Home অন্যান্য নির্বাচিত খবর সরকারি চাকরির দেবার নামে প্রতারণা, চক্রের ৪ জন গ্রেফতার

সরকারি চাকরির দেবার নামে প্রতারণা, চক্রের ৪ জন গ্রেফতার

দখিনের সময় ডেস্ক:

 ‘চাকরি পাওয়ার পরে টাকা’- সেই চুক্তিতেই চাকরিপ্রার্থীকে প্রথমে কাছে টানা হয়। এর পর কৌশলে হাতিয়ে নেন মোটা অঙ্কের টাকা। এভাবে প্রায় পাঁচ বছর ধরে চক্রটি ৫০ চাকরিপ্রার্থী ও অভিভাবকের সঙ্গে প্রতারণা করে প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়েছে।

প্রথমে তারা প্রতিশ্রুতি দিতেন- চাকরি হওয়ার পর টাকা নেওয়া হবে। তবে বিভিন্ন অজুহাতে চাকরিপ্রার্থী ও তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে ভুয়া নিয়োগ দেওয়ার আগের রাতে তারা বলতেন, আরও টাকা দিতে হবে। না হলে আগামীকাল চাকরি কনফার্ম করা যাবে না। ভুক্তভোগীরা সরকারি চাকরি পাওয়ার আশায় তাদের চাহিদামতো অগ্রিম টাকা দিতেন।

প্রতারক চক্রটি নিজেদের পরিচয় দেয় পুলিশের সাবেক ওসি-এসআই হিসেবে। তাদের টার্গেট  শিক্ষিত বেকার যুবক। এই চক্রের চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তারা হলেন- প্রতারণা ও জালিয়াতচক্রের মূলহোতা মো. হেলালউদ্দিন এবং তার সহযোগী মফিজুল ইসলাম ওরফে লেবু, খন্দকার মারুফ ও মো. আব্দুল কাদের ওরফে রাজু। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে  বিভিন্ন সংস্থার ২৪টি গুরুত্বপূর্ণ সিল, ১১ পাতা ভুয়া নিয়োগপত্র, তিন পাতা নিয়োগসংক্রান্ত চুক্তিপত্র, আটটি মোবাইল ফোন ও সাড়ে ২১ হাজার টাকা।

জিজ্ঞাসাবাদে হেলালউদ্দিন জানান, প্রতারণা ও জালিয়াতচক্রের মূলহোতা তিনি। নিজেকে মোহাম্মদপুর থানার সাবেক ওসি, এসআই পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীদের কথার জালে ফাঁসিয়ে চাকরির প্রলোভনে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতেন। ভাড়া করা গাড়ি নিজের বলে দু-একজন চাকরিপ্রার্থীকে তাতে চড়িয়ে সরকারি বিভিন্ন অফিসের সামনে গিয়ে নামতেন। এর পর অফিসের ভেতরে গিয়ে কিছুক্ষণ পর বের হয়ে আসতেন। এভাবে চাকরিপ্রার্থী ও তাদের অভিভাবকদের আস্থা অর্জন করতেন প্রতারক হেলালউদ্দিন। চাকরিপ্রার্থীদের আর্থিক অবস্থাভেদে তিনি ৫-৯ লাখ টাকা পর্যন্ত নিতেন। জালিয়াতচক্রের প্রধান হিসেবে তিনি প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়েছেন, যার ভাগ অন্য সদস্যদেরও দিয়েছেন।

মফিজুল ইসলাম লেবু ও আব্দুল কাদের রাজু দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ করে লালমনিরহাট, বগুড়া, কুমিল্লা থেকে চাকরিপ্রার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের মূলহোতা হেলালের কাছে নিয়ে আসতো।  ‘বস’ সেজে চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ নিতো হেলাল ভুক্তভোগীদের সামনে সঠিকভাবে উপস্থাপন ও বিশ্বস্ততা অর্জনের জন্য মেডিক্যাল টেস্টের নামে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকেও তাদের নিয়ে যাওয়া হতো।

মারুফ মূলত চক্রের মূলহোতা হেলালউদ্দিনের অন্যতম সহযোগী। ক্ষমতাসীন দলের নেতা, সরকারি কর্মকর্তা এবং একটি বিশেষ অঞ্চলের বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম ভাঙিয়ে নিজেকে চাকরিপ্রার্থীদের কাছে জাহির করতেন মারুফ। বিভিন্ন সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ সিল ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ভুয়া সইসংবলিত অফিস আদেশ এবং ভুয়া নিয়োগপত্র খামে করে ভুক্তভোগীদের হাতে ধরিয়ে দিতো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

এক-তৃতীয়াংশ ইহুদি-আমেরিকান কিশোর হামাসের প্রতি সহানুভূতিশীল

দখিনের সময় ডেস্ক: এক-তৃতীয়াংশের বেশি আমেরিকান-ইহুদি কিশোর (১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী) 'আমি হামাসের সাথে সহানুভূতিসম্পন্ন'- এমন বক্তব্যের সাথে একমত। ইসরাইলের একটি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে...

প্রতিদিন কলা খাওয়ার উপকার

দখিনের সময় ডেস্ক: প্রতিদিন কলা খেলে মেলে অনেক উপকার। কলায় থাকে প্রয়োজনীয় অনেক ভিটামিন। যে কারণে চিকিৎসকেরা নিয়মিত কলা খাওয়ার পরামর্শ দেন। প্রতিদিন অন্তত দুটি...

মোহিনীর প্রেমের এআর রহমানের বিচ্ছেদ, যা বলছেন পুত্র

দখিনের সময় ডেস্ক: ব্যক্তিজীবন নিয়ে সংবাদের শিরোনামে এআর রহমান। সায়রা বানুর সঙ্গে দীর্ঘ ২৯ বছরের দাম্পত্যের অবসান। বুধবার রাতে রহমানের স্ত্রী সায়রার আইনজীবী এই খবর...

স্মার্টফোনে ইন্টারনেট চলে যাচ্ছে? জেনে নিন গতি বাড়ানোর কৌশল!

দখিনের সময় ডেস্ক: অনেকেই মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় হঠাৎ করেই দেখেন, নেটওয়ার্ক চলে গেছে। আশেপাশের অন্যরা নির্বিঘ্নে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারলেও আপনার ফোনেই সমস্যা...

Recent Comments