দখিনের সময় ডেস্ক:
পাটপণ্য রপ্তানিতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রবনতা সৃষ্টি হয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে এ খাত থেকে রপ্তানি আয় কমেছে ২৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ। বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএমএ) মহাসচিব আবদুল বারেক খান বলেন, সরকারে নীতি সহায়তার অভাব, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ভারত অ্যান্টি ডাম্পিং কর বাড়ানোর কারণে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি কমছে।
পাটপণ্যের পাশাপাশি হিমায়িত মাছ, হোম টেক্সটাইল, কৃষিপণ্য, ওষুধসহ অন্য খাতেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম আয় এসেছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বিশ্ব পরিস্থিতির পাশাপাশি কাঁচাপাটের দাম বৃদ্ধি, ভারতে কর বৃদ্ধি ও আর্থিক খাতের অস্বচ্ছতার সুযোগে অসত ব্যবসায়ীরা বেশি সুযোগ পাওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত আট মাসে পাটপণ্যের রপ্তানি আয় হয়েছে ৬১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আগের বছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ৭৯৯ দশমিক ৪২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই বছর এ খাতে মোট রপ্তানি আয় কমেছে ২৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ। এর মধ্যে কাঁচাপাটে ১০ দশমিক ৬০ শতাংশ, ইয়ার্ন এবং টোয়াইনে ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ, জুট স্যাকস অ্যান্ড ব্যাগসে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং অন্যান্য খাতে আয় কমেছে ৫ দশমিক ১৫ শতাংশ।
এদিকে সবাইকে অবাক করে গত ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানি বাণিজ্যে একটি ‘নীরব বিপ্লব’ ঘটে। পণ্য রপ্তানির তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে হোম টেক্সটাইল; ১৬২ কোটি ১৯ লাখ ৩০ হাজার (১.৬২ বিলিয়ন) ডলারের বিদেশি মুদ্রা দেশে আসে। আগের অর্থবছরের (২০২০-২১) চেয়ে বেশি আসে ৪৩ দশমিক ২৮ শতাংশ।
সেই আশায় চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ২ বিলিয়ন (১৯৮ কোটি) ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরে সরকার। কিন্তু সেই চমক আর নেই। বড় ধাক্কা খেয়েছে হোম টেক্সটাইল রপ্তানি থেকে আয়। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে এ খাত থেকে ৭৬ কোটি ৯৮ লাখ ডলার আয় হয়েছে। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২২ দশমিক ৫৩ শতাংশ কম। লক্ষ্যের চেয়ে আয় কমেছে আরও বেশি, ৩৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এই আট মাসে ১২৭ কোটি ১৪ লাখ ডলার আয়ের লক্ষ্য ধরা ছিল। গত অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে আয় হয়েছিল প্রায় ১০০ কোটি ডলার।
অন্যান্য খাতের মধ্যে এ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে আয় কমেছে প্রায় ২৭ শতাংশ, হিমায়িত মাছ রপ্তানি ২১ দশমিক ৬৫ শতাংশ, ওষুধ রপ্তানি ৮ দশমিক ৮২ শতাংশ, স্পেশালাইজড টেক্সটাইল রপ্তানি ২৩ দশমিক ৮০ শতাংশ, বাইসাইকেল রপ্তানি ৫ শতাংশ এবং হ্যান্ডিক্রাফট থেকে রপ্তানি আয় কমেছে ৩৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ।