দখিনের সময় ডেস্ক
ফিলিস্তিনে আর কোনো দখল কার্যক্রম না চালাতে ইসরায়েলকে হুঁশিয়ার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলের নতুন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে শুক্রবার এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। সোমবার যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্ক বিশ্লেষণ ও মজবুতকরণে নিয়োজিত ওয়াশিংটনভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা জে স্ট্রিটের এক আলোচনা সভায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে অভিনন্দন জানাই, তবে একটি দেশের সরকার কেমন, তা আমরা হিসেব করি ওই সরকার কী কী নীতি নিচ্ছে— তা বিশ্লেষণের মাধ্যমে, কোনো দেশের সরকারপ্রধান ব্যক্তি হিসেবে কেমন— সেটি এখানে তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়।’
‘আমাদের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন বরাবরই স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র এবং ওই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি স্থাপনে বিশ্বাসী।’ ‘কিন্তু আমরা উদ্বেগের সঙ্গে দেখতে পাচ্ছি, পশ্চিম তীরে এখনও ইসরায়েলের সীমানা সম্প্রসারণ অব্যাহত আছে। যদি এটা চলতেই থাকে, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যের ওই অঞ্চলে পবিত্র শহর জেরুজালেমের মর্যাদায় আঘাত আসার পাশাপাশি ধ্বংসযজ্ঞ, হত্যা ও সংঘাতের উসকানিও অব্যাহত থাকবে।’
‘আমরা চাই অবিলম্বে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের সীমানা বিরোধের নিষ্পত্তি হোক এবং মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন নামের দু’টি পৃথক রাষ্ট্র গঠিত হোক। এর জন্য দু’পক্ষের মধ্যে সংঘাত ও বিশেষ করে ইসরায়েলের দখল অভিযান থামানো জরুরি।’ ‘ইসরায়েলের আসন্ন নতুন প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আরও প্রত্যাশা থাকবে— সেখানে যেন সমকামীদের অধিকারের বৈধতা দেয়া হয়। কারণ সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সবার ন্যায্য অধিকার ভোগের সুযোগ থাকে।’
টানা ১২ বছর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী থাকার পর ২০২১ সালের নির্বাচনে হেরে যান নেতানিয়াহু। গত বছরের জুনে ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটে নতুন জোট সরকার গঠন নিয়ে বিতর্কের পর ভোট হয়। সেখানে নতুন জোট সরকারের পক্ষে ৬০ ভোট আসে। বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পক্ষে আসে ৫৯ ভোট। পরে ইয়ার লাপিদের মধ্যপন্থী দল ইয়েস আতিদের সঙ্গে জোট করে সরকার গঠন করে ইয়েমিনা পার্টি।
কিন্তু সম্প্রতি দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট ও ইয়ার লাপিদের জোটে ফাটল দেখা দেয়। তার জেরেই নভেম্বরের নির্বাচনের আয়োজন করা হয় এবং সেই নির্বাচনে বিজয়ী হন নেতানিয়াহু। রাজনৈতিক স্বার্থে বরাবরই কট্টর ইহুদি ধর্মীয় মতবাদ জায়নবাদকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেন বলে অভিযোগ রয়েছে নেতানিয়াহুর পক্ষে। এছাড়া বিগত নির্বাচনে জয়ের জন্য তিনি কট্টরপন্থী বলে পরিচিত ইহুদি দলগুলোর সঙ্গে মিত্রতা স্থাপন করেছেন। এসব দলের নেতারা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার বিপক্ষে তো বটেই— এমনকি নিজ দেশের সমকামীদের সমঅধিকারেরও বিপক্ষে।