দখিনের সময় ডেস্ক:
রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে অনেকগুলো শব্দের বানান ভুল লেখা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির একাদশ শ্রেণির (মানবিক) অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষার বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্নপত্রে এসব ভুল ধরা পড়েছে। প্রশ্নপত্রে ১৮টি ভুল আছে বলে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে ঢাকা পোস্ট প্রশ্নপত্রটি ভালো করে ঘেঁটে দেখে সেখানে ৩০টির বেশি ভুল পেয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটিতে একাদশ শ্রেণির অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয় ১৬ জুন (বৃহস্পতিবার) হয়। ওইদিন বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে অনেকগুলো শব্দের বানান ভুল দেখা গেছে। প্রশ্নপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, শুরুতে পরীক্ষার যে সময় সীমা উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে ঘণ্টা শব্দের বানান ভুল লেখা হয়েছে।
প্রশ্নপত্রের এক নম্বর প্রশ্নে একটি অনুচ্ছেদ (উদ্দীপক) আছে। সেখানে যথাসময়কে লেখা হয়েছে যথার্থ সময়, ভেঙে শব্দের বানান লেখা হয়েছে ভেঙ্গ। দাবি বানান লেখা হয়েছে দাবী। দমানিবারদকে লেখা হয়েছে দমনিবারদ। নিরূপণ বানান লেখা হয়েছে নিরুপন।
২ নম্বর প্রশ্নে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার ৬ লাইনে ৫টি ভুল করা হয়েছে। সেখানে ম্রিয়মাণকে লেখা হয়েছে দম্নিয়মানদ। এভাবে দনিজেরেদর জায়গায় দনিজেরদ, দযেনদর জায়গায় দযেনোদ, দভরদ-এর জায়গায় দভয়দ এবং দসংশয়দ-এর বানান লেখা হয়েছে সংয়শয়। কবিতার প্রশ্নের মধ্যে দগ্রথিতদ শব্দের জায়গায় লেখা হয়েছে দপ্রথিতদ।
দ্বিতীয় উদ্দীপকে ভাষা আন্দোলনকে এক শব্দে লেখা হয়েছে। জ্ঞানতাপস-এর বানান লেখা হয়েছে, জ্ঞানতাস। কবিতার মাত্রা বানান লেখা হয়েছে মাত্র। আরেক প্রশ্নে তোমার মতামত লিখতে গিয়ে লেখা হয়েছে মোতার মতামত।
এছাড়া প্রশ্নপত্রের অন্যান্য জায়গায় ব্যাপক, শোষণ, ধারণ, মোকদ্দমা, শূন্য, প্রকাণ্ড ইত্যাদি শব্দের বানান ভুল লেখা হয়েছে। কিছু জায়গায় ব্যাকরণগত ভুলও পাওয়া গেছে।
ফেসবুকের একটি পোস্টের মাধ্যমে ভুলের এ ছড়াছড়ির বিষয়টি সবার নজরে আসে। এরপর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ অভিভাবক ফোরামের ফেসবুক গ্রুপে প্রশ্নপত্রটি একজন পোস্ট করেন। পোস্টটির ক্যাপশনে লেখা হয়, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রশ্নপত্রের নমুনা দেখুন। বর্তমান অতিথি অধ্যক্ষ ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে আসলেন! ওই পোস্টের কমেন্ট অপশনে রেজাউল কায়সার সুমন নামে একজন লেখেন, বর্তমানে শিক্ষার বারোটা বেজে গেছে। এত স্বনামধন্য স্কুলের এই অবস্থা!
এ বিষয়ে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিভাবক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোহম্মদ আবদুল মজিদ সুজন বলেন, বাংলাদেশের স্বনামধন্য ৫টি কলেজের একটি ভিকারুননিসা। এমন একটি প্রতিষ্ঠানে প্রশ্নপত্রে ভুল থাকা অমার্জনীয় অপরাধ। স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকরা উচ্চশিক্ষিত, এমনটাই আমরা মানি। কিন্তু তারা ভুল করলে শিক্ষার্থীরা তাদের থেকে কী শিখবে! এমন নয় যে এটাই প্রথম ভুল। গত এক বছর ধরে বিভিন্ন শ্রেণির প্রশ্নপত্রে ভুল পাওয়া যাচ্ছে। তিনি বলেন, শিক্ষকরা নিজেদের স্বার্থ দেখেন, গ্রুপিংয়ে সময় দেন। শিক্ষার্থীদের কল্যাণে সময় বের করার চিন্তা তাদের নেই। তারা গ্রুপিংয়ে সময় বেশি দেন, মনোযোগ সহকারে প্রশ্নপত্র তৈরি করেন না। এর ফলে প্রশ্নে ভুল থেকে যায়।