Home শীর্ষ খবর এবি ব্যাংকের চাপে লন্ডী মালিকের আত্মহত্যা

এবি ব্যাংকের চাপে লন্ডী মালিকের আত্মহত্যা

আলম রায়হান:
শেষতক ব্যাংক ঋণের চাপে কবরেই গেলেন মো: মিলন মিয়া। এ জন্য বেছে নিয়েছেন আত্মহত্যার পথ। রেখে গেছেন অসহায় স্ত্রী এবং তিন পুত্র ও এক কন্যা। অতি আদরের কন্যার নামে লন্ড্রীর নাম দিয়েছিলেন রিজা লন্ড্রী।
এবি ব্যাংকের ঋণের চাপে লন্ড্রী মালিক মো: মিলন মিয়া(৫৫) আত্মহত্যা করেছেন। আজ বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর মহানগর আবাসীন এলাকার ডি ব্লকের ৬নং বাড়ীন নীচ তলা থেকে ঝুলন্ত অবস্তায় লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিষয়টি আত্মহত্যা বলে সংশ্লিষ্ট পুলিশের ধারণা। এদিকে পারিবারিক সূত্র বলছে, ঋণবাবদ এবি ব্যাংক মালিবাগ শাখা ম্যানেজার অতিরিক্ত টাকার জন্য কয়েকমাস ধরে চাপ দিয়ে আসছিলেন। এই চাপ অসহনীয় হওয়ায় মো: মিলন মিয়া(৫৫)আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন বলে ধারণা স্বজনদের।

ঝুলন্ত অবস্থা থেকে মৃতদেহ নামাবার পরের দৃশ্য

পারিবারিক সূত্রে জানাগেছে, চাদপুরের সন্তান প্রায় ৩০ বছর ধরে লল্ড্রী ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত। কর্মচারী হিসেবে জীবন শুরু করে মালিক হন পরিশ্রমী এই মানুষটি। মহানগর আবাসিক এলাকায়ই তিনি লন্ড্রী ব্যবসা বরছের প্রায় ২৫ বছর ধরে। এ এলকায় তার দুটি দোকান রায়েছে। তার হাত ধরে পরিবারের একাধিক সদস্য এ ব্যবসায় এসেছেন।

মৃতদেহে কোন আঘাতের চিহ্ন আছে কিনা তা পরীক্ষা করা হচ্ছে

মো: মিলন মিয়া সহজ-সরল ও স্বজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। এই পরিচিতিই এক পর্যায়ে তার কাল হয়ে দাঁড়ায়! ২০০৮ সালের দিকে এবি ব্যাংকের এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি তাঁকে ব্যাংক ঋণ নেবার জন্য প্রলুব্ধ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তিনি ফাঁদে ধরা দেন। এ অবস্থায় অতি সহজে তাঁর নামে এবি ব্যাংক মালিবাগ শাখা থেকে ৫ লাখ টাকা ঋণ মঞ্জুর করা হয়। কিন্তু আসল খেলা শুরু হয় টাকা নেবার সময়।

ময়নাতদন্তে মর্গে নেবার জন্য লাশ এম্বুলেন্সে তোলা হচ্ছে

ঋনের টাকা গ্রহন করার সময় মো: মিলন মিয়াকে ম্যানেজারের রুমে ডেকে নেয়া হয়। সেখানে লোন সেকশনের মো: আশিক তার কাছে দুই লাখ টাকা দাবী করেন। তিনি বলেন, এই টাকা দিয়ে ঋনের কিস্তি পরিশো্ধ করা হবে। ব্যাংক ম্যানেজারও এতে সম্মতি জানান। এ অবস্থায় মো: মিলন মিয়া অনেকটা বাধ্য হয়েই ঋনের টাকা থেকে দুই লাখ টাকা মো: আশিকের হাতে তুলে দেন। কিন্তু মো: আশিক কোন কিস্তি পরিশোধ কনেনি। এ পর্যায়ে তিনি অন্যত্র বদলী হয়ে যান। এবং ফোন ধরা থেকে বিরত থাকেন। এ অবস্থায় ঋণগ্রহিতা মো: মিলন মিয়া কয়েক কিস্তিকে ব্যাংকের ২ লাখ ৮৮ টাকা প্রদান করেন। বিষয়টি এক পর্যায়ে আদালতে গড়ায়। আদালত ৪ লাখ ৫০ হ্জার টাকা পরিশোধের রায় দেন। কিন্তু এই রায় মানতে অনীহা প্রকাশ করে আসছে এবি ব্যাংক। ব্যাংকের দাবী ৮ লাখ টাকা।
আদালতের রায় উপেক্ষা করে এবি ব্যাংক অতিরিক্ত টাকা দাবী করায় মো: মিলন মিয়া অসহায় বোধ করতে থাকেন। এদিকে টাকার জন্য ব্যাংক চাপ বাড়াতে থাকে।এমনকি ব্যাংক ম্যানেজার তাঁকে নাকি বলেছেন, ‘কিডনি বিক্রি করে হলেও ব্যাংকের টাকা দিতে হবে! টাকা না দিয়ে কবরে গেলেও আমরা লাশ তুলে আনবো।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি নিয়ে আলাপ-আলোচনা হবে: জনপ্রশাসনমন্ত্রী

দখিনের সময় ডেস্ক: জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় চাকরিতে বয়সসীমা নিয়ে যে সুপারিশ পাঠিয়েছে তা সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত। এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করব।...

শেষ মুহূর্তে আটকে গেল এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের বদলি প্রক্রিয়া

দখিনের সময় ডেস্ক: সরকারি শিক্ষকদের মতো বেসরকারি শিক্ষকরাও বদলি হতে পারবেন এমন উদ্যোগ নিয়েছিল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। নিজেদের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক করে...

গভীর গুহায় মৃদু আলো

সম্প্রতি ব্যারিস্টার সুমন তার প্রাপ্ত অর্থের পরিমাণ তুলে ধরে নিজের নির্বাচনি এলাকায় যে বক্তব্য দিয়েছেন তা রাষ্ট্রব্যবস্থার গভীরে কালো গুহায় মৃদু আলো ফেলেছে বলে...

২৩ বছর পর রাজনী‌তিতে ফেরার ইঙ্গিত দিলেন আবুল হাসান চৌধুরী

দখিনের সময় ডেস্ক: রাজনী‌তি‌তে ফেরার ইঙ্গিত দি‌য়ে‌ছেন সা‌বেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী কায়ছার। শ‌নিবার (৪ মে) সন্ধ‌্যায় মধুপুর পৌরসভার কাঁঠালতলা এলাকায় উপ‌জেলা প‌রিষদ নির্বাচ‌নের...

Recent Comments