দখিনের সময় ডেস্ক:
এ রাজা কোনো রাজ্যের নয়। আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে লালন-পালন করা একটি ষাঁড়ের নাম ‘দিনাজপুরের রাজা’। কালো ও সাদা রঙে ষাঁড়টির দৈর্ঘ্য ১২ ফুট, উচ্চতা ৬ ফুট। ওজন ১২০০ কেজি (৩০ মণ)। ষাঁড়টির মালিকের আশা, রাজাকে বিক্রি করবেন ১২ লাখ টাকায়।
ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি দেশীয় পদ্ধতিতে নিজের বাড়িতে মোটাতাজা করেছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের মধ্যমপাড়া গ্রামের মো. গোলাম মোস্তফা। তিনি উপজেলার সিদ্দেসি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। গোলাম মোস্তফা বাড়িতে আরও ১৫-১৬টি গরু লালন-পালন করেন। এই খামারেই সাড়ে ৪ বছর আগে ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী থেকে জন্ম নেওয়া এই ষাঁড়টিকে রাজার মতই লালন পালন করেছেন বলে নাম রেখেছেন ‘দিনাজপুরের রাজা’।
বিশাল আকৃতির ষাঁড়টি দেখার জন্য প্রতিদিন মানুষ ভিড় করছেন তার বাড়িতে। বিশাল আকৃতির ষাঁড়টি হাটে আনা নেওয়া করা কষ্টকর তাই বাড়ি থেকেই রাজাকে বিক্রি করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
জন্মের পর ষাঁড়টিকে দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজা করার প্রক্রিয়া শুরু করেন মোস্তফা। প্রয়োজন মতো খাবার ও পরিচর্যা করায় গরুটির আকৃতি বাড়তে থাকে। দিনে দিনে গরুটির ওজন বেড়ে ১২ মণের (১ হাজার ২০০ কেজি) ওপরে এসে দাঁড়ায়। ডিজিটাল স্কেলের মাধ্যমে গরুটির ওজন মাপা হয়েছে। এবার কোরবানি উপলক্ষে গরুটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খামারি গোলাম মোস্তফা।
গোলাম মোস্তফা বলেন, দুজন লোক গরুটিকে দীর্ঘদিন থেকে দেখাশোনা করেন। তার খাবারের তালিকায় আছে প্রতিদিন প্রায় পাঁচ কেজি ভেজানো ছোলা, গমের ভূষি, মিষ্টি কুমড়া এবং সবুজ কাঁচা ঘাস। ফ্যানের বাতাস ছাড়া থাকতে পারে না ফ্রিজিয়ান জাতের এই ষাঁড়। বিদ্যুৎ না থাকলেও গরুটির জন্য বিকল্প ব্যবস্থাও করা হয়েছে। প্রতিদিন তিন বার করে গোসল করাতে হয়। গোসলের পর আবার শুকনা কাপড় দিয়ে শরীরের পানি মুছে ফেলতে হয় যাতে ঠাণ্ডা না লেগে যায়। মাত্র সাড়ে ৪ বছরেই তিনি গরুটিকে এইপর্যায়ে এসেছে। তিনি আরও বলেন, গরুটির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ লাখ টাকা। ক্রেতা পেলে এবারে গরুটি বিক্রি করে দেবেন।
গরুটির খাবারের জন্য প্রতিদিন প্রায় হাজার টাকা ব্যয় হয়। এই নিয়ে আমার এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। গোলাম মোস্তফা জেলার বিভিন্ন খামার ঘুরে দাবি করেন দিনাজপুর জেলায় তার গরুটিই সবচেয়ে বড়। মোস্তফার অবর্তমানে তার ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ষাঁড়টির দেখাশোনা করেন।
মোস্তফা বলেন, এই গরুটিকে গোসল করাতে গিয়ে কষ্ট হয়নি। তার চরিত্র ছিল একেবারে শান্ত। তাকে বিক্রি করলেও বড় কষ্ট লাগবে। কিন্তু সারাজীবন তো রাখা যাবে না বিক্রি করতেই হবে।