Home বরিশাল অপরাধীদের টার্গেট বরিশালের প্রধান ডাকঘর

অপরাধীদের টার্গেট বরিশালের প্রধান ডাকঘর

আলম রায়হান:
বরিশালের প্রধান ডাকঘর হয়ে উঠেছে ছিনতাইকারী, পকেটমার ও ‘কাটা পার্টির’ প্রধান টার্গেট। এ অপরাধীদের চক্করে পড়ে মানুষ বহু কষ্টের সঞ্চয় হারাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। জনসাধারণের অসেচেতনতা এবং অপরাধীদের চাতুর্যের কারণে সমস্যা প্রকট হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। এ ব্যাপারে আইন শৃংখলা বাহিনীর গাফিলতিও দায়ী বলে মনে করেন কেউ কেউ।
নগরীর ব্যস্ততম এলাকায় অবস্থিত বরিশালের প্রধান ডাকঘর। এর ঠিক উল্টো দিকে জেলা পুলিশ সুপারের সাবেক কার্যালয়। এখনও এই ভবনে পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তারা অফিস করেন। দক্ষিণ দিকে নিকটেই জেলা প্রশাসনের কার্যালয়। কিন্তু গুরুত্বপূর্ন এই এলকায় নেই প্রয়োজনীয় সিসি ক্যামেরা। বিষয়টি গ্রহনযোগ্য নয় বলে মনে করেন অনেকেই।
সামগ্রিক বাস্তবতায় প্রাচীনকাল থেকেই স্বল্প আয়ের সঞ্চয়ী মানুষের প্রধান ভরসা হচ্ছে ডাকঘর। জনআস্থার কারণে ডাকঘরে অর্থ সঞ্চয়ে সাধারণ মানুষের প্রধান আস্থার স্থল। এর ব্যতিক্রম নয় বরিশালের প্রধান ডাকঘরও।

এ কারণে সারা বছরই অর্থ লেনদেনের চাপ থাকে ঢাকঘরে। এদিকে সঞ্চয় গ্রহণের পদ্ধতিগত পরিবর্তনের কারণে সম্প্রতি এই চাপ অনেক বেড়েছে। নতুন গৃহিত পদ্ধতির কারণে এখন আর পোস্ট অফিসে সরাসরি টাকা গ্রহণ করা হচ্ছে না। পোস্ট অফিসে টাকা জমা দিতে হবে অনলাইনে। এবং লেনদেন হবে ব্যাংকের মাধ্যমে। এদিকে আগের কোন আমনতের মেয়াদ পূর্তি হলে তা গ্রাহককে তুলে নিতে হবে। পুনরায় বিনিয়োগ করতে হলে অনলাইন পদ্ধতি আসতে হবে। এবং টাকা জমা দিতে হবে ব্যাংকে। ফলে টাকা তোলার জন্য প্রতি কার্যদিবসে ডাকঘরে প্রচন্ড ভিড় হচ্ছে, হয় জটলা। আর এর সুযোগ নেয় অপরাধী চক্র।

ডাকঘরের অভ্যন্তরে উপচেপড়া ভিড়। ছবি: দখিনের সময়

ডাকঘরের অভ্যন্তরের জটলার মধ্যে এক শ্রেনীর পকেটমার সক্রিয় থাকে। ফলে প্রতিদিনই অসংখ্য পকেট মারের ঘটনা ঘটছে। শুধু তাই নয় পোস্ট অফিস থেকে টাকা তুলে বাসায় বা ব্যাংকে যাবার সময়ও অসংখ্য মানুষ টাকা হারাচ্ছেন। কারো টাকা নেয় পকেটমার, ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন অনেকে, কেউ পড়েন ‘কাটা পার্টির’ কবলে। পকেটমার, ছিনতাইকারী বা ‘কাটা পার্টি’ টাকা নেবার সময় কয়েক সেকেন্ডের কৃত্রিম জটলা সৃষ্টি করে। অপরাধীরা এতোটাই দক্ষ যে কোন অপারেশনেই ১৫ সেকেন্ডর বেশি সময় লাগে না। এ ক্ষেত্রে কাটা পার্টির দক্ষতা সবচেয়ে বেশি বলে জানা গেছে। কাটা পার্টি চক্রের একজন টাকার ব্যাগে ব্লেড বা ধারালো কিছু দিয়ে একটি পোস দিয়ে চলে যায়। তার পেছনে থাকা ব্যক্তিটি টাকা বের করে নেয়। এ কাজ এতোটা নিপুনভাবে করা হয় যে, ভুক্তভোগী টের পান না।
ডাকঘরের ভিতরে বড় করে একাধিক স্থানে লাল হরফে সাবধানবাণী দেয়া আছে। মাইকে লাগাতারভাবে সতর্ক করা হচ্ছে। এমনকি ভিতরে নজরদারীর জন্য লোক নিয়োজিত আছেন। সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে তাকে বের করে দেয়া হয়। কিন্তু এরপরও অপরাধীদের ঠেকানো যাচ্ছে না। অবশ্য, এ ব্যাপরে জনসাধরণের অসচেনতাও দায়ী বলে মনে করেন অপরাধ বিশেষজ্ঞরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

বিআরইউ’র সভাপতি আনিসুর, সম্পাদক খালিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির (বিআরইউ) সভাপতি আনিসুর রহমান খান স্বপন (নিউ এইজ / ঢাকা ট্রিবিউন) আর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন খালিদ সাইফুল্লাহ (নয়া...

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন গণপিটুনিতে নিহত তোফাজ্জল

দখিনের সময় ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের গণপিটুনিতে নিহত মাসুদ কামাল তোফাজ্জলের জানাজা শেষে বরগুনার পাথরঘাটায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে...

অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর গ্রেফতার

দখিনের সময় ডেস্ক: চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশ পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমান গ্রেফতার হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তাকে আটক করা হয়। নিউমার্কেট থানার...

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ

দখিনের সময় ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম...

Recent Comments