সবচেয়ে ধনী টিকটকের প্রতিষ্ঠাতা ঝাং ইমিং

দখিনের সময় ডেস্ক: টিকটকের মূল প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের প্রতিষ্ঠাতা ঝাং ইমিং (৪১) চীনের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির তালিকার শীর্ষ স্থান দখল করেছেন। বর্তমানে তার ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ...

প্রতিদিন ডিম খাওয়া কি হার্টের জন্য ভালো?

দখিনের সময় ডেস্ক: প্রোটিন সমৃদ্ধ ডিমকে সবচেয়ে উপকারী এবং পুষ্টিকর খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি যুগ যুগ ধরে মানুষের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় যুক্ত রয়েছে। ডিম...

মানবাধিকার কর্মী মিনা ফারাহকে জামায়াত আমিরের ফোন

দখিনের সময় ডেস্ক: বিশিষ্ট কলামিস্ট, অনলাইন এক্টিভিস্ট ও মানবাধিকারকর্মী মিনা ফারাহকে ফোন করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। এ সময় তিনি বাংলাদেশের কঠিন...

পঞ্চগড়ে চা খামারিদের ক্ষমতায়নে ইউসিবির কর্মশালা

দখিনের সময় ডেস্ক: ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি (ইউসিবি) সম্প্রতি পঞ্চগড় জেলার চা খামারিদের জন্য একটি কর্মশালা আয়োজন করেছে। চা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে আর্থিক...

Recent Comments