দখিনের সময় ডেস্ক:
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে একটা টাকা রিজার্ভ ছিল না, সব নিয়ে গিয়েছিল পাকিস্তানিরা। কারেন্সিগুলো পুড়িয়ে দিয়ে গেল। যুদ্ধকালীন সময়ে কেউ চাষাবাদ করতে পারেনি। তেমন একটা বিধ্বস্ত দেশের তিনি (বঙ্গবন্ধু) দায়িত্ব নিলেন। মাত্র ৯ মাসে একটি সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন।
রোববার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ভারত সরকার, সে দেশের জনগণ সময় আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। এর সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য দেশগুলো রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ, এমন কি পশ্চিমা দেশগুলোতেও কোনও কোনও সরকার সমর্থন না দিলেও তাদের জনগণ আমাদের সমর্থন দিয়েছিলেন। আমেরিকা সরকার পাকিস্তানিদের সহযোগিতা করলেও আমেরিকার জনগণ আমাদের পাশে ছিল। আমাদের সহযোগিতা করেছিল।
তিনি বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছিলেন, খাদ্য দিয়েছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং দিয়েছেন, অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করেছেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন যাদের সৈনিকরা আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অকাতরে জীবন দিয়েছেন, সেই ভারত এবং অন্যান্য সহযোগী দেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
সরকারপ্রধান বলেন, ’৭৫ এর পরে যারা ক্ষমতা এসেছিলেন তারা কখনও চায়নি বাংলাদেশ সারা বিশ্বের কাছে একটা মর্যাদা নিয়ে চলুক। তাদের লক্ষ্য ছিল, বাংলাদেশ একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে ঘোষিত হয়। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়টা যেন অর্থহীন হয়ে পড়ে। এই দেশটা যেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে সম্পূর্ণ বিমুখে চলে যায়। এ অবস্থাটাই করেছিল যারা ’৭৫ পরে ক্ষমতা এসেছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা আসার পরই এদেশের মানুষ যে জিনিসটা উপলব্ধি করতে পেরেছে যে, সরকার জনগণের সেবক। একটা সরকার ইচ্ছে করলে মানুষের যে উন্নতি করতে পারে সেটা আওয়ামী লীগ সরকারই প্রমাণ করেছে।
ক্ষমতা আসা সহজ ছিল না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এতো সহজে আসতে দেয়নি। জনগণ আমাদের সমর্থন করে, ভোট আমাদের আছে, কিন্তু নির্বাচন বার বার কারচুপি করে হোক, ষড়যন্ত্র করে হোক, চক্রান্ত করে হোক, বার বার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা আসতে বাধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মানুষের শক্তি হচ্ছে বড় শক্তি। আর একটা বিশ্বাস, উপরে রাব্বুর আল-আমিন তো আছেনই। আল্লাহ দয়া আর মানুষের শক্তি নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারে এসেছে।
’৯৬ থেকে ২০০১ এদেশের জন্য স্বর্ণেও যুগ ছিল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তারপর আবার চক্রান্ত হলো। আমরা ক্ষমতা আসতে পারিনি, বাংলাদেশের মানুষ কী পেয়েছিল? সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা, লুটপাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানি। কোনও মানুষের জীবনে নিরাপত্তা ছিল না। অগ্নিসন্ত্রাসসহ কী না হয়েছে এদেশে? কিন্তু প্রতিটি সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে থেকেছে। আর আমরা সরকারে যখন থেকেছি, প্রত্যেকটা জিনিসের মোকাবিলা করেছি।
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।