Home নির্বাচিত খবর ভারতে অবিবাহিত নারীদের গর্ভপাত বৈধ হলো, আদালতের রায়

ভারতে অবিবাহিত নারীদের গর্ভপাত বৈধ হলো, আদালতের রায়

দখিনের সময় ডেস্ক:

অবিবাহিত নারীদেরও গর্ভপাতের অধিকার দিয়ে রায় দিলো ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এ রায়ে বলা হয়েছে, গর্ভপাতের অধিকার দেশের সব নারীর জন্যই প্রযোজ্য এবং তিনি বিবাহিত নাকি অবিবাহিত তা সেখানে কখনোই বিচার্য হতে পারে না।

শুধু অবিবাহিত হওয়ার জন্য কোনও নারীকে গর্ভপাতের অধিকার থেকে বঞ্চিত করাটা অসাংবিধানিক বলেও মন্তব্য করেছে শীর্ষ আদালত। এই রায় ঘোষণার সময় বিচারপিত ডি. ওয়াই. চন্দ্রচূড়, এ. এস. বোপান্না ও জে. বি. পারডিওয়ালার বেঞ্চ ‘ম্যারিটাল রেপ’ বা বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ঘটা ধর্ষণকেও এক রকম ধর্ষণ বলে একরকম স্বীকৃতি দিয়েছে- যদিও তা শুধুমাত্র গর্ভপাতের অধিকারের পটভূমিতেই।

সুপ্রিম কোর্ট এই প্রসঙ্গে বলেছে, মেডিক্যাল টার্মিনেশন অব প্রেগনেন্সি অ্যাক্ট বা গর্ভপাত আইনে ধর্ষণের যে সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে তাতে ‘ম্যারিটাল রেপ’কেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এই পর্যবেক্ষণ ‘ম্যারিটাল রেপ’ নিয়ে ভবিষ্যতে আরও গুরুত্বপূর্ণ রায়ের পথ প্রশস্ত করবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। এটি ভারতে বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত একটি ইস্যু, যার পক্ষে-বিপক্ষে বহু যুক্তি-তর্ক আছে।

সুপ্রিম কোর্ট রায়ে আরও বলেছে, একজন ‘সিঙ্গল’ বা ‘অবিবাহিত’ নারী যদি তার অবাঞ্ছিত প্রেগনেন্সি গর্ভপাতের মাধ্যেমে শেষ করে দিতে চান তাহলে সেটা তার মৌলিক অধিকার। তাকে যদি ওই অবাঞ্ছিত প্রেগনেন্সি টেনে নিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়, তাহলে নিজের জীবন কোন খাতে বইবে সেটা স্থির করার অধিকার রাষ্ট্র তার কাছ থেকে কেড়ে নিচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতিরা।

এই রায়টি এসেছে ২৫ বছর বয়সী এক অবিবাহিত নারীর আবেদনের পটভূমিতে। তার গর্ভপাতের অধিকার খারিজ করে দিয়ে দিল্লি হাইকোর্ট সম্প্রতি যে রায় দিয়েছিল তার বিরুদ্ধেই তিনি সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হন। দিল্লি হাইকোর্টের যুক্তি ছিল, ওই মহিলা অবিবাহিত বলে গর্ভপাত আইনের সুবিধা পেতে পারেন না- এবং যে শারীরিক সম্পর্কের কারণে তিনি গর্ভবতী হয়েছিলেন সেটাও ছিল পারস্পরিক সম্মতির (‘কনসেনসুয়াল’) ভিত্তিতেই।

এক অবিবাহিত নারী সুপ্রিম কোর্টকে জানান, তার সঙ্গী পরে তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে। এছাড়া তিনি বলেন, তিনি একটি দরিদ্র কৃষক পরিবারের পাঁচ ছেলে-মেয়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্বও তার কাঁধেই- ফলে একটি পিতৃহীন সন্তানকে প্রতিপালন করার ক্ষমতাই তার নেই। এরপর গত ২১ জুলাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, মেডিক্যাল বোর্ড যদি বলে গর্ভপাত করালে ওই নারীর কোনও শারীরিক ক্ষতি হবে না তাহলে তিনি তার গর্ভের ভ্রূণটি শেষ করে দিতে পারবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

মানবাধিকার কর্মী মিনা ফারাহকে জামায়াত আমিরের ফোন

দখিনের সময় ডেস্ক: বিশিষ্ট কলামিস্ট, অনলাইন এক্টিভিস্ট ও মানবাধিকারকর্মী মিনা ফারাহকে ফোন করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। এ সময় তিনি বাংলাদেশের কঠিন...

পঞ্চগড়ে চা খামারিদের ক্ষমতায়নে ইউসিবির কর্মশালা

দখিনের সময় ডেস্ক: ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি (ইউসিবি) সম্প্রতি পঞ্চগড় জেলার চা খামারিদের জন্য একটি কর্মশালা আয়োজন করেছে। চা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে আর্থিক...

সন্তানের অত্যাচারে শতবর্ষী বৃদ্ধের আত্মহত্যা

দখিনের সময় ডেস্ক: সৈয়দ আলী আকনে (১০৪) নামের এক শতবর্ষী বৃদ্ধের আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে বিষপানে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। সৈয়দ আলী পিরোজপুরের ইন্দুরকানী...

গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে কমিশন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: সিইসি

দখিনের সময় ডেস্ক: নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছেন, নির্বাচন আয়োজন করতে জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা দরকার। সবার সহযোগিতা...

Recent Comments