Home শীর্ষ খবর মারাই গেলেন হারাধন, ইহাকে বদলী বলে!

মারাই গেলেন হারাধন, ইহাকে বদলী বলে!

দখিনের সময় ডেস্ক:

হারাধন সূত্রধর (৬০)  সরাইলের শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ছিলেন। বাঞ্ছারামপুরের রূপসদী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাকে এক মাস আগে সরাইলের শাহবাজপুরে বদলি করা হয়। গত ৯ই মে এখানে যোগদান করেন তিনি।

হারাধন সূত্রধরের  মৃতদেহ দাহের সময়ও শ্মশানে ছিলেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল থেকে মরদেহ বাঞ্ছারামপুর পৌঁছা পর্যন্ত সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখা হয়েছে। লাশ বাড়িতে পৌঁছার আধাঘণ্টা পরই সেখানে পৌঁছান ইউএনও এবং এসিল্যান্ড।

গত মঙ্গলবার (৭ জুন) দুপুর আড়াইটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মারা যান হারাধন সূত্রধর। তুষার জানিয়েছেন, সোমবার (৬ই জুন) বাড়ি থেকে শাহবাজপুর যান তার বাবা। তিনি অসুস্থ ছিলেন। হার্টের সমস্যা ছিল। শরীরের এই অবস্থার মধ্যেই তাকে বাঞ্ছারামপুর থেকে শাহবাজপুর বদলি করা হয়।

হারাধন সূত্রধরের  মৃত্যু চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। আর হাসপাতাল থেকে দাহ পর্যন্ত সতর্ক ছিল প্রশাসন। আর এ কারণে এই মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ বেড়েছে। এদিকে জেলার ইউনিয়ন পরিষদ সচিবদের মাঝে সম্প্রতি হওয়া বদলি আদেশ নিয়ে প্রতিক্রিয়া রয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে এই মৃত্যুর ঘটনা। এমনই বলছেন ইউপি সচিবরা। চাকরিও ছেড়ে দিয়েছেন এক ইউপি সচিব।

পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, জেলার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে এই বদলিতে ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন হারাধন। তার মৃত্যুতে খবর ছড়ায়, শারীরিকভাবে অসুস্থ হারাধন বদলি পরিবর্তনে প্রশাসনের পদস্থ এক কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। সে সময় কড়া ধমক দেওয়া হয় তাকে। এরপরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। মঙ্গলবার দুপুর ৩টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে হারাধনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক আরিফুজ্জামান জানান, হারাধন সূত্রধরকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাৎক্ষণিক তার ইসিজি করে কোনো সাড়া মিলেনি।

হারাধনকে হাসপাতালে নিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. রুহুল আমিন এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সামিন সারোয়ার হাসপাতালে আসেন। তারা দুজনই হাসপাতাল থেকে মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে উঠিয়ে বাঞ্ছারামপুরে গ্রামের বাড়িতে রওনা করা পর্যন্ত সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

হারাধনের মরদেহ নিয়ে বাঞ্ছারামপুরে যান স্থানীয় সরকার শাখার সিএ তাইফুর লতিফ, অফিস সহকারী বাচ্চু মিয়া এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের নাটাই দক্ষিণের সচিব লিটন চক্রবর্তী এবং জেলা ইউনিয়ন পরিষদ সচিব সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. হাসান ভূঁইয়া। তারা রওনা করার পর বারবারই বাঞ্ছারামপুর প্রশাসনের কর্মকর্তারা যোগাযোগ করে মরদেহ কোথায় আছে জানতে চান। ইউএনও একি মিত্র চাকমা ও সহকারী কমিশনার-ভূমি (এসি ল্যান্ড) কাজী আতিকুর রহমান উপজেলা কমপ্লেক্সে মরদেহ পৌঁছার অপেক্ষা করতে থাকেন।

রাত সাড়ে ৮ টার দিকে হারাধনের মরদেহ তার বাড়িতে পৌঁছার পর সেখানে ছুটে আসেন ইউএনও এবং এসি ল্যান্ড। বাঞ্ছারামপুর কেন্দ্রীয় শ্মশানে দাহ শুরুর সময়ও সেখানে উপস্থিত ছিলেন তারা। নিহতের ছেলে তুষার সূত্রধর জানান, ৯টায় শুরু হয়ে রাত ১ টায় দাহ শেষ হয়। ইউএনও-এসি ল্যান্ড দাহ শুরু করার আধঘণ্টা পর সেখান থেকে চলে যান। তবে সার্বক্ষণিক তারা মোবাইলে ফোন করে খোঁজখবর রাখেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

শিবিরের ঢাবি শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটির ঘোষণা শিগগিরই: শিবির সভাপতি

দখিনের সময় ডেস্ক ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেছেন, দু-একদিনের মধ্যে সেক্রেটারিসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে। গতকাল শনিবার রাতে গণমাধ্যমকে...

সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাসান গ্রেপ্তার

দখিনের সময় ডেস্ক সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান চৌধুরীকে রাজধানীর আদাবর থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রবিবার রাজধানীর...

শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার

দখিনের সময় ডেস্ক: কক্সবাজারের টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপে বাড়ির সামনে থেকে তাহমিনা আক্তারের (৭) নামে এক শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত...

স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, থানায় এসে স্বামীর আত্মসমর্পণ

দখিনের সময় ডেস্ক: রাজধানীর পল্লবীতে শামসুন্নাহার (৫২) নামের এক নারীকে নিজ হাতে বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন তার স্বামী। ঘাতক স্বামীর নাম মোখলেছুর রহমান (৫২)।...

Recent Comments