দখিনের সময় ডেস্ক:
রুজা ইগনাতোভা। গোয়েন্দাদের দুনিয়ায় ‘ক্রিপ্টোকুইন’ নামে পরিচিত এই নারী। তার বাড়ি বুলগেরিয়াতে। ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ডিজিটাল মুদ্রা জালিয়াতিতে তিনি বিশ্বসেরাদের একজন। আমেরিকার কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা- এফবিআই রুজা ইগনাতোভাকেকে এখন হন্যকে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে। দুদিন আহে তার নাম যুক্ত হয়েছে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ এর শীর্ষ দশের তালিকায়। কারণটাও ভয়াবহ।
৪২ বছরের রুজার জন্ম হয়েছিল বুলগেরিয়ার সোফিয়ায়। তবে ১০ বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে জার্মানির স্রামবার্গ শহরে চলে যান তিনি। সেখানেই বেড়ে ওঠা এবং পড়াশোনা করা। জার্মানির একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের উপর পিএইচডি করেছেন রুজা। আর উচ্চশিক্ষা শেষ করে তিনি ম্যাকিনস- এর মতো বহুজাতিক সংস্থায় চাকরিও করেছেন। ২০১২ সালে বাবা প্লামেন ইগনাতোভের সঙ্গে মিলে একটি জার্মান কোম্পানি দখলের পর তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ ওঠে। সেই মামলায় জেল হয় বাবা ও মেয়ের। আর এতেই কপাল খুলে যায় রুজার। কারাগারে বসে হাত পাকিয়ে ফেলেন ক্রিপ্টোকারেন্সিতে। খুলে বসেন একটি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান। শুরু হয় বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করা।
ভুয়ো বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান খুলে মাত্র তিন বছরের মধ্যে প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ হাপিশ করে দিয়েছেন এই বুলেগেরিয় সুন্দরী। আর এর সবাই তিনি করেছেন ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে। যার কারণে তাকে ‘ক্রিপ্টোকুইন’ নামে অভিহিত করা হয়। পাঁচ বছর আগে হঠাৎ করেই গায়েব হয়ে যান রুজা। এরপর থেকে তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে এফবিআই। বিনোয়াগকারীদের রাতের ঘুম হারাম করে দেয়া এই নারীর জন্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি আছে আমেরিকারতে। কিন্তু ধরা যাচ্ছে না।
বুলগেরিয়ার পাশাপাশি জার্মান নাগরিক রুজার বিরুদ্ধে কোটি কোটি ডলার লোপাটের অভিযোগ তুলেছে এফবিআই। এ কারণে তার সম্পর্কে তথ্য দিলেই মিলবে এক কোটি টাকা পুরস্কার। শুধু এফবিবাই নয়, ইন্টারপোল-ইউরোপেল তাবৎ বিশ্ব গোয়েন্দা সংস্থার তালিকায় আছেন রুজা। ইউরোপে চষে বেড়িয়েও তার কোন নাগাল পাচ্ছেন না বাঘা বাঘা গোয়েন্দারা।
রুজাকে পাকড়াও করতে না পারার পেছনে কারণও আছে। অন্য সব পেশাদারি অপরাধীর মতো তিনি নন। উচ্চশিক্ষিত এবং আইনের মারপ্যাঁচ সম্পর্কে তার রয়েছে বিশেষ দক্ষতা। স্মার্ট ও সুন্দরী রুজাকে গত পাঁচ বছরে কেউ দেখেছে এমন কোন তথ্য হাজির করতে পারেনি গোয়েন্দারা। তাহলে কোথায় গেলেন তিনি, এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সবার মনে। ২০১৭ সালে বুলগেরিয়ার সোফিয়া থেকে গ্রিসের যাওয়ার বিমানে উঠেছিলেন তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলো পাঁচ কোটি টাকা। তারপর থেকে লাপাত্তা রুজা ইগনাতোভা।