Home চাকরির খবর সহকারী জজ হওয়ার প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে

সহকারী জজ হওয়ার প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে

দখিনের সময় ডেস্ক:
ষোড়শ বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (১৬ শ বিজেএস) পরীক্ষার মাধ্যমে এবার ১০০ জন সহকারী জজ নিয়োগ পাবেন। তবে বিধি অনুযায়ী পদের সংখ্যা বাড়তে বা কমতে পারে। সহকারী জজ পদে চাকরি পেতে একজন প্রার্থীকে তিন ধাপে পরীক্ষা দিতে হয়। প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা। এ তিন ধাপে সফল হওয়ার মূলমন্ত্র পরিশ্রম ও সঠিক কৌশল অবলম্বন করে পড়াশোনা করা। সহকারী জজ হওয়ার স্বপ্ন যাঁদের, তাঁদের এখন থেকেই ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।
প্রিলিমিনারি
ইতিমধ্যে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। ১৮ মার্চ প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে এখন থেকেই নিতে হবে প্রস্তুতি। আগের কয়েকটি বিজেএস পরীক্ষার প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে দেখা যায় প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে প্রায় ৬০ নম্বর আসে আইন অংশ থেকে এবং প্রায় ৪০ নম্বর আসে সাধারণ বিষয় থেকে। সাধারণ বিষয়ের মধ্যে রয়েছে—বাংলা, ইংরেজি, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়, সাধারণ গণিত ও দৈনন্দিন বিজ্ঞান।
সাধারণ বিষয়ের প্রস্তুতি
প্রথমেই বিজেএসের আগের প্রিলিমিনারির প্রশ্ন এবং ১০ম থেকে সবশেষ বিসিএসের প্রিলিমিনারির প্রশ্নগুলো সমাধান করতে হবে। বিজেএস ও বিসিএসের প্রশ্ন পড়ার উদ্দেশ্য কোন বিষয় গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে, তা নির্ধারণ করা। এই সমাধান করা প্রশ্নগুলোর আলোকে বিজেএসের সিলেবাসে দেওয়া বিষয়গুলোর:
মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাছাই করতে হবে। যে বিষয়গুলো থেকে বিজেএস ও বিসিএস পরীক্ষায় প্রশ্ন বেশি আসে সেগুলো বেশি চর্চা করতে হবে। ভালো প্রস্তুতির জন্য নিয়মিত পত্রিকা পড়ার বিকল্প নেই।
আইন অংশের প্রস্তুতি
বিজেএসের প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নগুলো আগে পড়তে হবে। এ কাজটি করলে কোন আইনের কোন কোন ধারা ও বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, তা বোঝা সহজ হবে। সিলেবাসের সব আইনের বেয়ার অ্যাক্টের গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলো উদাহরণসহ বুঝে বুঝে পড়ে নিজের মতো নোট করে রাখতে হবে। পরবর্তী সময় লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতির ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে। এ ক্ষেত্রে আদালতে যেসব ধারা ব্যবহৃত হয়, সেই ধারাগুলো বেশি গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে। ধারাগুলো বিস্তারিত জেনে নিতে হবে। কোনো আইনের সবশেষ সংশোধনী সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে।
লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি
প্রিলিমিনারির প্রায় একমাস পর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষার ফলাফল দুই থেকে আড়াই মাস পর প্রকাশিত হয়। মোট ১০০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। আইন অংশে ৬০০ নম্বর ও সাধারণ বিষয়ে ৪০০ নম্বর। সাধারণ বাংলা ও ইংরেজির প্রস্তুতির জন্য ব্যাকরণ ও সাহিত্য অংশে বিসিএসে আসা আগের প্রশ্ন এবং বিজেএসে আসা প্রশ্নগুলো প্রথমেই সমাধান করে নিতে হবে।
এ ছাড়া বাংলা ব্যাকরণ অংশের জন্য নবম-দশম শ্রেণির পুরোনো বাংলা ব্যাকরণ (মুনীর চৌধুরী রচিত) বইটি অবশ্যই পড়তে হবে এবং ইংরেজি ব্যাকরণের জন্য বিজেএসের সিলেবাসে থাকা বিষয়গুলো প্রচলিত কোনো ইংরেজি গ্রামার বই থেকে পড়ে নিতে হবে। বাংলা ও ইংরেজি লিখিত অংশের (চিঠি/ আবেদন/ রচনা/ প্রতিবেদন ইত্যাদি) জন্য নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি বই বা প্রচলিত বিজেএস বা বিসিএসের লিখিত কোনো বই থেকে দেখে নিতে হবে।
গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞান
ষষ্ঠ ও নবম-দশম শ্রেণির সাধারণ গণিত বই থেকে বিজেএস সিলেবাসে থাকা বিষয়গুলো অনুশীলন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরল, শতকরা, লাভ ও ক্ষতি, সরল ও যৌগিক মুনাফা, ঐকিক নিয়ম, অনুপাত ও সমানুপাত, বীজগণিতের মান নির্ণয়, সরল ও দ্বিঘাত সমীকরণ এবং ত্রিভুজ ও বৃত্ত–সম্পর্কিত উপপাদ্য গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ বিজ্ঞানের জন্য ষষ্ঠ ও নবম-দশম শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞান বই থেকে শুধু বিজেএস সিলেবাসে থাকা বিষয়গুলো বিস্তারিত পড়ে নিতে হবে।
বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক
লিখিত পরীক্ষার আগের তিন মাসের সাম্প্রতিক ঘটনার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো‌ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে হবে। নিয়মিত পত্রিকা পড়তে হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক, মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলোর ওপর পশ্চিমা বিশ্বের প্রভাব প্রভৃতি বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানা থাকতে হবে।
লিখিত পরীক্ষায় আইন বিষয়ে প্রস্তুতি
প্রথমেই বিজেএসের প্রশ্নগুলো সমাধান করে নিতে হবে। আইন অংশে আগের প্রশ্ন–সম্পর্কিত বিষয় থেকে প্রশ্ন রিপিট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ জন্য আগে আসা আইন অংশের প্রশ্নগুলো অবশ্যই খুব ভালো করে পড়তে হবে। উত্তরগুলো নিজের মতো সাজিয়ে নোট করে রাখলে তা পরীক্ষার খাতায় লিখতে সহায়ক হবে। এর বাইরে বিজেএস সিলেবাসের প্রতি আইনের গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলো উদাহরণসহ বিস্তারিত জেনে নিতে হবে। প্রতিটি ধারার গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো নোট করে রাখতে হবে। লিখিত পরীক্ষার ক্ষেত্রে ছোট ছোট অপ্রয়োজনীয় ধারাগুলো বাদ দিয়ে পড়া যেতে পারে।
লেখার ধরন: আইন ও ধারা মার্ক করার জন্য নীল কালি ব্যবহার করা যেতে পারে। বর্ণনামূলক প্রশ্নগুলো পয়েন্ট করে উত্তর দেওয়া উচিত। প্রবলেম প্রশ্নগুলো ফ্যাক্ট, ইস্যু, সিদ্ধান্ত, সিদ্ধান্তের কারণগুলো এই চার পয়েন্টে উত্তর করা উচিত। এই তীব্র প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় খাতার উপস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাতের লেখা যেমনই হোক, সেটা যেন স্পষ্ট হয়।
মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতি
লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়। প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার জন্য আইন অংশে যে গুরুত্বপূর্ণ ধারা ও বিষয়গুলো পড়া হয়েছে, মৌখিকের জন্য মূলত সেই ধারা ও বিষয়গুলো আবার পড়া দরকার। আদালতে ব্যবহৃত ধারাগুলো সম্পর্কে জানা থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন আইনে বিভিন্ন আদালতের বিচারক ও বিচারপ্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানা জরুরি। সাধারণ বিষয়ের জন্য বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সাম্প্রতিক ঘটনা ও প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক বিস্তারিত জানা থাকতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

বাউফলে সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

নয়ন সিকদার, বাউফল প্রতিনিধি পটুয়াখালীর বাউফলে সড়ক প্রশস্তকরণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। চোখের সামনে প্রকাশ্যে দিবালোকে নির্মাণকাজে নিম্মমানের উপকরণ ব্যবহার করায় ক্ষুদ্ব প্রতিক্রিয়া...

টিকটকে নিরাপদ রাখবে যে ১০ ফিচার

দখিনের সময় ডেস্ক: ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে টিকটক। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে যৌথভাবে কাজ শুরু করেছে টিকটক। যেখানে ‘ফিডস’ নেটওয়ার্কের...

প্রতিদিন খেজুর খাবেন যে কারণে

দখিনের সময় ডেস্ক: আপনার কি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য সুস্বাদু কোনো খাবার প্রয়োজন এবং সেইসঙ্গে অতিরিক্ত ওজন কমাতে চাইছেন? এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হতে পারে খেজুর।...

পরীমণি প্রথম স্বামীর পরদিন মারাগেলো প্রথম পরিচালক

দখিনের সময় ডেস্ক: লাইফ সাপোর্টে থেকেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমণির প্রথম সিনেমা ‘ভালোবাসা সীমাহীন’-এর পরিচালক শাহ আলম মণ্ডল।  গুলশানের...

Recent Comments