দখিনের সময় ডেস্ক:
রুশ বাহিনীর ত্রিমুখী হানা ঠেকাতে আড়াই হাজার বছরের পুরোনো সেই ‘পোড়ামাটি’ যুদ্ধকৌশলই নিয়েছে ইউক্রেন সেনা। ‘শক্তিশালী শত্রুসেনার অগ্রগতি শ্লথ করাই ‘পোড়ামাটি নীতি’। পিছু হঠার সময় রাস্তা, সেতু, সম্ভাব্য বাসস্থান এবং রসদের উত্স নষ্ট করে দেওয়া তার অন্যতম অঙ্গ। যুদ্ধের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দিনে সেই কৌশলই নিয়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির সেনা।
খ্রিষ্টপূর্ব পঞ্চম শতকে চীনা সমর বিশারদ সান ঝু তার ‘আর্ট অব ওয়ার’-এ লিখে গিয়েছিলেন প্রবলতর প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এমন কৌশলের কথা। ১৮৮২ সালে নোপোলিয়নের রাশিয়া আক্রমণের সময় রুশ সম্রাট জার প্রথম আলেকজান্ডারের সেনা প্রথম হাতেকলমে প্রয়োগ করেছিল সেই নীতি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলার বাহিনীর আগ্রাসন প্রতিরোধে একই কৌশল নিয়েছিলেন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট জোশেফ স্তালিন।
‘শক্তিশালী শত্রুসেনার অগ্রগতি শ্লথ করাই ‘পোড়ামাটি নীতি’র মূল কথা। পিছু হঠার সময় রাস্তা, সেতু, সম্ভাব্য বাসস্থান এবং রসদের উত্স নষ্ট করে দেওয়া তার অন্যতম অঙ্গ। উদ্দেশ্য একটাই, বারবার বাধা পেয়ে শত্রুর আগ্রাসনের গতি কমলে পরবর্তী পর্যায়ের প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য সময় পাওয়া যায়। হানাদার বাহিনীর মনোবলও ধাক্কা খাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যুদ্ধের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দিনে সেই কৌশলই নিয়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির সেনা।
ত্রিমুখী হামলার মুখে পড়ে বৃহস্পতিবার থেকেই বিভিন্ন ফ্রন্টে একের পর এক কিভমুখী সেতু ও রাস্তা নষ্ট করতে শুরু করেছে ইউক্রেন সেনা। পিছু হঠার সময় ধ্বংস করছে নিজেদেরই সেনা শিবিরগুলো। এমনকি, খেরসানে নিজের শরীরে মাইন বেঁধে হেনিচেস্ক সেতু উড়িয়ে দিয়ে রুশ সাঁজোয়া পল্টন রুখেছেন ইউক্রেনের নৌ সেনার ব্যাটালিয়ন ইঞ্জিনিয়ার ভিতালি স্কাকুন ভোলোদিমিরোভিচ।
নেপোলিয়ন এবং হিটলার বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘পোড়ামাটি নীতি’ নিয়ে আত্মরক্ষার লড়াইয়ে জয়ী হয়েছিল রাশিয়া। ইউক্রেনে আক্রমণকারী হিসেবে তারা আড়াই হাজার বছরের পুরোনো চীনা রণনীতির মোকাবিলা কীভাবে করবে সেটাই এখন দেখার।