পশুপাখির প্রতি ভালোবাসা,  প্রতিদিন খাওয়াচ্ছেন ৬০-৭০টি প্রাণিকে

দখিনের সময় ডেস্ক:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি’র উচ্চমান সহকারী গাজীউল ইসলাম দীর্ঘ ১৪ ধরে ক্যাম্পাসের ভেতরে ৯টি পয়েন্ট ভাগ করে খাবার খাওয়ান পশুপাখিদের। প্রতিদিন ৬০-৭০টি প্রাণির খাবারের ব্যবস্থা করতে হয়। খাওয়ানো থেকে শুরু করে অসুস্থ প্রাণিদের চিকিৎসাও করান তিনি।

কেবল পশুপাখির প্রতি ভালোবাসা ও মানবিকতার জায়গা থেকে নিজের বেতনের প্রায় এক তৃতীয়াংশ এই কাজে ব্যয় করেন গাজীউল ইসলাম । পশুপাখির প্রতি মমত্ববোধের জায়গা থেকেই এ কাজ করছি। তাদের সঙ্গে আমার বেশ সখ্যতা গড়ে উঠেছে। তার মোটরসাইকেল যেতে দেখলেই পেছন পেছন দৌড়াতে থাকে তারা। মাঝে মাঝে তাকে না পেয়ে আমার গাড়ির পাশে বসে প্রানীকুল।

গাজীউল প্রতিদিন সকাল ৬টায় ঘুম থেকে ওঠে টিএসসিতে এসে পশুপাখির জন্য খাবার রান্না করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ভবন, রসায়ন বিভাগের পেছনে, লাইব্রেরি চত্বরের পাশে, প্রশাসন ভবনের সামনে, পরিবহন মার্কেটে, মতিহার হলের সামনে, মেডিকেল সেন্টারের পাশে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মন্দিরের পাশে ও বিনোদপুর গেটের দিকে এসব রান্না করা খাবার বিলি করতে প্রতিদিন ছুটে যান তিনি। রান্না থেকে শুরু করে খাবার খাওয়ানো পর্যন্ত তিন ঘণ্টা সময় লেগে যায় গাজীউলের।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে কোনো ক্ষুধার্ত কুকুর দেখলেই খাবার দেন। শুধু কুকুরদের খাবার খাওয়ান এমন নয়, অনেক অসুস্থ কুকুরকে চিকিৎসাসেবাও দিয়েছেন। কুকুরের সঙ্গে এমন সখ্যতার কারণে প্রিয় কয়েকটি কুকুরের নামও দিয়েছেন। নাম ধরে ডাকলেই কুকুরগুলো দ্রুত চলে আসে তার কাছে।

জানা যায়, ২০০৮ সালে মানবিকতার জায়গা থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পশুপাখির জন্য কাজ শুরু করেন গাজীউল। প্রথমে নিজ অর্থায়নে শুরু করলেও পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক সহযোগিতার হাত বাড়ান। পশুপাখির প্রতিদিনের খাবারের মধ্যে থাকে চাল, গরুর মাংসের চর্বি আর ডাল দিয়ে তৈরি খিচুড়ি। প্রতিবেলা খাবারের জন্য খরচ পড়ে প্রায় ৭০০ টাকা। এতে প্রতি মাসে ২০-২২ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। এই খরচের অর্ধেক অংশই তার পকেট থেকে যায়। আর বাকি অর্ধেক শিক্ষকদের কাছ থেকে সহযোগিতা পান গাজীউল ইসলাম।