Home শীর্ষ খবর লঞ্চটিতে ছিল না অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, বিস্ফোরণের আগে গরম হয়েছে ডেক

লঞ্চটিতে ছিল না অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, বিস্ফোরণের আগে গরম হয়েছে ডেক

দখিনের সময় ডেস্ক:

ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হওয়া অভিযান-১০ লঞ্চটি ধারণক্ষমতার বেশি যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে বরগুনার উদ্দেশে রওনা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। লঞ্চে অগ্নিনির্বাপণের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। অগ্নিনির্বাপণের জন্য গ্যাস সিলিন্ডার থাকলেও সেগুলো ছিল বিকল।

লঞ্চ থেকে প্রাণে বেঁচে ফিরে আসা যাত্রী সাদিক জানান, লঞ্চটি ঢাকা থেকে ছাড়ার পরপরই লঞ্চের ফ্লোর গরম হতে থাকে। এ সময় লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি যাত্রীরা জানালেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বরং যাত্রীদের নিবৃত্ত করে কম্বল বিছিয়ে দিয়েছিল ফ্লোরে। এরপর ক্রমান্বয়ে গরম হতে থাকলেও শীতের তীব্রতার কারণে তা টের পায়নি যাত্রীরা। তবে শুরুতে যখন লঞ্চটি গরম হচ্ছিল তখন ব্যবস্থা নিলে হয়তো এত প্রাণহানি দেখতে হতো না।

সূত্র জানায়, ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে আগুন লাগা এমভি অভিযান-১০ লঞ্চটি বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে ছাড়ার সময় ৩১০ যাত্রীর ঘোষণা দেয়। তবে এর দ্বিগুণেরও বেশি যাত্রী ছিল লঞ্চটিতে। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩৯ মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ থেকে জানানো হয় ৩১০ যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে বরগুনা যাচ্ছিল লঞ্চটি। আর যাত্রীরা বলছেন প্রায় ১ হাজারের মতো যাত্রী ছিল লঞ্চে। কর্তৃপক্ষের দাবি লঞ্চটির ধারণক্ষমতা ৯০০ জন।

আরেক যাত্রী মোশারফ বলেন, আমি ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে বরগুনা যাচ্ছিলাম। লঞ্চে দেরিতে আসার কারণে কেবিন না পাওয়ায় নিচ তলার ডেকে অবস্থান নিয়েছিলাম। যখন গরম হতে শুরু করে তখন সেখান থেকে সরে গিয়ে লঞ্চের সম্মুখভাগে যাই। এরপর মাঝখানে একবার ঘুমিয়ে পড়ি। হঠাৎ মানুষের চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায়। এরপর শুনতে পাই বিস্ফোরণে লঞ্চে আগুন লেগেছে তাৎক্ষণিক লাফিয়ে নদীতে পড়ে তীরে সাঁতরে উঠি। এরপর স্থানীয়দের মাধ্যমে স্বজনদের খবর দিলে তারা গিয়ে আমাকে নিয়ে আসে।

জানা গেছে, নৌপথে দক্ষিণাঞ্চলের ঢাকা-বরগুনা রুটের যাত্রী পরিবহনে বছর দু-এক আগে চালু হয় বিলাসবহুল এমভি অভিযান-১০ লঞ্চ। বরিশালসহ, বরগুনার, বেতাগী কাঁকচিড়া ঘাটে যাত্রী আনা-নেওয়া করত নৌযানটি। মাত্র দিন ১৫ আগে মেরামতের কাজ হয় জলযানটিতে। এরপর চারটি ট্রিপ সম্পন্ন করে ৯০০ যাত্রী ধারণক্ষমতার লঞ্চটি। অভিযান-১০ লঞ্চে চলাচলকারী বেশির ভাগ যাত্রী বরগুনা জেলা ও এর আশপাশের এলাকার। আগুনের ঘটনায় হতাহতের বেশির ভাগই বরগুনা জেলার বলে জানান স্বজনরা।

এ বিষয়ে লঞ্চ মালিক হাম জালালের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। বরগুনা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক মো. হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, লঞ্চটি এর আগেও একবার চরে উঠিয়ে দিয়েছিল। আমার মনে হয় লঞ্চ কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এতগুলো নিরীহ প্রাণ একসঙ্গে মারা গেল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

বিআরইউ’র সভাপতি আনিসুর, সম্পাদক খালিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির (বিআরইউ) সভাপতি আনিসুর রহমান খান স্বপন (নিউ এইজ / ঢাকা ট্রিবিউন) আর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন খালিদ সাইফুল্লাহ (নয়া...

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন গণপিটুনিতে নিহত তোফাজ্জল

দখিনের সময় ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের গণপিটুনিতে নিহত মাসুদ কামাল তোফাজ্জলের জানাজা শেষে বরগুনার পাথরঘাটায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে...

অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর গ্রেফতার

দখিনের সময় ডেস্ক: চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশ পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমান গ্রেফতার হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তাকে আটক করা হয়। নিউমার্কেট থানার...

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ

দখিনের সময় ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম...

Recent Comments