Home অন্যান্য অপরাধ ও দূর্নীতি কাবিননামা দেওয়ার কথা বরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, হাতিরঝিল থানার ওসিসহ আসামি ১৩

কাবিননামা দেওয়ার কথা বরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, হাতিরঝিল থানার ওসিসহ আসামি ১৩

দখিনের সময় ডেস্ক:

বিয়ের নামে প্রতারণার পর কাবিননামা দেওয়ার কথা বলে আত্মীয়ের বাসায় নিয়ে  সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেছেন এক নারী। আজ মঙ্গলবার ঢাকার সাত নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে এ নালিশি মামলা করেন তিনি।

মামলায় তিনি ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের আটকের পর ঘুষ নিয়ে ছেড়ে দেওয়ায় হাতিরঝিল ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ, পরিদর্শক (তদন্ত) মহিউদ্দিন ফারুক, ওসি (অপারেশন) গোলাম আযম ও দুই এসআই শরীফুল ও চয়নকে আসামি করেছেন। মামলার অপর আসামিরা হলেন মোসা. আলেয়া, কাজী তোফাজ্জল হোসেন, জাভেল হোসেন পাপন, মো. জামাল, রাকিবুল হাসান, তানীম রেজা বাপ্পী, পান্নু হাওলাদার ও ইউসুফ রিপন।

ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক জুলফিকার হায়াত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পরে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন। ট্রাইব্যুনালের পেশকার ইশতিয়ার আলম জানান, মঙ্গলবার মামলার আদেশ হয়নি, আগামীকাল বুধবার হতে পারে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর থেকে ওই নারী বাবার বাড়িতে বসবাস করছেন। এক বছর আগে তার খালাতো বোনের মাধ্যমে আসামি বাপ্পীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে বাপ্পী তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন, একপর্যায়ে ফুঁসলিয়ে তাকে রাজি করান। গত বছরের ২২ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টার দিকে আলেয়া, তোফাজ্জল, পাপন, জামাল, রাকিবুল, পান্নু ও রিপনের উপস্থিতিতে বিয়ে নাটক সাজিয়ে বিয়ে পড়ান ও স্বাক্ষর নেন বাপ্পী। পরে তারা ওই নারীর বাবার ভাড়া বাসায় ওঠেন এবং স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে থাকতে ‍শুরু করেন। মাস দুয়েক পর বাপ্পীর কথাবার্তায় তার সন্দেহ হয়। তখন ওই নারী বিয়ের কাবিননামা চাইলে বাপ্পী তা নিয়ে টালবাহানা করেন। পরে তিনি বুঝতে পারেন যে বাপ্পী তার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।

মামলায় আরও বলা হয়, গত ১২ ফেব্রুয়ারি কাবিননামা দেওয়ার কথা বলে ওই নারীকে বাপ্পী তার এক আত্মীয়ের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকেই আরও পাঁচজন মেয়ে ছিল, যাদের আত্মীয় বলে পরিচয় করিয়ে দেন। পরে আরও দুজন সেখানে আসেন। একপর্যায়ে আলিয়ার সহযোগিতায় জাবেল হোসেন পাপন ও মো. জামাল ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। আলিয়া তার ভিডিও ধারণ করেন ও ছবি তোলেন। পরে ওই নারী কৌশলে সেখান থেকে বের হয়ে ঢাকা মেডিকেল  কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। সেখান থেকে ৯৯৯ কল করে পুলিশের সহযোগিতায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ওই হাসপাতালে ওসিসি বিভাগে ভর্তি হন। পরে তিনি ১৬ ফেব্রুয়ারি হাতিরঝিল থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি, পরিদর্শক (তদন্ত), ওসি (অপারেশন) থানায় তাকে বসিয়ে রেখে আসামিদের ধরতে অভিযানে বের হন। পরে আসামি আলিয়াসহ আরও কয়েকজন নারী এবং অপর আসামিদের গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসেন। এরপর ওই নারীকে মামলা করতে না করে পুলিশ। তিনি রাজি না হওয়ায় আসামিরা তাকে এক লাখ টাকা দিতে চান। একপর্যায়ে আসামিরা পুলিশকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়ে ছাড়া পান। পুলিশ মামলা না নিয়ে কয়েকটি সাদা কাগজে ওই নারীর স্বাক্ষর নেয় এবং গালিগালাজ করে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থানা থেকে বের করে দেয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন গণপিটুনিতে নিহত তোফাজ্জল

দখিনের সময় ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের গণপিটুনিতে নিহত মাসুদ কামাল তোফাজ্জলের জানাজা শেষে বরগুনার পাথরঘাটায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে...

অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর গ্রেফতার

দখিনের সময় ডেস্ক: চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশ পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমান গ্রেফতার হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তাকে আটক করা হয়। নিউমার্কেট থানার...

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ

দখিনের সময় ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম...

মানহানির মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান

দখিনের সময় ডেস্ক: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান হবিগঞ্জে মানহানির একটি মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন । বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল আলীম...

Recent Comments