Home শীর্ষ খবর অগ্নিকাণ্ড ও পুনর্বাসন, আশ্বাসেই পার ১৮ বছর

অগ্নিকাণ্ড ও পুনর্বাসন, আশ্বাসেই পার ১৮ বছর

দখিনের সময় ডেস্ক:
বঙ্গবাজারের মতোই ২০০৪ সালে ভয়াবহ আগুনে পুড়েছিল গুলিস্তানের পুরান বাজার হকার্স মার্কেট। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন করা যায়নি। গুলিস্তান হকার্স মার্কেটের ক্ষতিগ্রস্তরা দোকান পাননি। আশ্বাসেই পার হয়েছে ১৮ বছর। পুড়ে যাওয়া গুলিস্তানের পুরান বাজার হকার্স মার্কেটের জায়গায় বহুতল ভবন নির্মিত হচ্ছে। ১৮ বছরে মাত্র চারটি তলার কাজ শেষ হয়েছে।
২০০৪ সালের নভেম্বর মাসের বঙ্গবাজারের মতোই ভয়াবহ আগুনে পুড়ে  যাওয়া রাজধানীর গুলিস্তানের পুরান বাজার হকার্স মার্কেটে জীবিকার সম্বল হারিয়েছিলেন ১ হাজার ৬৪৬ জন ব্যবসায়ী। তখন সিটি করপোরেশন থেকে ব্যবসায়ীদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, টিনের তৈরি দ্বিতল ওই পোড়া মার্কেটের জায়গায় ১২ তলা ভবন নির্মাণ করে দোকান বরাদ্দ দেওয়া হবে। এ জন্য ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কিস্তিতে প্রায় ৫০ কোটি টাকা তোলা হয়েছিল।
টিনের তৈরি দ্বিতল পুরান বাজার হকার্স মার্কেটে (মূলত পোশাক বিক্রি হতো) অগ্নিকাণ্ডের ১৮ বছর পরও নতুন মার্কেট ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। গত প্রায় দুই দশকে সেখানে মাত্র চারটি তলার নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। পুরো ১২ তলা ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হতে আর কত বছর লাগবে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউ। তখন অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন ছিল। মেয়রের দায়িত্বে ছিলেন বিএনপির নেতা সাদেক হোসেন খোকা। অগ্নিকাণ্ডের পর ব্যবসায়ীরা নাশকতার অভিযোগ করেছিলেন।
পুরান বাজার হকার্স মার্কেটের যে জায়গায় নতুন ভবন হচ্ছে, তার নাম দেওয়া হয়েছে গুলিস্তান ট্রেড সেন্টার। তবে স্থানীয় জনগণের কাছে এটি পোড়া মার্কেট নামেই পরিচিত। জায়গাটি গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজারের দক্ষিণ–পূর্ব পাশে। এই জমির বর্তমান মালিক ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। ক্ষতিগ্রস্ত দোকানিদের থেকে প্রথমে টাকা তুলেছিল অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগ।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সূত্র বলছে, পুরান বাজার হকার্স মার্কেটের জায়গার মালিক ছিল ভূমি মন্ত্রণালয়। সেখানে জমির পরিমাণ ১ দশমিক শূন্য ৮ একর। গুলিস্তান এলাকার হকারদের পুনর্বাসন করতে নামমাত্র দামে সিটি করপোরেশনের কাছে ওই জমি বিক্রি করে ভূমি মন্ত্রণালয়। সেখানে গড়ে ওঠা টিনের তৈরি মার্কেটটি আগুনে পুড়ে যাওয়ার আগেই ১২ তলা ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। যে কারণে অগ্নিকাণ্ডের পর নাশকতার অভিযোগ করেছিলেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সূত্র বলছে, পোড়া মার্কেটের জায়গায় নতুন যে ভবন হচ্ছে, সেখানে মোট ২ হাজার ৩৮৫ জন ব্যবসায়ীকে দোকান বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে পোড়া মার্কেটের ক্ষতিগ্রস্ত ১ হাজার ৬৪৬ জন ব্যবসায়ী রয়েছেন।
পোড়া মার্কেটের দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন বলেন, মার্কেটে আগুন দেওয়ার ঘটনাটি নাশকতা বলে এখনো তাঁরা মনে করেন। তখন ব্যাপক আলোচনা ছিল, অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের তৎকালীন কমিশনার চৌধুরী আলম ওই ঘটনার নেপথ্যে ছিলেন। গুলিস্তান এলাকার মার্কেট পাড়ায় তখন একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল চৌধুরী আলমের। উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালের ২৫ জুন রাতে নিখোঁজ হন ঢাকা সিটি করপোরেশনের রমনা-শাহবাগ এলাকার তৎকালীন কমিশনার চৌধুরী আলম। এখন পর্যন্ত তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

বিআরইউ’র সভাপতি আনিসুর, সম্পাদক খালিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির (বিআরইউ) সভাপতি আনিসুর রহমান খান স্বপন (নিউ এইজ / ঢাকা ট্রিবিউন) আর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন খালিদ সাইফুল্লাহ (নয়া...

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন গণপিটুনিতে নিহত তোফাজ্জল

দখিনের সময় ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের গণপিটুনিতে নিহত মাসুদ কামাল তোফাজ্জলের জানাজা শেষে বরগুনার পাথরঘাটায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে...

অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর গ্রেফতার

দখিনের সময় ডেস্ক: চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশ পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমান গ্রেফতার হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তাকে আটক করা হয়। নিউমার্কেট থানার...

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ

দখিনের সময় ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম...

Recent Comments