Home লাইফস্টাইল মৃগী রোগীর চিকিৎসা

মৃগী রোগীর চিকিৎসা

দখিনের সময় ডেস্ক:
মৃগী রোগ হলো এক ধরনের স্নায়বিক ব্যাধি, যা একজন ব্যক্তির বারবার খিঁচুনি ঘটায়। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন অধ্যাপক ডা. মো. শফিকুল ইসলাম, বিভাগীয় প্রধান, নিউরোসার্জারি বিভাগ, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
মস্তিষ্কে হঠাৎ অস্বাভাবিক বৈদ্যুতিক ক্রিয়াকলাপের কারণে এই খিঁচুনি ঘটে, যা মস্তিষ্কের কোষগুলোর মধ্যে মেসেজিং সিস্টেমে একটি অস্থায়ী ব্যাঘাত ঘটায়। আমাদের দেশে গ্রামাঞ্চলে এখনো এটাকে জিন-ভূতের আসর হিসেবে মনে করা হয়, যা সঠিক নয়।
মৃগী রোগের কারণ কী? নিম্নলিখিত কারণে মৃগী রোগ হতে পারে—
♦ মৃগীর খিঁচুনি জেনেটিক হতে পারে—মৃগী রোগে আক্রান্ত প্রতি তিনজনের মধ্যে প্রায় একজনের এই রোগের পারিবারিক ইতিহাস রয়েছে।
♦ মাথায় আঘাতের পর মস্তিষ্কের টিস্যুর দাগ (পোস্ট-ট্রমাটিক এপিলেপসি)
♦ প্রসবপূর্ব মাথায় আঘাত (সন্তানের জন্মের আগে মাথায় আঘাত)
♦ মাথায় আঘাত বা আঘাত, যেমন একটি যানবাহন দুর্ঘটনা
♦ ব্রেন স্ট্রোক (৩৫ বছরের বেশি বয়সী রোগীদের ক্ষেত্রে এটি মৃগী রোগের প্রধান কারণ)
♦ ব্রেন টিউমার বা সিস্ট
♦ শিশুর জন্মের সময় মস্তিষ্কে অক্সিজেনের অভাব
♦ বিকাশজনিত ব্যাধি বা স্নায়বিক রোগ জন্ম থেকেই উপস্থিত
♦ ডিমেনশিয়া বা আলঝেইমার রোগ
♦ সংক্রামক রোগ যেমন এইডস, মেনিনজাইটিস, যা মস্তিষ্কের টিস্যুতে ছড়িয়ে পড়ে।
উপসর্গ: খিঁচুনি বা মৃগী রোগের উপসর্গ ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। এর মধ্যে কয়েকটি লক্ষণ নিম্নরূপ—
♦ সহজ আংশিক খিঁচুনি : চেতনার কোনো ক্ষতি নেই। এর নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো রয়েছে—
♦ মাথা ঘোরা।
♦ শরীরে শিহরণ সংবেদন।
♦ স্বাদ, গন্ধ এবং দৃষ্টিতে পরিবর্তন।
♦ জটিল আংশিক খিঁচুনি : এতে চেতনা বা সচেতনতা হারানো জড়িত। এর লক্ষণগুলো নিম্নরূপ—
♦ রোগীর কোনো সাড়া নেই।
♦ রোগী মহাশূন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে।
♦ হাততালি দেওয়া, হাত ঘষা ইত্যাদির মতো পুনরাবৃত্তিমূলক নড়াচড়া করুন।
♦ সাধারণ খিঁচুনি : এটি মস্তিষ্কের সমস্ত অঞ্চলকে জড়িত করে। ছয় ধরনের সাধারণ খিঁচুনি আছে, এবং এর সবটারই বিভিন্ন উপসর্গ রয়েছে।
♦ ব্যক্তি তার পেশি নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম এবং পড়ে যায়।
♦ পেশি শক্ত হয়ে যায়।
♦ মুখ, ঘাড় এবং বাহুর পেশিতে বারবার কম্পন হয়।
♦ রোগীর হাত ও পায়ে সুড়সুড়ি দেওয়ার লক্ষণ থাকে।
♦ ব্যক্তি একই কাজ বারবার করতে থাকে, যেমন চোখের পলক ফেলা বা ঠোঁট ফাটানো।
♦ পেশির খিঁচুনি, বিভ্রান্তি, পড়ে যাওয়া, মূত্রাশয় বা অন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ হারানো, দাঁত চেপে যাওয়া, অস্বাভাবিক আচরণ, অনিয়মিত শ্বাসপ্রশ্বাস।
মৃগী রোগের চিকিৎসা কী কী?
বেশির ভাগ ধরনের মৃগী রোগের জন্য বর্তমানে কোনো প্রতিকার নেই। রোগীদের মধ্যে মৃগী রোগের খিঁচুনি ভালোভাবে পরিচালিত হয়। খিঁচুনির ধরন এবং তীব্রতা, সাধারণ স্বাস্থ্য এবং রোগীর বয়সের মতো বিষয়গুলোর ওপর চিকিৎসা পরিকল্পনা নির্ভর করে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

চীনের সবচেয়ে ধনী টিকটকের প্রতিষ্ঠাতা ঝাং ইমিং

দখিনের সময় ডেস্ক: টিকটকের মূল প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের প্রতিষ্ঠাতা ঝাং ইমিং (৪১) চীনের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির তালিকার শীর্ষ স্থান দখল করেছেন। বর্তমানে তার ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ...

প্রতিদিন ডিম খাওয়া কি হার্টের জন্য ভালো?

দখিনের সময় ডেস্ক: প্রোটিন সমৃদ্ধ ডিমকে সবচেয়ে উপকারী এবং পুষ্টিকর খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি যুগ যুগ ধরে মানুষের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় যুক্ত রয়েছে। ডিম...

মানবাধিকার কর্মী মিনা ফারাহকে জামায়াত আমিরের ফোন

দখিনের সময় ডেস্ক: বিশিষ্ট কলামিস্ট, অনলাইন এক্টিভিস্ট ও মানবাধিকারকর্মী মিনা ফারাহকে ফোন করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। এ সময় তিনি বাংলাদেশের কঠিন...

পঞ্চগড়ে চা খামারিদের ক্ষমতায়নে ইউসিবির কর্মশালা

দখিনের সময় ডেস্ক: ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি (ইউসিবি) সম্প্রতি পঞ্চগড় জেলার চা খামারিদের জন্য একটি কর্মশালা আয়োজন করেছে। চা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে আর্থিক...

Recent Comments