Home শীর্ষ খবর বিচার পায়নি ফেলানীর পরিবার

বিচার পায়নি ফেলানীর পরিবার

দখিনের সময় ডেস্ক:
নিহত কিশোরী ফেলানীর লাশ ঝুলেছিলো সীমান্তের তারকাটায়। বারো বছর আগে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিজের মেয়েকে মারা যেতে দেখেছিলেন কুড়িগ্রামের নূরুল ইসলাম। সেই দুঃস্মৃতি ভুলতে পারেননি তিনি। মেয়ে ফেলানীর আর্তচিৎকার ঘুমের মধ্যে এখনো তাড়া করে বেড়ায় তাকে। তবে কাঙ্ক্ষিত বিচার মেলেনি।
ফেলানীহত্যা মামলায় বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সদস্য ছিলেন মানবাধিকার কর্মী ও কুড়িগ্রাম জেলা জজকৈার্টের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন। তিনি বলেন, ‘ফেলানীহত্যা মামলাটি ভারতের সুপ্রিমকোর্টে একযুগ ধরে চলছে। বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি প্রয়োজন। এতে করে দুই দেশের বন্ধুত্ব আরও গাড় হবে। অপরাধীর দায় নিশ্চয় রাষ্ট্র নেবে না।’
নূরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী জাহানারা বেগম বলেন, মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে মানবাধিকার সংস্থাসহ বহুজনের কাছে গিয়েছি কিন্তু ১২ বছরেও কাক্সিক্ষত বিচার পেলাম না। আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই। দুই দেশের সরকারের কাছে আবেদন, ফেলানীহত্যার সুষ্ঠু বিচার যেন তারা করে দেয়। বিচারের অপেক্ষায় এখনো আছি।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি বাবার সঙ্গে ভারত থেকে দেশে ফিরছিল নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনিটারী গ্রামের কিশোরী ফেলানী। দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার উত্তর অনন্তপুর সীমান্তে ৯৪৭নং আন্তর্জাতিক ৩নং সাব পিলারের পাশে মই বেয়ে কাঁটাতার ডিঙ্গানোর সময় তাকে গুলি করেন ভারতের চৌধুরীহাট ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ। কাঁটাতারে ঝুলে থাকা ফেলানীর মরদেহের খবর আলোড়ন তোলে দুই দেশে।
ভারতের আদালতে ফেলানী হত্যার বিচার শুরু হয় ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট। ৫ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করে কোচবিহার জেলার বিএসএফের ১৮১ সদর দপ্তরে স্থাপিত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস আদালত। রায় প্রত্যাখ্যান করে ১১ সেপ্টেম্বর ভারতীয় হাইকমিশনের মাধ্যমে সে দেশের সরকারকে ন্যায়বিচারের আশায় চিঠি দেন ফেলানীর বাবা। ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনঃবিচার কার্যক্রম শুরু হলেও বিভিন্ন কারণে তা একাধিকবার স্থগিত হয়ে যায়।
২০১৫ সালে আরও একটি ক্ষতিপূরণ মামলা করে বাংলাদেশের আইন ও শালিসকেন্দ্র এবং ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ। ৩১ আগস্ট ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সে দেশের সরকারকে ফেলানীর পরিবারকে ৫ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার অনুরোধ করে। এর জবাবে ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলামকে দায়ী করে বক্তব্য দেয় ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর পর ২০১৬, ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে কয়েক দফা ক্ষতিপূরণ মামলার শুনানি পিছিয়ে যায়। পরে ২০২০ সালের ১৮ মার্চ শুনানির দিন ধার্য হলেও তা আজো অনুষ্ঠিত হয়নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

চীনের সবচেয়ে ধনী টিকটকের প্রতিষ্ঠাতা ঝাং ইমিং

দখিনের সময় ডেস্ক: টিকটকের মূল প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের প্রতিষ্ঠাতা ঝাং ইমিং (৪১) চীনের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির তালিকার শীর্ষ স্থান দখল করেছেন। বর্তমানে তার ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ...

প্রতিদিন ডিম খাওয়া কি হার্টের জন্য ভালো?

দখিনের সময় ডেস্ক: প্রোটিন সমৃদ্ধ ডিমকে সবচেয়ে উপকারী এবং পুষ্টিকর খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি যুগ যুগ ধরে মানুষের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় যুক্ত রয়েছে। ডিম...

মানবাধিকার কর্মী মিনা ফারাহকে জামায়াত আমিরের ফোন

দখিনের সময় ডেস্ক: বিশিষ্ট কলামিস্ট, অনলাইন এক্টিভিস্ট ও মানবাধিকারকর্মী মিনা ফারাহকে ফোন করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। এ সময় তিনি বাংলাদেশের কঠিন...

পঞ্চগড়ে চা খামারিদের ক্ষমতায়নে ইউসিবির কর্মশালা

দখিনের সময় ডেস্ক: ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি (ইউসিবি) সম্প্রতি পঞ্চগড় জেলার চা খামারিদের জন্য একটি কর্মশালা আয়োজন করেছে। চা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে আর্থিক...

Recent Comments