Home শীর্ষ খবর অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ের হ্রাস টানা দরকার:  মির্জ্জা আজিজ, ছাপিয়ে জোগান দেওয়া হলো ৪৯...

অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ের হ্রাস টানা দরকার:  মির্জ্জা আজিজ, ছাপিয়ে জোগান দেওয়া হলো ৪৯ হাজার কোটি টাকা

দখিনের সময় ডেস্ক:
চলতি অর্থবছরের প্রথম সাড়ে পাঁচ মাসেই (১ জুলাই-১৫ ডিসেম্বর) সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে প্রায় ৪৯ হাজার কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে সরকারকে প্রয়োজনীয় ঋণের জোগান দিয়ে যাচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নিলে নতুন টাকা ছাপিয়ে দিতে হয়। এতে মুদ্রা সরবরাহ বেড়ে তা মূল্যস্ফীতির ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।
প্রাপ্ত তথ্য বলছে, কড়াকড়ি ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সঞ্চয়পত্র বিক্রি নেতিবাচক ধারায় নেমেছে। বৈদেশিক ঋণ ছাড়েও গতি নেই। সরকারের রাজস্ব আদায়েও চলছে ধীরগতি। এমন বাস্তবতায় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন ব্যয় মেটাতে বাধ্য হয়েই ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ঋণ নেওয়া বাড়িয়েছে সরকার। তবে এবার বাংকঋণের পুরোটাই জোগান দিতে হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। কারণ তারল্যে টান পড়ায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সরকারকে ঋণ দিতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে।
তবে এই পাঁচ মাসে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে কোনো ঋণ নেয়নি সরকার। উল্টো আগের নেওয়া ঋণের প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। ফলে সরকারের নিট ব্যাংকঋণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা। প্রতিবছরই বড় অঙ্কের ঘাটতি রেখে বাজেট পেশ করে আসছে সরকার। এই ঘাটতি মেটানো হয় দুটি উৎস থেকে- অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক খাত। বৈদেশিক খাত থেকে প্রয়োজনীয়
অর্থ সহায়তা পাওয়া না গেলে অভ্যন্তরীণ উৎসের ওপরই বেশি নির্ভর করতে হয় সরকারকে। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে রয়েছে ব্যাংকব্যবস্থা ও সঞ্চয়পত্র খাত। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। তারল্য সংকট থাকায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে চাইলেও প্রয়োজনীয় ঋণ পাচ্ছে না সরকার। আবার ঋণ পেলেও সুদের হার বেশি দাবি করা হচ্ছে। কারণ করোনার পর চাহিদা বৃদ্ধি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক কয়েক দফা নীতি সুদহার বৃদ্ধির কারণে ব্যাংকগুলোর তহবিল সংগ্রহের খরচ বেড়ে গেছে। অন্যদিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও নানা কড়াকড়িতে সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে মন্দা চলছে। বৈদেশিক ঋণ সহায়তা ছাড়েও গতি নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, সাধারণ ঋণের সুদহারের চেয়ে সরকারের বিল ও বন্ডের সুদহার তুলনামূলক কম হওয়া এবং চলমান তারল্য সংকটের কারণে বাণ্যিজিক ব্যাংকগুলো সরকারকে ঋণ দিতে আগ্রহী হচ্ছে না। ফলে এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকই টাকা ছাপিয়ে সরকারকে প্রয়োজনীয় ঋণের জোগান দিয়ে যাচ্ছে। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘোষিত মুদ্রানীতির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে।
জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম আমাদের সময়কে বলেন, সরকারের আয় কম বলেই ব্যাংক থেকে বেশি ঋণ নিতে হচ্ছে। আর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হলে নতুন টাকা ছাপিয়ে দিতে হয়। এর প্রভাব সরাসরি মূল্যস্ফীতির ওপর পড়ে। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া কমাতেই হবে। অন্যথায় মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে গেলে মানুষের দুর্ভোগও বেড়ে যাবে। এ জন্য সরকারের অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ের হ্রাস টানা দরকার, যাতে বাজেট ঘাটতি কম হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

বিশাল নিয়োগ আসছে, ক্যাডার ১২ হাজার ৭১০ এবং নন-ক্যাডারে ৫ হাজার ৪৩৯

দখিনের সময় ডেস্ক: পাঁচটি বিসিএসের মাধ্যমে মোট ১৮ হাজার ১৪৯ জনকে নিয়োগ দেবে সরকার। এর মধ্যে ক্যাডার পদে ১২ হাজার ৭১০ জন এবং নন-ক্যাডারে পাঁচ...

উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে অটোরিকশা সমস্যার সমাধান হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

দখিনের সময় ডেস্ক: উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে ব্যাটারিচালিতঅটোরিকশার চলাচল বিষয়ক সমস্যার সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ রোববার...

বাউফলে সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

নয়ন সিকদার, বাউফল প্রতিনিধি পটুয়াখালীর বাউফলে সড়ক প্রশস্তকরণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। চোখের সামনে প্রকাশ্যে দিবালোকে নির্মাণকাজে নিম্মমানের উপকরণ ব্যবহার করায় ক্ষুদ্ব প্রতিক্রিয়া...

টিকটকে নিরাপদ রাখবে যে ১০ ফিচার

দখিনের সময় ডেস্ক: ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে টিকটক। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে যৌথভাবে কাজ শুরু করেছে টিকটক। যেখানে ‘ফিডস’ নেটওয়ার্কের...

Recent Comments