Home শীর্ষ খবর এবার ধরা পড়লো ‘মাদক বিজ্ঞানী’

এবার ধরা পড়লো ‘মাদক বিজ্ঞানী’

দখিনের সময় ডেস্ক:

দেশের একটি স্বনামধন্য ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করেন সাঈদ। তারপর ব্যাচেলর অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন (বিবিএ) করতে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। পরবর্তী সময়ে তিনি মালয়েশিয়া মাস্টার অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন (এমবিএ) করেন। দেশে ফিরে প্রথমে বাবার টেক্সটাইল ব্যবসা দেখাশোনা শুরু করেন সাঈদ।

ঘটনা এখানেই শেষ নয়। এই সাঈদকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। অভিযোগ, গবেষণা করে নতুন মাদক ছড়িয়ে দিতো ওনাইসী সাঈদ ওরফে রেয়ার সাঈদ (৩৮)। সোমবার(১ আগস্ট) রাতে রাজধানীর গুলশান থেকে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে কুশ, হেম্প, মলি, এক্সট্যাসি, ফেন্টানলের মতো মাদক জব্দ করা হয়। দেশে তার ক্রেতা বিভিন্ন অভিজাত পরিবারের সদস্য।’

আজ মঙ্গলবার(২ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিদেশে পড়া অবস্থায় বিভিন্ন মাদকের সঙ্গে পরিচিত হন সাইদ। বাবার ব্যবসায়ের পাশাপাশি দেশে নতুন ধরনের মাদকের প্রচলন ও বাজার সৃষ্টির পরিকল্পনা করেন তিনি। পরিকল্পনা অনুসারে ২০১৯ সাল থেকে বিভিন্ন দেশ থেকে কুরিয়ারের মাধ্যমে নানা ধরনের মাদক নিয়ে আসতেন। দেশের বিভিন্ন অভিজাত পার্টিতে তিনি এসব মাদক সরবরাহ করতেন।

র‌্যাব জানায়, সাইদ নিজে শুধুমাত্র ধূমপান ও মদে আসক্ত। কিন্তু গবেষণা করতেন বিভিন্ন নতুন প্রজাতির মাদক নিয়ে। নিজের বাসায় মাদক উৎপাদনের প্ল্যান্ট তৈরি করেন। তার ইচ্ছা ছিল নতুন মাদক নিয়ে গবেষণার মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। হতে চেয়েছিলেন মাদক বিজ্ঞানী। কীভাবে নতুন ধরনের মাদক সেবন করা যায়, তার জিনিসপত্র কী হবে সেটিও পরিকল্পনা করতেন সাইদ।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সোমবার রাতের অভিযানে সাইদের গুলশানের বাসা থেকে ১০১ গ্রাম কুশ, ৬ গ্রাম হেম্প, ০.০৫ গ্রাম মলি, ১ গ্রাম ফেন্টানল, ১৮ গ্রাম কোকেন, ১২৩ পিস এক্সট্যাসি, ২৮ পিস এডারল ট্যাবলেট জব্দ করে র‌্যাব। এ ছাড়া তার বাসা থেকে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ও ৫০ লাখ টাকা সমমূল্যের মার্কিন ডলার জব্দ করা হয়।

র‌্যাব জানায়, সাইদের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে তার মোহাম্মদপুরের একটি ফ্ল্যাটেও অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে তাপ নিয়ন্ত্রণ গ্রো-টেন্টের মাধ্যমে বিদেশি প্রজাতির কুশ তৈরির প্ল্যান্ট ও সেটআপ জব্দ করা হয়। বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাতকরণের উদ্দেশ্যে প্ল্যান্টটি স্থাপন করেছিলেন সাঈদ।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আটক ওনাইসী সাঈদ ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশে অবস্থান করছিলেন। কিন্তু বিদেশে তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল। বাংলাদেশে জনপ্রিয়তা বাড়াতে নতুন ধরনের মাদক নিয়ে আসতেন। বিভিন্ন পার্টিতে ও নিজ সার্কেলে এসব মাদক ছড়িয়ে দিতেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমরা ফয়সাল নামে একজনের নাম জানতে পেরেছি। তিনি এলিফ্যান্ট রোডের বাসিন্দা। ২০১৬ সাল থেকে ফয়সাল বিদেশে অবস্থান করছেন। প্রথমে থাইল্যান্ডে বসবাস করলেও বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করছেন। তিনিই মূলত সাইদকে বিভিন্ন ধরণের অপ্রচলিত মাদক সরবরাহ করে আসছেন।

খন্দকার মঈন বলেন,  বাংলাদেশে নতুন মাদক এক্সট্যাসির অন্যতম মূলহোতা সাঈদ। তিনি গত প্রায় ৪ বছর ধরে এক্সট্যাসিসহ অন্যান্য উচ্চমূল্যের মাদকের কারবারের সঙ্গে জড়িত। বাংলাদেশে বেশ কয়েকজন তার সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। এসব মাদক তিনি পার্সেলের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ থেকে সংগ্রহ করতেন। পার্সেলগুলো তিনি নিকটাত্মীয়, বন্ধু-বান্ধবের নামে নিয়ে আসতেন। অবশ্য তারা কেউ এ সম্পর্কে জানতেন না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

ঘরোয়া উপায়ে মশা তাড়ান

দখিনের সময় ডেস্ক: মশার কামড়ে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে মশা থেকে নিজেকে রক্ষা করা খুবই জরুরি। মশা...

বরিশালের দু’ চিকিৎসকের বিচার দাবীতে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে স্বজনদের অভিযোগ

দখিনের সময় ডেস্ক: বরিশাল মেট্রোপলিটন হাসপাতালে অপ- চিকিৎসা ,ভুল অপারেশন ও ডাক্তারদের অবহেলায় সুমাইয়া নামে এক রোগীর মৃত্যুর কারনে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডাঃ খালিদ মাহমুদ ও...

১৪ দল আছে এবং থাকবে: প্রধানমন্ত্রী

দখিনের সময় ডেস্ক: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচনে কে জয় পেল বা না পেল সেটা আলাদা বিষয়, কিন্তু ১৪ দল আছে...

কঠিন বাস্তবতায় বিএনপি

বাঁচতে হলে পানি পান করতেই হবে। এটি সব প্রাণীর জন্য সত্য। জীবজগৎ পানিনির্ভর। পানি ছাড়া পৃথিবী অচল। পানির প্রয়োজন সবার। তবে এ প্রয়োজনের মাত্রা...

Recent Comments