পদ্মা সেতু কেন্দ্রিক স্বপ্ন দেখছেন ঝাড়ুর কারিগর-বিক্রেতারাও

দখিনের সময় ডেস্ক:

ঝাড়ু তৈরির প্রক্রিয়াটাও বেশ।  গ্রামীণ পাকা সড়কের পাশেই বাড়ির সামনে বসে ঝাড়ু তৈরি করছিলেন মো. আবুল হোসেন (৫৭)। তার দক্ষ হাতের স্পর্শে একগুচ্ছ ছন মুহূর্তেই পরিণত হয়ে উঠছিল একেকটি নিপুণ ঝাড়ুতে।  তিনিও স্বপ্ন দেখছেন পদ্মা সেতু কেন্দ্রিক।

গ্রামের নাম এলঙ্গিপাড়া হলেও মানুষ চেনে বাড়ুনের (স্থানীয়ভাবে ঝাড়ুকে বাড়ুন বলা হয়) গ্রাম হিসেবে। এই গ্রামের শতাধিক পরিবারের পারিবারিক পেশা ঝাড়ু বানানো। আর এই কুটির শিল্পটির সঙ্গে যুক্ত গ্রামের পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষ। এর বাইরে পড়াশোনার পাশাপাশি ঝাড়ু বানানোর কাজ করে কিশোর -কিশোরীরাও।

ঝাড়ু তৈরির কারিগর ও মহাজন আনসারুলসহ (৫৫) বলেন,  ঝাড়ু এমন একটা জিনিস, যার চাহিদা কোনো দিনও শেষ হবে না। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থার দুরাবস্থার কারণে  আমরা ঝাড়ুর ন্যায্যমূল্য পাই না। আশা করছি, পদ্মা সেতু চালু হলে আমাদের সুদিন ফিরবে। ঢাকা থেকে পাইকাররা সহজেই এখানে আসতে পারবেন। আমরাও ঝাড়ুর ভালো দাম পাবো। ভালো দাম পেলে কারিগরদের মজুরি বাড়ানো যাবে। এতে কারিগর, মহাজন, পাইকার সবাই লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা সেই স্বপ্নই দেখছি।

 মোন্নাফ মিয়া (৪৫) বলেন,  স্থানীয় হাটে বাড়ুন বিক্রি করলে আমরা তেমন দাম পাই না। মাঝে মাঝে ঢাকা থেকে পাইকার আসলে কিছুটা বেশি দাম পাই। এখন পদ্মা সেতু চালু হলে বেশি বেশি পাইকার আসবে, আমরাও দাম ভালো পাব। আমার বিশ্বাস, পদ্মা সেতু আমাদের জন্য আশীর্বাদ হবে। হারু শেখ (৬৮) বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে যোগাযোগ সহজ হবে। সহজেই ঢাকাসহ অন্যান্য জেলাগুলোতে যাতায়াত করতে পারব। আমাদের বাড়ুনের ক্রেতাও বেশি আসবে। ক্রেতা না এলেও সমস্যা নেই, আমরা নিজেরাই বাড়ুন নিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় নিয়ে বিক্রি করব।

 রফিকুল ইসলাম (৪২) বলেন,  যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় বেশিরভাগ সময় অল্প কিছু লাভ রেখে কম দামে ঝাড়ুগুলো পাইকারদের কাছে বিক্রি করতে হয়। আবার কোনো কোনো সময় লাভ তো দূরের কথা আসলও ওঠে না। এখন পদ্মা সেতু চালু হলে আশা করি, আমাদের সুদিন ফিরবে।

 একই প্রত্যাশা ঝাড়ুর মহাজন মো. আব্দুল হাকিম (৭০), আইনুদ্দিন (৭০), কারিগর বাবলু (৫০) ও জিয়ারুলের (৩৫)। তারা সবাই পদ্মা সেতু উদ্বোধনের প্রহর গুনছেন।