Home আন্তর্জাতিক কানাডায় গরমে পুড়ে শেষ হয়ে গেল একটি গ্রাম

কানাডায় গরমে পুড়ে শেষ হয়ে গেল একটি গ্রাম

দখিনের সময় ডেস্ক : 

কানাডায় এ বছরের জুন মাসের শেষের দিকে প্রচণ্ড গরমের কারণে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার ছোট্ট একটি গ্রাম উঠে এসেছিল আন্তর্জাতিক সংবাদ শিরোনামে। সেসময় এমন গরম পড়েছিল যা কানাডার ইতিহাসে কখনো হয়নি। লিটন নামের ওই গ্রামে তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ৪৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। খবর বিবিসির।

মেরিয়েল বারবার নামে সেখানকার এক বাসিন্দা বলেন, এতো গরম যে ভাষায় বোঝানোর মতো নয়। আমি ভোর ৪টায় উঠে যাচ্ছিলাম বাইরের কাজগুলো সেরে ফেলার জন্য। কারণ এতো গরম যে দুপুর বেলায় কাজ করার কোনো উপায় ছিল না।

গ্রামের অন্য অধিবাসীরাও সুস্থ থাকার জন্য ঘরের ভেতরেই অবস্থান করছিল। রাস্তাঘাট ছিল নীরব। এই গ্রামে বাস করতেন ২৫০ জন লোক। আশেপাশের এলাকায় বাস করতেন আরও প্রায় এক হাজারের মতো আদিবাসী।  আগুনে পুড়ে পুরো গ্রামটিই ছাই হয়ে গেছে।

অপূর্ব প্রাকৃতিক নিসর্গের এই এলাকাটি ভ্যানকুভার থেকে ১৬২ মাইল উত্তর-পূর্বে। সেখানে থম্পসন এবং ফ্রেসার – এই দুটো নদী একত্রে মিলিত হয়েছে।

বাসিন্দারা বলছেন, এই গ্রামের লোকেরা একত্রে মিলেমিশে বসবাস করতো। তাদের মধ্যে খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। এটা এমন এক জায়গা, যেখানে প্রত্যেকেই প্রত্যেককে মোটামুটি চিনতো।

বারবার প্রায় এক দশক আগে এই এলাকায় এসে বসবাস করতে শুরু করেন। এখানকার লোকজনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে তার খুব একটা দেরি হয়নি। তিনি বলেন, ৩০ জুন তীব্র গরম পড়েছিল, সেই সঙ্গে ছিল ভয়াবহ রকমের বাতাস।  সারা দিনের কাজের শেষে তিনি যখন বাড়িতে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, সেসময় তিনি শহরের এক জায়গায় কিছু কালো ধোঁয়া ওপরের দিকে উঠতে দেখেন।

গ্রীষ্মকালে ব্রিটিশ কলাম্বিয়াতে আগুন লাগার ঘটনা সাধারণ একটি বিষয়- এরকমটাই মনে মনে ভাবছিলেন মিস বারবার। তিনি ধরে নিয়েছিলেন খুব শিগগির এই আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হবে।

গাড়ি রেখে দিয়ে তিনি যখন শহরের দিকে যাচ্ছিলেন, তিনি দেখলেন দমকল বাহিনীর একটি গাড়ি সাইরেন বাজিয়ে, ফ্ল্যাশিং লাইট জ্বালিয়ে পাশ দিয়ে ছুটে গেল।

আগুন নেভানোর গাড়িটি রাস্তায় আড়াআড়ি করে রাখা হল। ফলে বারবারের শহরে যাওয়ার রাস্তাটি বন্ধ হয়ে গেল। অগ্নিনির্বাপক দলের প্রধান তাকে সতর্ক করে দিয়ে জানালেন যে লিটনে আগুন লেগেছে।

বারবার বর্তমানে তার ভ্যানগাড়িতে বসবাস করছেন। তার পুড়ে যাওয়া বাড়ি থেকে কিছু কিছু জিনিস উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।

এসবের মধ্যে রয়েছে একটি ভাস্কর্য, তার গহনার বক্স। এছাড়া বাকি সবকিছুই পুড়ে ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি বলেন, আমার একটা সন্তান ছিল। সে মারা গেছে। তার সব স্মৃতি আমি সংরক্ষণ করে রেখেছিলাম। আমার মা এবং অন্যদেরও কিছু জিনিস ছিল।

আমার ও অন্যদের কিছু শিল্পকর্ম, যা আমি গত কয়েক বছর ধরে সংগ্রহ করেছি, সেগুলো সবই পুড়ে গেছে। এরকম তীব্র শোকের পরেও তিনিসহ গ্রামের অন্য বাসিন্দারা বলছেন, তারা এখন তাদের গ্রামের ভবিষ্যতের দিকেই নজর দিচ্ছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

কোথাও সরকারিভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়নি, দেশকে অশান্ত করার ষড়যন্ত্র চলছে

দখিনের সময় ডেস্ক: সরকারিভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়নি জানিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, দেশের পাহাড়ি এলাকাতেও বহুমুখী ষড়যন্ত্র থেমে...

দ্রুত প্রণয়ন করা হবে বিচারক নিয়োগ নীতিমালা: প্রধান বিচারপতি

দখিনের সময় ডেস্ক: প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগে নীতিমালা দ্রুত প্রণয়ন করা হবে। একই সঙ্গে সুনির্দিষ্ট আইনও করা হবে বলে...

গায়েবি মামলার কালচার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে: আসিফ নজরুল

দখিনের সময় ডেস্ক: অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বিচার বিভাগ ব্যবহার করে মানুষকে হয়রানি করার সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। বিগত...

ইসরায়েলে মশাবাহিত ‘ওয়েস্ট নাইল’ ভাইরাসে নিহত ৭০, আক্রান্ত ৯১৩

দখিনের সময় ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যের দু’টি দেশ লেবানন ও ফিলিস্তিনে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ইসরায়েল। গাজায় যুদ্ধ শেষ করতে না করতেই, দেশটি নতুনভাবে লেবাননে যুদ্ধ শুরু করেছে। এদিকে, মশাবাহিত...

Recent Comments