দখিনের সময় ডেস্ক:
ভোর ৬টায় লাগা রাজধানীর বঙ্গবাজার মার্কেটের আগুন সাড়ে ৪ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। এই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের চার মার্কেটেও। এখন এনেক্সকো ভবনে আগুন জ্বলছে। ভয়াবহ এই আগুনে ঈদের জন্য আনা শত শত দোকানের মালামাল পুড়ে ছাই হয়েছে। সব হারিয়ে দিশেহারা এখানকার ব্যবসায়ীরা। কোনো ক্রমেই থামছে না তাদের কান্না। ফায়ার ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রাকিরুল ইসলাম জানান, সকাল ৬টা ১০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। সেই থেকে এখন পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস। তাদের পাশাপাশি আগুন নেভাতে যোগ দিয়েছে সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনী। তবুও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না আগুন।
দোকানিদের অভিযোগ, আগুন লাগার পরপরই খবর দেওয়া হয় কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আসতে দেরি করে। ফলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। প্রথমে আগুন লাগে গুলিস্তান মার্কেটে। সেখানে থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে বঙ্গবাজার মার্কেটে। এখন পাশের অন্য ভবনেও ছড়িয়ে পড়েছে। কাপড়ের মার্কেট হওয়ায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ছে। বঙ্গবাজারের ভেতরের শাড়ির দোকানি তোফাজ্জল মিয়ার কান্না যেন থামছেই না। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঈদ সামনে রেখে দোকানে নতুন নতুন শাড়ি তুলেছি। এগুলো আমার সামনেই পুড়ল, কিন্তু কিছুই বের করতে পারিনি।
বঙ্গ ইসলামিয়া বাজারের শার্টের দোকানি সৈয়দ রাসেল মিয়া এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করছিলেন আর কাঁদছিলেন। তিনি শুধু বলছিলেন, সব পুড়ে শেষ আমার। আমি এখন কি করুম। শুধু তোফাজ্জাল ও রাসেলের দোকান নয়, এমন শত শত দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। ঈদ সামনে রেখে কেউ লাখ লাখ টাকা, কেউবা কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু আগুনের মুখ থেকে কোনো কিছুই উদ্ধার করা যায়নি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা বলেন, সব হারিয়ে এখন তারা কী করবেন বুঝতে পারছেন না।
এনেক্সকো মার্কেটের ব্যবসায়ী মো. কালাম বলেন, ভাই সব তো পুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিছু বাঁচানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু মানুষের ভিড়ের কারণে পারছি না। এত বড় বড় কাপড়ের বোঝা নিয়ে নামছি কেউ তো সহায়তা করেই না উল্টো ভিড়ের কারণে সামনে এগোতে পারছি না। এত মানুষের ভিড় না থাকলে আরও দ্রুত মালামাল নিয়ে আসতে পারতাম। সিদ্দিক হোসেন নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, শত শত লোক কোনো কারণ ছাড়াই এখানে দাঁড়িয়ে আছে, ছবি তুলছে ও ভিডিও করছে। আর আমরা যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মালামাল নিয়ে আসছি, তা দেখেও রাস্তা ছাড়ে না। তাদের সরানোরও কেউ নাই।