দখিনের সময় ডেস্ক:
বহু কাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান চলছে। বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে তিনি হেলিকপ্টার করে মাওয়া সমাবেশ স্থলে এসে পৌঁছান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ভাষণে বলেন, আজকে বাংলাদেশের মানুষ গর্বিত। আমিও গর্বিত। এই সেতু শুধু ইট-বালি সিমেন্টের অবকাঠামো নয়। এই সেতু আমাদের অহংকার। তিনি বলেন। শত প্রতিকূলতার মাঝেও যারা এই সেতু নির্মাণে জড়িত ছিলেন সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। সেইসঙ্গে যারা পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে নিজেদের জায়গা ছেড়ে দিয়েছেন তাদের প্রতিও তিনি কৃতজ্ঞতা জানান।
বক্তব্যের শুরুতে সরকারপ্রধান ১৫ আগস্ট নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং পদ্মা সেতুর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। যারা জমি দিয়ে সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক বাধা ও ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করে আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে চলেছি। পদ্মা সেতু কেবল ইট সিমেন্টের সেতু নয়, এই সেতু আমাদের গর্ব, আমাদের অহংকার। তিনি বলেন, এই সেতু বাংলাদেশের জনগণের। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের আবেগ। আমাদের কেউ দাবিয়ে রাখতে পারেনি। আমরা বিজয়ী হয়েছি। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে মাথা উচুঁ করে দাড়িয়েছে।
এরপর প্রধানমন্ত্রী টোল প্লাজায় যাবেন। সেখানে তিনি টোল প্রদান করবেন। টোল প্রদান করে প্রধানমন্ত্রী মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচন করবেন। উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত থেকে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে যাবেন। জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী ফলক এবং ম্যুরাল-২ উন্মোচন করবেন।
সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্থাপনা পদ্মা সেতু। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিলোমিটার। দ্বিতল এই সেতুর এক অংশ পদ্মা নদীর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত এবং অপর অংশ নদীর শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে যুক্ত। একই সঙ্গে ট্রেন ও গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা রয়েছে এ সেতুতে। চার লেন বিশিষ্ট ৭২ ফুট প্রস্থের এ সেতুর নিচতলায় রয়েছে রেল লাইন। এর মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে। পদ্মা সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা।
২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মূল সেতুর পাইলিং ও নদীশাসনের কাজ উদ্বোধন করেন। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হতে শুরু করে পদ্মা সেতুর কাঠামো। এরপর একে একে সব ধাপ পেরিয়ে পদ্মার বুকে ৪২টি পিলারের ওপর দৃশ্যমান হয়ে ওঠে স্বপ্নের সেতু। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ সেতু চালু হলে বাংলাদেশের জিডিপি ১.২ থেকে ১.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।